জেএসসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
অষ্টম শ্রেণির অধ্যায় -২য়
প্রশ্ন \ ১ \ টপোলজি কী? চিত্রসহ বাস টপোলজি বর্ণনা কর।
উত্তর : কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কম্পিউটারসমূহ একটি অন্যটির সাথে সংযুক্ত থাকার পদ্ধতিই টপোলজি। বাস টপোলজি সবচেয়ে সহজ নেটওয়ার্ক টপোলজি। বাস টপোলজিতে একটা মূল ব্যাকবোন বা মূল লাইনের সাথে সবগুলো কম্পিউটারকে জুড়ে দেওয়া হয়। বাস টপোলজিতে কোনো একটা কম্পিউটার যদি অন্য কোনো কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে চায়, তাহলে সব কম্পিউটারের কাছেই সেই তথ্য পৌঁছে যায়। শুধু সত্যি সত্যি যার সাথে যোগাযোগ করার কথা সেই কম্পিউটার তথ্যটা গ্রহণ করে। অন্য সব কম্পিউটার তথ্যগুলোকে উপেক্ষা করে।
চিত্র : বাস টপোলজি
প্রশ্ন \ ২ \ রাউটার কী? এর কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : জড়ঁঃবৎ শব্দটি এসেছে জড়ঁঃব শব্দ থেকে। রাউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে তৈরি। এটি নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। ইন্টারনেট অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে তৈরি। একই প্রোটোকলের অধীনে কার্যরত দুটি নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ইন্টারনেটে অসংখ্য রাউটার রয়েছে।
রাউটার এর প্রধান কাজ ডাটা বা উপাত্তকে পথ নির্দেশনা দেওয়া। ধরি, আমি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত আমার কোনো বন্ধুকে ই-মেইলের মাধ্যমে একটা ছবি পাঠাতে চাই। ছবিটি কয়েকটি ডাটা প্যাকেটে বিভক্ত হয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বন্ধুর কম্পিউটারে পৌঁছাবে। প্রতিটি ডাটা প্যাকেটে গন্তব্যস্থলের ঠিকানা সংযুক্ত থাকে। ইন্টারনেট যেহেতু জালের মতো গোটা পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত, তাই বিভিন্ন ডাটা প্যাকেট বিভিন্ন পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। একটি ডাটা প্যাকেট কোনো একটি রাউটার এ পৌঁছালে পরবর্তী কোন পথে অগ্রসর হলে ডাটা সহজে এবং দ্রæত গন্তব্যে পৌঁছাবে তার পথনির্দেশ দেয় ঐ রাউটার।
প্রশ্ন \ ৩ \ যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবারের ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবারের ভ‚মিকা। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
স্যাটেলাইট : স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরতে থাকে। পৃথিবী তার অক্ষে চব্বিশ ঘন্টায় ঘুরে আসে, স্যাটেলাইটকেও যদি ঠিক চব্বিশ ঘন্টায় একবার পৃথিবীকে ঘুরিয়ে আনা যায় তাহলে পৃথিবী থেকে মনে হবে সেটা আকাশের কোনো এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে। এ ধরনের স্যাটেলাইটকে বলে জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট। আকাশে একবার জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বসানো হলে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে সেখানে সিগন্যাল পাঠানো যায় এবং স্যাটেলাইট সেই সিগন্যালটিকে নতুন করে পৃথিবীর অন্য পৃষ্ঠে পাঠিয়ে দিতে পারে। এ পদ্ধতিতে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে রেডিও, টেলিফোন, মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেটে সিগন্যাল পাঠানো যায়।
অপটিক্যাল ফাইবার : অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু এক ধরনের কাচের তন্তু। অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে অনেক বেশি সিগন্যাল পাঠানো সম্ভব এবং শুনে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে কিন্তু একটি অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে এক সাথে কয়েক লক্ষ টেলিফোন কল পাঠানো সম্ভব। ইদানীং অপটিক্যাল ফাইবার যোগাযোগ এত উন্নতি হয়েছে যে পৃথিবীর সব দেশেই অপটিক্যাল ফাইবারের নেটওয়ার্ক দিয়ে একে অন্যের সাথে সংযুক্ত। স্যাটেলাইট সিগন্যাল আলোর বেগে যেতে পারে কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবারে কাচের ভেতর দিয়ে যেতে হয় বলে সেখানে আলোর বেগ এক-তৃতীয়াংশ কম। তারপরেও পৃথিবীর এক পৃষ্ঠ থেকে অন্য পৃষ্ঠে অপটিক্যাল ফাইবারে সিগন্যাল পাঠাতে হলে সেটি অনেক তাড়াতাড়ি পাঠানো যায়।
প্রশ্ন \ ৪ \ টপোলজি বলতে কী বোঝ? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : কম্পিউটারসমূহের মধ্যে নেটওয়ার্ক থাকলে তাদের মধ্যে তথ্য বিনিময় বা আদান-প্রদান করা যায়। নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো একটি আরেকটির হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার বা ব্যবহার করতে পারে। তবে সবকিছুর জন্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কম্পিউটারসমূহের একটির সাথে অন্যটির সংযুক্তির বিষয়টি। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কম্পিউটারসমূহ একটি অন্যটির সাথে সংযুক্ত
থাকার পদ্ধতিকে টপোলজি বলে। নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলো কীভাবে সংযুক্ত আছে। ক্যাবল কীভাবে একটি আরেকটির সাথে যুক্ত আছে। এটিই টপোলজির মূল বিষয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ চিত্রসহ রিং টপোলজি বুঝিয়ে বল।
উত্তর : রিং টপোলজি হবে গোলাকার বৃত্তের মতো। এই টপোলজিতে প্রত্যেকটা কম্পিউটার অন্য দুটো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত। এ টপোলজিতে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য যায় একটি নির্দিষ্ট দিকে। তবে রিং টপোলজিতে সত্যি সত্যি কম্পিউটারগুলোকে কিন্তু বৃত্তাকারে থাকার দরকার নেই; সেগুলো এলোমেলোভাবে থাকতে পারে। কিন্তু যদি সব সময়েই কম্পিউটারগুলোর মাঝে বৃত্তাকার যোগাযোগ থাকে, তাহলেই সেটা রিং টপোলজি।
চিত্র : রিং টপোলজি
প্রশ্ন \ ৬ \ কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক টপোলজি কী? স্টার টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লেখ।
উত্তর : কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক টপোলজি : কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক টপোলজি হচ্ছে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারসমূহের অবস্থানগত এবং সংযোগ বিন্যাসের কাঠামো। নেটওয়ার্ক টপোলজিকে সাধারণভাবে নেটওয়ার্কের সংগঠন বলা হয়।
স্টার টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা : স্টার টপোলজিতে একটি কেন্দ্রীয় ডিভাইস এর সাথে অন্য কম্পিউটারগুলো সংযুক্ত থাকে। কেন্দ্রীয় ডিভাইসটি হতে পারে একটি হাব বা সুইচ। নিচে স্টার টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা করা হলো :
স্টার টপোলজির সুবিধা :
১. ডাটা চলাচলের গতি বেশি।
২. নতুন একটি কম্পিউটার সংযোগ দেয়ার প্রয়োজন হলে শুধু সংযোগ দিলেই চলে।
৩. কেন্দ্রীয়ভাবে এ নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করা যায় বলে ত্রæটি নিরূপণ করা সহজ।
৪. এ ধরনের টপোলজিতে কোনো একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলেও পুরো সিস্টেম অচল হয়ে যায় না।
স্টার টপোলজির অসুবিধা :
১. এ টপোলজিতে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে হাব বা সুইচ নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ সিস্টেম অচল হয়ে যায়।
২. এ টপোলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার ক্যাবলের মাধ্যমে হাবের সাথে সংযুক্ত বলে প্রচুর ক্যাবলের প্রয়োজন হয় যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
প্রশ্ন \ ৭ \ নেটওয়ার্কিং এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর। [রংপুর জিলা স্কুল]
উত্তর : দুটি কিংবা তার বেশি কম্পিউটারকে যোগাযোগের কোনো মাধ্যম দিয়ে জুড়ে দিলে তারা যদি নিজেদের ভেতর তথ্য কিংবা উপাত্ত দেয়া নেয়া করতে পারে, তাহলে তাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে। এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। নিচে নেটওয়ার্কিং এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করা হলোÑ
সার্ভার : সার্ভার হচ্ছে মোটামুটি শক্তিশালী কম্পিউটার যেটি নেটওয়ার্কের অন্য কম্পিউটারকে নানারকম সেবা দিয়ে থাকে।
ক্লায়েন্ট : যেসব কম্পিউটার সার্ভার থেকে কোনো ধরনের তথ্য নেয় তাকে ক্লায়েন্ট বলে।
মিডিয়া : যে জিনিসটা ব্যবহার করে কম্পিউটারগুলো জুড়ে দেওয়া হয় সেটা হচ্ছে মিডিয়া।
নেটওয়ার্ক এডাপ্টার : একটা কম্পিউটারকে সোজাসুজি নেটওয়ার্কের সাথে জুড়ে দেয়া যায় না। সেটা করার জন্য কম্পিউটারের সাথে একটি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড লাগাতে হয়। সেই কার্ড মিডিয়া থেকে তথ্য নিয়ে কম্পিউটারকে দিতে পারে। আবার কম্পিউটার থেকে তথ্য নিয়ে সেটা নেটওয়ার্কে ছেড়ে দিতে পারে।
রিসোর্স : ক্লায়েন্টের কাছে ব্যবহারের জন্য যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তার সবই হচ্ছে রিসোর্স।
ইউজার : যে ক্লায়েন্ট সার্ভার থেকে রিসোর্স ব্যবহার করে, সেই ইউজার বা ব্যবহারকারী।
প্রটোকলস : ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারকে এক সাথে যুক্ত করে দিতে হলে এক কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারের যোগাযোগ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে তথ্য আদান-প্রদান করতে হয়। এই নিয়মগুলোই হচ্ছে প্রটোকল।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাস টপোলজি ব্যবহারের ৫টি সুবিধা লেখ।
উত্তর : বাস টপোলজি ব্যবহারের ৫টি সুবিধা হলোÑ
১. বাস টপোলজি স্থাপন করা খুব সহজ।
২. এই টপোলজিতে নতুন কম্পিউটার সহজেই নেটওয়ার্কভুক্ত করা যায়।
৩. এই টপোলজিতে কোনো হোস্ট কম্পিউটার প্রয়োজন হয় না।
৪. বাস টপোলজিতে কোনো একটি কম্পিউটার নষ্ট হলে অন্য কম্পিউটার গুলোতে নেটওয়ার্ক সংযোগ সচল থাকে।
৫. অনেকগুলো কম্পিউটার এক সাথে জুড়ে দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য টপোলজি অপেক্ষা এটি অধিক কার্যকর।
প্রশ্ন \ ৯ \ ক্লায়েন্ট বলতে কী বোঝ? সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : ক্লায়েন্ট (Client) একটি ইংরেজি শব্দ। কেউ যদি অন্য কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের সেবা নেয়, তখন তাকে ক্লায়েন্ট বলে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কেও ক্লায়েন্ট শব্দটির অর্থ মোটামুটি একই রকম। সার্ভার থেকে যেসব কম্পিউটার কোনো ধরনের তথ্য নেয় তাকে ক্লায়েন্ট বলে। যেমন- কোনো কম্পিউটার থেকে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ই-মেইল পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে কম্পিউটার হবে ক্লায়েন্ট। নেটওয়ার্কের যে কম্পিউটারটি ‘ই-মেইল পাঠানোর কাজটুকু করে দেবে সেটি সার্ভার’-এ ক্ষেত্রে ই-মেইল সার্ভার।
প্রশ্ন \ ১০ \ সামাজিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বর্ণনা কর।
উত্তর : সামাজিক নেটওয়ার্ক হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তিগত যোগাযোগ। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে পৃথিবীর অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। নিজেদের মধ্যে ছবি, ভিডিও, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও বিভিন্ন লিংকসহ আরও অনেক কিছু শেয়ার করতে পারি। এই কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলো পুরোপুরি ফ্রি, কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। বর্তমান বিশ্বে সামাজিক নেটওয়ার্কের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। এখানে সমমনা লোকজন অনেকের সাথে বিভিন্ন লিংক ও নানা তথ্য শেয়ারের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি ও একত্রিত হতে পারে। এ মুহ‚র্তে পৃথিবীর জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্কের মাঝে রয়েছে ফেসবুক ও টুইটার।
প্রশ্ন \ ১১ \ নতুন পৃথিবীতে ক্ষমতাবান কারা? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বর্তমান রাষ্ট্র পরিচালনা নিরাপত্তা এমনকি যুদ্ধ বিগ্রহেও নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়। নতুন পৃথিবীতে সম্পদ হচ্ছে তথ্য। সা¤প্রতিক সব বড় যুদ্ধেই একটি দেশ তার সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র-গোলাবারুদ পাঠানোর আগে প্রথমে সেখানে এটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে নিয়েছে। তথ্য যে যত দক্ষতার সাথে ব্যবহার করতে পারবে, এ নতুন পৃথিবীতে সেই হবে তত শক্তিশালী। আর তথ্য ব্যবহার করার জন্য দরকার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। তাই ভবিষ্যতে আমরা নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদ্ধতির ব্যবহার দেখব সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাই বলা যায়, নতুন পৃথিবী অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ পৃথিবীতে ক্ষমতাবান তারাই যারা তাদের তথ্যসমূহকে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দক্ষতার সাথে ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রশ্ন \ ১২ \ ওয়াই-ফাই ও ফেসবুক কী? দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার আলোচনা কর।
উত্তর : ওয়াই-ফাই : ওয়াই-ফাই হচ্ছে জনপ্রিয় তারবিহীন প্রযুক্তি যাতে রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেটের সংযোগ কিংবা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেটা আদান-প্রদান করা হয়।
ফেসবুক : ফেসবুক হচ্ছে একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা যার সাহায্যে মানুষের সাথে মানুষের এক ধরনের যোগাযোগ রক্ষা হয়।
দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার : ইন্টারনেটের কল্যাণে পৃথিবী আজ মানুষের হাতের মুঠোয়। নিচে দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার আলোচনা করা হলো :
তথ্য আদান-প্রদান : ইন্টারনেট হচ্ছে তথ্যের সর্ববৃহৎ ভাণ্ডার। বর্তমানে এটি তথ্যের আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে : শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের গুরুত্ব অপরিসীম। অনলাইনে বিশ্বের বড় বড় লাইব্রেরি থেকে যেকোনো বই অধ্যয়ন করা যায়। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবস্থায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন ছাত্র ক্লাসে সরাসরি উপস্থিত না হয়েও অনলাইনে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে।
গবেষণামূলক কাজ : গবেষণামূলক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা যায় এবং তা ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়।
ভিডিও কনফারেন্সিং : বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভিডিও কনফারেন্স করা যাচ্ছে। এর ফলে অনেক দূরে থেকেও পরস্পরের সাথে মুখোমুখি যোগাযোগ সম্ভব।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ই-টিকেট ও পিপীলিকা কী? মডেম-এর ব্যবহার উল্লেখ কর।
উত্তর : ই-টিকেট : মোবাইল ফোন বা অনলাইনের মাধ্যমে নিজের সুবিধামতো সময়ে স্টেশনে না গিয়েও নির্দিষ্ট গন্তব্যের টিকেট কাটার পদ্ধতিকে ই-টিকেট বলে।
পিপীলিকা : পিপীলিকা হলো বাংলাদেশের তৈরি একটি বাংলা সার্চ ইঞ্জিন।
মডেম : মডেমের ব্যবহার নিচের উল্লেখ করা হলো :
১. প্রেরক কম্পিউটারের প্রেরিত ডিজিটাল সিগন্যালকে এনালগে রূপান্তরিত করে।
২. গ্রাহক কম্পিউটারে প্রেরিত ডিজিটাল সিগন্যালকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করে।
৩. কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করতেই এটিই প্রধান উপকরণ।
৪. প্রেরিত সিগন্যালকে বিস্তৃত নেটওয়ার্কে সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বাস টপোলজি ব্যবহারের ৫টি অসুবিধা উল্লেখ কর।
উত্তর : বাস টপোলজি ব্যবহারের ৫টি অসুবিধা হলো :
১. ডেটা আদান-প্রদানের গতি কম।
২. এই টপোলজিতে শুধুমাত্র নির্ধারিত কম্পিউটারে তথ্য পাঠানো যায় না।
৩. এই টপোলজিতে মূল ব্যাকবোনের কোনো সমস্যা হলে পুরো নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে।
৪. এই টপোলজিতে কোনো কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা নিরূপণ করা কঠিন কাজ।
৫. এই টপোলজিতে প্রত্যেকটা কম্পিউটারকে মূল ব্যাকবোনের সাথে যুক্ত করতে অনেক ক্যাবল প্রয়োজন হয় যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ড্রপবক্স কী? স্যাটেলাইট সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দাও।
উত্তর : ড্রপবক্স : তথ্য বা ডকুমেন্টস সব সময় নিজের কাছে না রেখে ইন্টারনেটে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবহার করা যায়। এ ধরনের একটি জনপ্রিয় সেবার নাম ড্রপবক্স।
স্যাটেলাইট : স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ মহাকাশে থেকে পৃথিবীকে ঘিরে থাকে। পৃথিবী তার কক্ষে চব্বিশ ঘন্টায় ঘুরে আসে। স্যাটেলাইটকেও যদি ঠিক চব্বিশ ঘন্টায় একবার পৃথিবীকে ঘুরিয়ে আনা যায় তাহলে পৃথিবী থেকে মনে হবে সেটা বুঝি আকাশের কোনো এক জায়গায় স্থির আছে। এ ধরনের স্যাটেলাইটকে বলা হয় জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট। যেকোনো উচ্চতায় জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট রাখা যায় না। এটা রাখার জন্য ৩৪ হাজার কিলোমিটার উপরে একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথে রাখতে হয়। আকাশে একবার জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বসানো হলে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে যেখানে সিগন্যাল পাঠানো যায় স্যাটেলাইট সেই সিগন্যালটিকে নতুন করে পৃথিবীর অন্য পৃষ্ঠে পাঠিয়ে দিতে পারে।
এই পদ্ধতিতে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রেডিও, টেলিফোন, মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেটে সিগন্যাল পাঠানো যায়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ ফায়ারওয়াল, ল্যান কার্ড সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : ফায়ারওয়াল : নেটওয়ার্ক দিয়ে সবাই সবার সাথে যুক্ত। প্রত্যেকটি কম্পিউটারের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেয়াল ভেঙে কেউ যেন ঢুকতে না পারে তা চেষ্টা করা হয়। নিরাপত্তার এই অদৃশ্য দেওয়াল ফায়ারওয়াল নামে পরিচিত।
ল্যান কার্ড : দুটো বা অধিকসংখ্যক কম্পিউটারকে একসাথে যুক্ত করতে যে যন্ত্রটি প্রয়োজন হয়, তা হলো ল্যান কার্ড। কোনো নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত এক আইসিটি যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে কোনো তথ্য বা উপাত্ত পাঠাতে কিংবা গ্রহণ করতে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন।
প্রশ্ন \ ১৭ \ চিত্রসহ ট্রি টপোলজি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : স্টার টপোলজির স¤প্রসারিত রূপ হচ্ছে ট্রি টপোলজি। এই টপোলজিতে একাধিক কানেক্টিং ডিভাইস হিসেবে হাব বা সুইচ ব্যবহার করে নেটওয়ার্কভুক্ত সকল কম্পিউটারকে একটি বিশেষ স্থানে সংযুক্ত করা হয়। একে বলা হয় সার্ভার বা রুট। ট্রি সংগঠনে এক বা একাধিক স্তরে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো রুট-এর সাথে যুক্ত থাকে। নতুন স্তর তৈরি করে ট্রি টপোলজির নেটওয়ার্ক স¤প্রসারণ বেশ সুবিধাজনক। অফিস ব্যবস্থাপনার কাজে এ নেটওয়ার্কের গঠন বেশি উপযোগী। রুট বা সার্ভার কম্পিউটারে কোনো ত্রæটি দেখা দিলে ট্রি নেটওয়ার্ক অচল হয়ে যায়। অন্যান্য টপোলজির তুলনায় ট্রি টপোলজি অপেক্ষাকৃত জটিল।
চিত্র : ট্রি টপোলজি
প্রশ্ন \ ১৮ \ চিত্রসহ মেশ টপোলজি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : মেশ টপোলজির ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের অধীনস্থ প্রত্যেক কম্পিউটার অন্যসব কম্পিউটারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে। এতে প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশনের মধ্যে আলাদা আলাদা লিংক বা বাস থাকে। তাই প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশন সরাসরি যেকোনো ওয়ার্কস্টেশনের সাথে ডাটা আদান-প্রদান করতে পারে। এই টপোলজিতে নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন বেশ জটিল। সংযোগ লাইনগুলোর দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় এতে খরচ বেশি হয়।
চিত্র : মেশ টপোলজি
প্রশ্ন \ ১৯ \ মডেম কী? মডেমের কাজ করার পদ্ধতি লেখ।
উত্তর : মডেম : মডেম হচ্ছে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। Modulator-এর Mo এবং Demodulator হতে Dem এই অংশ দুটির সমন্বয়ে Modem শব্দটি তৈরি হয়েছে।
মডেমের কার্যপদ্ধতি : ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাটা বা উপাত্ত পাঠানোর জন্য বহনকারী সিগন্যাল দরকার হয়। মডেম এমন একটি নেটওয়ার্ক যন্ত্র যা কম্পিউটার হতে প্রাপ্ত ডিজিটাল সিগন্যালকে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তরিত করে Modulator Network কে প্রেরণ করে। আবার নেটওয়ার্ক হতে প্রাপ্ত এনালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে পরিণত করে কম্পিউটারে প্রেরণ করে। মডেম কম্পিউটার ও নেটওয়ার্কের সংযোগস্থলে অবস্থান করে।
প্রশ্ন \ ২০ \ Satellite বলতে কী বুঝ? Optical fiber -এর সিগন্যাল প্রেরণের কৌশল লেখ। [ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা]
উত্তর : Satellite বলতে একটি বস্তু অন্য আরেকটি বস্তুকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করাকে বোঝায়। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কি.মি. উপরে সম্পূর্ণ বৃত্তাকার কক্ষপথ রচনা করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।
Optical fiber -এর সিগন্যাল পাঠানোর কৌশল : অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু এক ধরনের কাচের তন্তু। বৈদ্যুতিক তারে বৈদ্যুতিক সিগন্যাল পাঠানো হয়। স্যাটেলাইট ওয়্যারলেস সিগন্যাল পাঠানো হয়। আর অপটিক্যাল ফাইবারে সিগন্যালটিকে আলোতে রূপান্তরিত করে পাঠানো হয়। অপটিক্যাল ফাইবারে যে আলোকে সিগন্যাল হিসাবে পাঠানো হয়, সেটি ইনফ্রারেড আলো এবং এই আলো আমাদের চোখে দৃশ্যমান নয়। একটি অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে এত বেশি সিগন্যাল পাঠানো সম্ভব যে অনেকের কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কারণ একটি অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতর দিয়ে একসাথে কয়েক লক্ষ টেলিফোন কল পাঠানো সম্ভব।
স্যাটেলাইট সিগন্যাল আলোর বেগে যেতে পারে কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবারে পাঠানো সংকেতকে কাচের ভেতর দিয়ে যেতে হয় বলে সেখানে আলোর বেগ এক-তৃতীয়াংশ কম। তারপরও পৃথিবীর এক পৃষ্ঠ থেকে অন্য পৃষ্ঠে অপটিক্যাল ফাইবারে সিগন্যাল পাঠাতে হলে সেটি অনেক তাড়াতাড়ি পাঠানো যায়।
প্রশ্ন \ ২১ \ ল্যানকার্ড সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর : দুটো বা অধিকসংখ্যক কম্পিউটারকে এক সাথে যুক্ত করতে যে যন্ত্রটি অবশ্যই প্রয়োজন হয়, তা হলো ল্যান কার্ড। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত এক আইসিটি যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে কোনো তথ্য বা উপাত্ত পাঠাতে কিংবা গ্রহণ করতে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ল্যান কার্ডের ভ‚মিকা ইন্টারপ্রেটারের। বর্তমানে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা আইসিটি যন্ত্রের মাদারবোর্ডের সাথেই ল্যান কার্ড সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। তারপরও কিছু আইসিটি যন্ত্রে আলাদা করে ল্যান কার্ড সংযুক্ত করতে হয়। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন তারবিহীন ল্যান কার্ড খুবই সাধারণ। আধুনিক অফিসগুলোতে তারবিহীন ল্যান কার্ডই এখন সবার পছন্দ।
প্রশ্ন \ ২২ \ সুইচ কী? সুইচ কীভাবে কাজ করে তা লেখ।
উত্তর : সুইচ : সুইচ একটি ক্ষুদ্র আইসিটি যন্ত্র। সুইচ তারের সাথে যুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রকে পৃথকভাবে শনাক্ত করতে পারে। তাই সুইচ দিয়ে তৈরির নেটওয়ার্কের যেকোনো আইসিটি যন্ত্র সরাসরি অন্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
সুইচের কার্য পদ্ধতি : সুইচ তার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রের একটি করে ঠিকানা বরাদ্দ করে এবং ঐ ঠিকানা অনুযায়ী তথ্যের আদান-প্রদান করে। অর্থাৎ কোনো একটি ঠিকানা থেকে অন্য কোনো ঠিকানায় উপাত্ত বা ডাটা পাঠাতে চাইলে সুইচ এক ঠিকানার তথ্য অন্য ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। এ বরাদ্দকৃত ঠিকানাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভাষায় MAC address নামে ডাকা হয়। আলাদা আলাদা ঠিকানা ব্যবহারের কারণে সুইচ হাবের চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে। এজন্য নেটওয়ার্ক তৈরিতে সুইচই এখন সবার পছন্দ।
প্রশ্ন \ ২৩ \ অপটিক্যাল ফাইবার ও সাবমেরিন ক্যাবল সম্পর্কে আলোচনা কর। [মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা]
উত্তর : অপটিক্যাল ফাইবার : একসময় পৃথিবীর সব তথ্যই পাঠানো হতো তারের ভেতর বৈদ্যুতিক সংকেত অথবা তারবিহীন ওয়্যারলেস সংকেত হিসেবে। এখন সারা পৃথিবীতেই তথ্য উপাত্ত পাঠানোর জন্য একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে সেটি হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তি। অপটিক্যাল ফাইবার আসলে কাচের অত্যন্ত স্বচ্ছ তন্তু, সেটি চুলের মতো সরু এবং তার ভেতর দিয়ে আলোর সংকেত হিসেবে তথ্য এবং উপাত্ত পাঠানো যায়। অপটিক্যাল ফাইবারে সিগন্যাল হিসেবে যে আলোকে পাঠানো হয়, সেটি ইনফ্রারেড আলো এবং এই আলো আমাদের চোখে দৃশ্যমান নয়। আর এ কারণেই এটি খুব অল্প সময়ে সারা পৃথিবীতে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জায়গা করে নিতে পেরেছে।
সাবমেরিন ক্যাবল : ইদানীং অপটিক্যাল ফাইবার যোগাযোগে এত উন্নতি হয়েছে যে পৃথিবীর সব দেশেই অপটিক্যাল ফাইবারের নেটওয়ার্ক দিয়ে একে অন্যের সাথে সংযুক্ত। অনেক সময়েই এই অপটিক্যাল ফাইবার পৃথিবীর এক মহাদেশ থেকে অন্যদেশে নেবার সময় সেটিকে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে নেওয়া হয়। এ ধরনের ফাইবারকে বলে সাবমেরিন ক্যাবল। বাংলাদেশ এখন যে সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে বাইরের পৃথিবীর সাথে যুক্ত তার নাম SEA-ME-WE-4.
প্রশ্ন \ ২৪ \ রিসোর্স বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ক্লায়েন্টের কাছে ব্যবহারের জন্য যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তার সবই হচ্ছে রিসোর্স। একটা কম্পিউটারের সাথে যদি একটা প্রিন্টার কিংবা একটা ফ্যাক্স লাগানো হয় সেটা হচ্ছে রিসোর্স। কম্পিউটার দিয়ে কেউ যদি সার্ভারে রাখা একটা ছবি আঁকার সফটওয়্যার ব্যবহার করে সেটাও রিসোর্স। যারা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, তারা শুধু যে রিসোর্স গ্রহণ করে তা নয়, কারো কাছে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে বা মজার ছবি থাকে এবং সেটা যদি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যরাও ব্যবহার করতে থাকে তাহলে তার কম্পিউটারও একটা রিসোর্স হয়ে যাবে।
প্রশ্ন \ ২৫ \ প্রটোকল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রটোকল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি ছাড়া একটি সফল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা অসম্ভব। ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারকে এক সাথে যুক্ত করে দিতে হলে এক কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারের যোগাযোগ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে তথ্য আদান-প্রদান করতে হয়। যারা নেটওয়ার্ক তৈরি করেন তারা আগে থেকেই ঠিক করে নেন, ঠিক কোন ভাষায়, কোন নিয়ম মেনে এক কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করবে। এই নিয়মগুলোই হচ্ছে প্রটোকল।
প্রশ্ন \ ২৬ \ স্টার ও মেশ টপোলজির মধ্যে ৫টি পার্থক্য লেখ। [ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আন্তঃবিদ্যালয়, ঢাকা]
উত্তর : স্টার ও মেশ টপোলজির মধ্যে ৫টি পার্থক্য হলো :
স্টার টপোলজি | মেশ টপোলজি |
স্টার টপোলজিতে সবগুলো কম্পিউটার একটা কেন্দ্রীয় হাবের সাথে যুক্ত থাকে। | মেশ টপোলজিতে কম্পিউটারগুলো একটা আরেকটার সাথে যুক্ত থাকে। |
স্টার টপোলজিতে মোটামুটি শক্তিশালী একটি কম্পিউটারকে হাব হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। | মেশ টপোলজিতে কোনো কেন্দ্রীয় হাব ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না। |
স্টার টপোলজিতে কেন্দ্রীয় হাব থেকে অন্য কম্পিউটারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে যেকোনো ত্রুটি সহজে নিরূপণ করা যায়। | মেশ টপোলজিতে কোনো ধরনের ত্রুটি দেখা দিলে তা সহজে নিরূপণ করা যায় না। |
স্টার টপোলজিতে হাব নষ্ট হলে পুরো নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। | মেশ টপোলজিতে কোনো কম্পিউটার নষ্ট হলে অন্যগুলো সচল থাকে। |
স্টার টপোলজিতে নতুন কোনো কম্পিউটার সংযোগ করা খুব সহজ কাজ। | মেশ টপোলজিতে নতুন কোনো কম্পিউটার সংযোগ করা বেশ জটিল কাজ। |
প্রশ্ন \ ২৭ \ Cloud Computing কী? এর প্রভাবে কী কী ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে? বর্ণনা কর। [ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা]
উত্তর : Cloud Computing : Cloud Computing তথ্যপ্রযুক্তির জগতে নতুন সৃষ্টি হওয়া এমন এক ধরনের সেবা যার আওতায় যেকোনো ব্যবহারকারী বা যেকোনো প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কম্পিউটারের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে যেকোনো ধরনের সেবা গ্রহণ করতে পারে।
Cloud Computing -এর প্রভাবে সূচিত পরিবর্তনসমূহ :
১. কম্পিউটার অপারেটিং এবং নেটওয়ার্ক ব্যবহার খরচ অনেক কমে গেছে।
২. ব্যবহারকারী স্বল্পমূল্যে সীমাহীন স্টোরে সুবিধা ভোগ করতে পারছে।
৩. স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার আপডেট এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।
৪. ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্যাধিকার লাভ করতে পারছে।
৫. প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের ব্যবহার খরচ অনেক কমে এসেছে।
৬. যেকোনো তথ্য সহজে সংরক্ষণ করে অধিক নিরাপত্তার সহিত ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা যাচ্ছে।