গুরুত্বপূর্ণ কিছু টীকা ও শব্দার্থ জেনে রাখুন পিডিএফ ডাউনলোড

গুরুত্বপূর্ণ কিছু টীকা ও শব্দার্থ জেনে রাখুন

পিডিএফ ডাউনলোড

চিত্রকলাঃ-

চিত্রকলা বা সুকামার শিল্প মূলতঃ এক ধরনের দ্বি-মাত্রিক ইলিউশন। যাকে ধরা ছোয়া যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়। অর্থাৎ রূপ রং, আলো ছায়ার মাধ্যমে প্রকৃত বস্তুর অথবা বাস্তবের প্রতিনিধিত্বকারী কোন কিছু যা মানুষের চিন্তা চেতনার অনুকুলে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে রূপ সৃষ্টির প্রতিভূত। তাই এটা এমন একটি কাজ যা প্রকৃত বাস্তবতা বা বাস্তবের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, শিল্পী মনের অর্জিত কিংবা মানসিক সম্পর্ক অর্জিত কিংবা মানসিক সম্পর্ক ও প্রতিক্রিয়া থেকে উদ্ভাবিত রূপ সৌন্দর্যের প্রকাশ। দ্বি-মাত্রিক বিভ্রম ছাড়াও ত্রি-মাত্রিকতার মধ্যে দিয়েও এই কল্পনা, অভিজ্ঞতা ও সংবেদনশীলতা প্রকাশ করা যায়।

ছাপচিত্র (Print Marking)ঃ-

ছবির ক্ষেত্রে শিল্পীর কল্পনার সরাসরি কাগজে বা ক্যানভাসে রূপায়িত হয়। আর ছাপচিত্রের ক্ষেত্রে কল্পনা থেকে কাগজে রূপায়িত হয় অন্য কোন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে। ষষ্ঠ শতকের গোড়ার দিকে চীনে কাগজের আবিস্কারের পর থেকে ছাপচিত্রের উৎপত্তি ও চর্চা শুরু হয়েছে। সর্বপ্রথম এই মাধ্যমটির সূচনা হয়েছিল চীনে। বৌদ্ধ ধর্ম বাণী ও জীবনী প্রচারের জন্য এ মাধ্যমটির ব্যবহার শুরু হয়। পৃথিবীর প্রথম বই ছাপা হয় ৮৬৮ খ্রীস্টব্দে। বইটি হীরক সূত্র নামে পরিচিত। এটি চীনা ধর্মগ্রন্থের অনুবাদ। এই মাধ্যমের উৎকর্ষের একটি দিক হচ্ছে প্রিন্ট মিডিয়া।

তেল রং (Oil color) মূলতঃ অস্বচ্ছ মাধ্যম। রং এর সাথে তেল জাতীয় দ্রব্যেও মিশ্রণ ঘটিয়ে এ রং এর কাজ করা হয়।

জল রং (Water color) মূলতঃ স্বচ্ছ মাধ্যম। জলের সাথে মিশ্রন ঘটিয়ে এ রং এ কাজ করা হয়।

ভাস্কর্য (Sculpture)

দৃশ্যশিল্প অথবা ভিজুয়্যাল আর্টো শাখাগুলোর মধ্যে ভাস্কর্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটাকে ধরা বা ছোঁয়া যায়। একটা ত্রি-মাত্রিক মাধ্যম। এটি বাস্তবের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। এই মাধ্যমে একটি ত্রি-মাত্রিক বস্তুকে দাঁড় করানোর জন্য কাঠামোগত ব্যালেন্সের প্রয়োজন হয়। আকার ও স্থানের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপনই হল ভাস্কর্যের সাফল্য। এর মধ্যে আলো, ছায়া, রং, ছন্দ, গতিপ্রকৃতি ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে একটা পরিপূর্ন ভাস্কর্য নির্মিত হয়। ভাস্কর্য প্রধানত দুই ধরণের হয়ে থাকে।

ফ্রিস্ট্যান্ডিংঃ- এতে বিভ্রমের কোন ব্যাপার নেই। এতে বাস্তবতার পরিস্ফুটন খুব সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়।

রিলিফঃ- রিলিফের বাংলা হচ্ছে উৎকীর্ণ যার কোন ত্রি-মাত্রিকতা নাই অথবা পরিপূর্ণ ত্রি-মাত্রিকতা এতে ইলিউশন প্রাধান্য পেয়ে থাকে।

স্থাপত্য (Architecture)ঃ-

যে কোন ভবন বা দালানকেই স্থাপত্য বলা যায়। স্থাপত্য গড়ে ওঠে মূলতঃ মানুষের ব্যবহারিক দিককে কেন্দ্র করে। স্থাপত্য নিজেই শিল্পকলার এলটি অন্যতম শাখা। অন্যান্য শিল্প শাখার মতো স্থ্পত্যকে শিল্পের সমস্ত দোষ ত্রুটির নিরিখে বিচার করা হয়। ভাস্কর্য ও স্থপত্যের মধ্যে এলটি প্রধান অন্ত্যমিল হচ্ছে ত্রি-মাত্রিকতা, যা উভয় শিল্প শাখর বৈশিষ্ট্য। এবং প্রধান বৈসাদৃশ্য হচ্ছে ভাস্কর্য গড়ে ওঠে মানুষের সৌন্দর্য চেতনা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে। অপরদিকে স্থাপত্যো ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সৌন্দর্য্য ও নান্দনিক চেতনাই যথেষ্ট নয়। ব্যবহারিক দিকটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভাস্কর্যে ব্যবহারিক কোন জায়গা নেই।

স্ফিংস (Spphinx)ঃ-

মিশরীয় ধর্ম হতে গৃহীত গ্রীক পুরাণ কাহিনীতে বর্ণিত দৈত্য। এই দৈত্য ছিল নারীর মস্তক বিশিষ্ট পাখাধারিনী এক সিংহ। থিবসের নিকট উঁচু শিলার উপর এই দৈত্য বাস করত। সকলকে সে একটি ধাঁধা জিজ্ঞেস করত। যারা উত্তর দিতে অসমথর্খ হতো সে হত্যা করত। ইডিপাস এই প্রশ্নের সমাধান করেন এবং সেই দৈত্য শিলার উপর থেকে লাফ দিয়ে মারা যায়। তার প্রশ্নটি ছিল কোন প্রাণী সকালে চার পায়ে, দুপুরে দুই পায়ে এবং বিকালে তিন পায়ে হাঁটে ? ইডিপাসের উত্তর ছিল, মানুষ শৈশবে দুই পায়ে, দুই হাতে হামাগুড়ি দেয়, আর বয়স হলে দুই পায়ে হাঁটে, এবং বৃদ্ধ হলে একখানা লাঠি নিয়ে হাঁটে। ইডিপাস থিবসের রাজা হন। মিশরীয় স্ফিংসগুলো অর্ধশায়িত মূর্তি ছিল। এদের মাথাগুলো সাধারনত পুরুষের মাথার মত। এর মধ্য সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত হল মিশরের গীর্জায় অবস্থিত গ্রেট স্ফিংস। স্বাভাবিক শিলা কেটে এ মূর্তি নির্মাণ করা হয়। এই মুর্তি নীলনদের রক্ষাকারী দেবতা ছিল বলে মনে করা হয়। উল্লেখ্য গীর্জার স্ফিংসটি প্রায় একশ আশি ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট।

টোটেম (Totem)ঃ-

সর্ব প্রাণবাদীয় (animistic) ধর্মের বিষয়ীভূত বস্তু, সাধারনত এমন জন্তু যাকে ধর্মানুসারীরা অসাধারণ ভক্তি কাে এবং বংশানুক্রমিক ভাবে বা আত্মীয় সূত্রে তার সাথে নিজেকে সম্পর্কযুক্ত মনে করে। গোষ্ঠীগত টোটেম সদস্য টোটেম নাম ধারন করে। অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠিতে বিবাহ ( অসমবর্ণ বিবাহ) চলে। গোত্রের সদস্য নিজেকে টোটেম বংশজাত বলে মনে করে। এবং কিছুতেই টোটেম প্রাণীহত্যা, ভক্ষণ বা স্পর্শ করে না, অথবা তাকে আসল নামে ডাকে না। টোটেমবাদ অস্ট্রেলিয়া, মেলানেশিয়া ও উশমশর আমেরিকায় প্রভূতভাবে বর্তমন।

ট্যাবু (Taboo)ঃ-

আলৌকিক শাস্তির ভয়ে কোন কাজকর্ম, কথাবর্তা না বলার জন্য নিষেধাজ্ঞা। ট্যাবু নামটি পলিনেশিয়া থেকে উদ্ভুত। বর্তমানে প্রতিটি আদিম জাতির মধ্যে এর প্রচলন লক্ষণীয়।

প্যান্থিয়ন (Pantheon)ঃ-

রোমান Pantheon স্থাপত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি ১২৫ খ্রীস্টাব্দে নির্মিত হয়। Pantheon একটি গোল গম্বুজ বিশিষ্ট মন্দির। এর অভ্যন্তরীন অংশ এলটি ১৪৪ ফুট ব্যসযুক্ত বৃত্তাকার গোলগম্বুজ দ্বারা পরিবেষ্টিত। মেঝে থেকে গম্বুজশীর্ষের দুরত্ব একই। গোলাকৃতির গম্বুজটির মধ্যভাগে ৩০ ফুট ব্যাসের এলটি গোলাকার ছিদ্রপথ আছে যা আকাশের দিকে উন্মুক্ত এবং অভ্যন্তরীন আলো প্রবেশের একমাত্র উৎস।

মাস্তাবাঃ-

পৃথিবীর আদিতম সমাধিস্মারক হচ্ছে মাস্তাবা। এটি দেখতে একচালা ঘরের মত। এগুলো সাধারনত আয়তাকার হত। প্রথমদিকে মাটির ইট ও পরে পাথরের ইট দিয়ে মাস্তাবা তৈরি করা হত। মাস্তাবা পিরামিড তৈরির প্রথমিক ধাপ হিসেবে গন্য করা হয়।

ইজেলঃ- ইজেল হচ্ছে একটি শিল্প উপকরন। চিত্রকর যে স্ট্যান্ডের উপর ক্যানভাস রেখে ছবি আঁকেন তাই ইজেল।

লে-আউটঃ- শিল্পকর্মের খসড়া চিত্রকে লে-আইট বলে।

পিরামিডঃ- খ্রীষ্টপূর্ব ২৬৮০ অব্দে নির্মিত হয়। মূলতঃ বিভিন্ন ধাপে পিরামিডের পর্যায়ক্রমিক উন্নতি সাধিত হয়। কায়রোর গীর্জায় অবস্থিত তিনটি বিখ্যাত পিরামিড রয়েছে। খুফু, খাফরা ও মেনক্যাউর এর মধ্যে খুফুর পিরামিড সবচেয়ে বড়। এগুলোতে সম্রাটদের মমি রাখার এবং আত্মীয়স্বজনদের মমি রাখার, উপাসনা করার জন্য পৃথক কক্ষ সহ পিরামিডগুলোর অভ্যন্তরে অসংখ্য কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দেয়ালে খোদাই চিত্র ও ভাস্কর্য ছিল। ফারাওদের ব্যবহার্য মূল্যবান দ্রব্যদিও রাখা হত পিরামিডের ভিতরে। মূলতঃ তারা পরজন্মে বিশ্বাসী ছিল। তাই পরজন্মের ব্যবহারের জন্য তারা এ ব্যবস্থা করেছিল।

আর্কাইক যুগঃ- গ্রীসের সভ্যতার আদি পর্বকে আর্কাইক যুগ বলা যায়। ৭ অব্দ থেকে এর সূচনা ধরা যেতে পারে।

ডোরিকঃ- এক ধরনের স্থাপত্যের গ্রীক স্তম্ভরীতির কৌশল। আর্কাইক যুগের শেষ দিকে এটি নির্মিত হয়।

ইান্দনিক সৌন্দর্যঃ- সৌন্দর্যের রীতি ও প্রকরণ নির্ভর শিল্পকর্ম।

অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্টঃ- ভস্কর্য ও চিত্রকলার একটি বিমূর্ত ধারা।

অ্যাডবিঃ- রোদে শুকানো ইট।

অল্টারটিসঃ- বেদির পিছনে স্থাপিত প্যানেলে অলংকৃত ভাস্কর্য বা চিত্রকর্ম।

আর্চঃ- উপবৃত্তাকার নির্মান কাঠামো যা কতগুলি ব্লকের সাহায্যে নির্মিত হয়। বাইরের পরিসরের সঙ্গে ভিতরের পরিসরের সম্পর্ক স্থাপন করে। যেমনঃ জানলা দরজা। সাধারণ এমন পদ্ধতিতে এগুলো নির্মিত হয় যার ফলে পুরো কাঠামোর ভর পার্শ্বীয় কাঠামোতে বিভাজন হয়।

বোধিসত্ত্বঃ- বুদ্ধত্ব অর্জনের সম্ভবনা সম্পন্ন গুণ।

বুদ্ধঃ- বৌদ্ধ ধর্মানুসারে পরম জ্ঞানী একজন মানুষ যার মধ্যে গুণ ও জ্ঞানের ঐশ্বরীক সমন্বয় রয়েছে।

ক্যালিগ্রাফিঃ- হাতের লেখার অলংকারিক শিল্প।

কাস্টিংঃ- কাঁদা মাটির প্রকৃত ভাস্কর্যের প্লাস্টার বা ধাতব অনুকৃতি।

সিরামিকসঃ- কাঁদামাটিকে উচ্চ তাপমাত্রায় পুড়িয়ে পাত্র নির্মাণের শিল্প।

কোলাজঃ- কাগজ, ছবি, কাপড় ইত্যদিকে ক্যনভাসের উপর নান্দনিকভাবে সেঁটে তৈরি করা শিল্পকর্ম।

গাইক্লোপিয়ানঃ- বিশাল দানবাকৃতির স্থাপত্য নির্মাণ।

ডলমেনঃ- শীর্ষে পাথুরে ঢাকনি সম্বলিত প্রস্তরখন্ডসমূহ। প্রাগৈতিহাসিক কালের মানুষ এসব নির্মাণ করেছিল।

এনগ্রেভিংঃ শক্ত ধাতব বস্তু যেমন তামার পাত খোদাই করে ছাপচিত্র তৈরির রীতি।

উর্মঃ সামগ্রিক অর্থে একটি কাঠামোর সমগ্রতা। কাঠামোর সমস্ত উপাদানের ফলাফল ও যেরূপ উপাদানগুলো বিন্যাস করা হয় তাই হল ফর্ম।

আইকনঃ- শ্রদ্ধাস্পদ ব্যক্তিবর্গের মুখচ্ছবি। সাধারনত গ্রীক উপাসনালয়ে এদের মুখচ্ছবি অংকিত থাকত। চিত্রশিল্পে ভাস্কর্যে এমনকি স্থাপত্য নির্দশনে বিশিষ্ট নির্মাণকে আইকন বলা হয়।

কাইলিক্সঃ- দ্বিহাতল বিশিষ্ট মদের পানপত্র। প্রাচীন গ্রীসে এর ব্যবহার ছিল।

রেখাঃ- চলন্ত বিন্দু দ্বারা সৃষ্ট গতি পথ, এর অভিমুখ ও পুরুত্বের সঙ্গে অনুভূতির মনস্তাত্ত্বিক যোগাযোগ আছে।

মিনিয়েচারঃ- চিত্রাংকৃত ক্ষুদ্রাকৃতির পান্ডুলিপি অথবা হাতির দাঁত বা পোর্সেলিনে অংকিত ক্ষুদ্রাকৃতির প্রতিকৃতি।

হায়ারোগ্লিফিকঃ- এই শব্দের অর্থ চিহ্ন বা প্রতিকের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করা। এর উৎপত্তি প্রাচীন মিশরে। এটি ভাষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রাচীনতম লিপি।

মনোক্রোমঃ- একরঙ্গা চিত্রকর্ম।

ম্যুরালঃ- দেয়ালের উপর অলংকৃত চিত্রকলা।

প্যালিওলিথিকঃ- আদি প্রস্তুরযুগ বা মধ্যপ্রস্তরযুগের পূর্বকাল। খ্রীষ্টপূর্ব ৩২০০০ বা তৎপূর্ববর্তী ও খ্রীষ্টপূর্ব ৩২০০০ থেকে ৮০০০ অব্দ পর্যন্ত এই দুইভাগে ভাগ করা যায়। এই সময়েই গুহাচিত্র ও প্রস্তর স্থাপন নির্মিত হয়।

প্যাপিরাসঃ- মিশর ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের উৎপন্ন এক ধরনের উদ্ভিদ। মিশরীয়রা একে কাগজরূপে ব্যবহার করত।

পার্সপেক্টটিভঃ- বিলীন বিন্দুর সূত্র অনুসরণ করে ত্রিমাত্রিক ছবি আঁকার পদ্ধতি।

পটারিঃ- কাঁদামাটি দ্বারা নির্মিত পাত্র যা নির্মানের পর আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করা হয়।

রিয়েলিজম্ঃ- শিল্পকলার যেখানে বলা হয়, প্রকৃতিতে দৃশ্যমান বস্তু যেমন ভাবে দেখা যায় হুবহু সেইরকম অলংকৃত করার চেষ্টা।

সিমেট্রিকঃ- নান্দনিক ভারসম্য কোনর ফর্মকে কাল্পনিকভাবে বিভক্ত করে দুটি অংশকে এমনভাবে তৈরি করা; যাতে একটি অন্যটির অনুরূপ হয়ে ওঠে।

টেরাকোটাঃ- উচ্চতাপে পোড়ানো কাঁদামাটির ফলক।

ফোরামঃ- প্রারম্ভিক কাল হতে রাষ্ট্রিয় কাজে কেন্দ্রস্থল হিসেবে রোমান ফোরাম নির্মিত হত। এই ফোরামগুলো একই সাথে ধর্মীয়, ব্যবসায়ীক ও প্রশাসনিক কাজের প্রাণকেন্দ্র ছিল। পম্পেই নগরীর ফোরামগুলো ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়ও বিখ্যাত। এই ফোরামসমূহ মূলত ঃ সম্রাটদের বিজয় গাঁথাকে জনগনের নিকট প্রচারের উদ্দেশ্যে নির্মিত হত।

কলোসিয়ামঃ-

এটি একটি রোমান স্থাপত্যকীর্তি। এর নির্মান কাজ শুরু হয় সম্রাট ভেসপাসিয়ানের সময়কালে। শেষ হয় ৮০ খ্রীষ্টাব্দে সম্রাট টাইটাসির সময়ে। সধারনত এটি মল্লযুদ্ধের মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হত। ৫০ হাজারেরও বেশী ধারনক্ষমতা ছিল। মূলত ঃ কলোসিয়ামের বহির্ভাগের দেয়াল ১৬২ ফুট উঁচু ছিল। তিন তলা বিশিষ্ট দালানের প্রতিটিতেই রোমান স্টাইলের ব্যবহার দেখা যায়।

ব্যাসিলিকাঃ-

এটি একটি রোমান পাবলিক হল যেখানে একসাথে অসংখ্য মানুষ একত্রিত হয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজের সমাধান করত। ব্যাসিলিকা ছিল আয়তাকার গঠনের। রোমে অবস্থিত ট্রুজান ফোরাম এর শাসনাধীন বিশালাকার ব্যাসিলিকা হিসেবে বিবেচিত যা নির্মিত হয়েছিল ১২২ খ্রীষ্টাব্দে। এখানে কৃতদাসদের মুক্ত করা হত। এটি রোমানদের সর্বাধিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থাপত্যের একটি নিদর্শন সম্রাট কনস্টারটাইন তরি সাম্রাজ্য নতুন নগর প্রাচীন বাইজানটিয়ামে স্থানান্তরিত করেছিলেন। তিনি সেখানেও এ ধরনে  ব্যবহার নির্মান করেন।

গণ স্নানাগারঃ-

রোমান সভ্যতার বাথ্স অব ক্যারাক্যালা নির্মিত হয়েছিল ২১৫ খ্রীষ্টাব্দে। এখানে বিভিন্ন তাপমাত্রা ঠান্ডা পানি, অপেক্ষাকৃত উষ পানির ও উত্তপ্ত পানির সরবরাহ ছিল। এছাড়া স্টিম বাথ, ব্যয়ামাগার, বিশ্রামাগার, আলোচনা কক্ষ ও সাজঘর ছিল।

আলতামিরাঃ-

মানুষের আঁকা সবচেয়ে পুরোনো ছবি হল গুহাচিত্র যা প্রাগৈতিহাসিক গুহামানবদের আঁকা। এ ধরনের ২০০টি গুহা ফ্রান্স ও স্পেনে আবিস্কৃত হয়। ১৮৮৯ সালে সর্ববৃহৎ আলতামিরা গুহা উত্তর স্পেনে আবিস্কৃত হয়। এটির দৈর্ঘ্য ছিল ১০০০ ফুট। এতে দুই ধরনের খোঁদাই চিত্র দেখা যায়। এর মধ্যে গ্রেটফ্রেসকো বিখ্যাত। এটি ৪৪ ফুট দীর্ঘ।

ডিস্কোবোলাসঃ- এটি একটি গ্রকি ভাস্কর্য। ট্রাঞ্জিশনাল যুগের বিখ্যাত শিল্পী মাইরোন ক্রিটিয়াস কৃত ডিস্কোবোলাস একজন ক্রীড়াবিদের একটি বিশেষ ক্রীড়ানেপুন্যের ভঙ্গিমায় দেখা যায়। পার্থেনোন মন্দিরের আর্কাইক স্টাইলের অবমুক্তির প্রথম সোপান এটি।

টিয়েটা/ডেভিডঃ- টিয়েটা ও ডেভিড কালজয়ী শিল্পী মাইকেল এ্যাঞ্জেলোর অমর সৃষ্টি। পিয়েটা সেন্ট পিটার্স গীর্জায় সম্ভবত ১৪৯৯ সালে সৃষ্টি করেন। পিয়েটা অর্থাৎ দুঃখ। যীশুর মৃতদেহ মেরীর কোলে। পাথর কেঁটে তৈরি মূর্তিটি প্রাণময় ও প্রাণহীন দুইটি দেহের ভঙ্গিমা বেশ সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছে। ডেভিড হল অন্যতম সৃষ্টি। এটি একটি নগ্ন আদর্শ পুরুষ মূর্তি । গ্রীক সৌন্দর্য দেবতা এ্যাপেলোকে আদর্শ হিসেবে এটি নির্মান করা হয়েছিল। মার্বেল পাথরের তৈরি ১৮ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এ মূর্তিটি ফ্লেরেন্সের একাডেমিয়া মিউজিয়ামে রক্ষিত।

অশোকলিপিঃ- মৌর্য বংশীয় সম্রাট অশোকের সময়কালের প্রাচীন শিলালিপি। এসব লিপিতে পেশোয়ার থেকে শুরু করে মহীশুর এবং কাথিয়াবাড়, উরিষ্যা পর্যন্ত সারা ভারতবর্ষে পাওয়া গিয়েছে। অশোকের সাম্রাজ্যে সাধারন মানুষ নীতিকথা ও বুদ্ধের বাণী যেন সহজে পড়তে পারে এজন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। ব্রাহ্মীলিপি, খরোষ্ঠী লিপি ইত্যাদি বিভিন্ন লিপিতে এই লেখাগুলো উৎকীর্ণ হয়েছিল।

টেম্পারাঃ-

ডিমের সাদা অংশকে অস্বচ্ছ রং এর সাথে মিশিয়ে যে পদ্ধতিতে ছবি আঁকা হয় তাকে টেম্পারা বলে। টেম্পারা ছবিতে রং অত্যন্ত তাড়াতারি শুকিয়ে যায় এবং শুকনের রংকে আবার পানি দিয়েও ধুয়ে ফেলা যায়।

গোয়াশঃ- স্বচ্ছ জাল রংকে অস্বচ্ছ সাদা রং এর সাথে মিশিয়ে ছবি আঁকার কৌশলকে গোয়াশ বলে। ইলাস্ট্রেশন ও পোস্টার এর জন্য গোয়াশ জনপ্রিয়।

এ্যক্রিলিকঃ- এ্যাক্রিলিক পলিমার রেসিন ইমালশনে রংকে মিশিয়ে যে ছবি আঁকার হয়। এ ধরনের ছবিতে তুঁলিতে আঁচড় দেখা যায় না।

ট্যাপেস্ট্রিঃ-

বিশেষ ধরনের তাঁতে বোনা বস্ত্র যার লম্ব বরাবর সূতা স্থির থাকে এবং আনুভূমিক দিকে সূতা বোনা যায়। ট্যাপেস্ট্রিতে সাধারনত উল ব্যবহার করা হয়। এটি একটি প্রসিদ্ধ কারুশিল্প মাধ্যম। তাঁতের পিছনে লে-আউট করে ট্যাপেস্ট্রি বোনা হয়।

বাটিকঃ-

মোম ও রং এর সাহায্যে কাপড়ে স্থয়ীভাবে ডিজাইন করার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ধাপে ধাপে যেসব স্থানে রং প্রবেশ করবেনা সেসব স্থানকে মোম দিয়ে ঢেকে তারপর রং লাগানো হয়। ইন্দোনেশিয়া বাটিক শিল্পের জন্য বিখ্যাত।

টইডাইঃ-

কাপড়ে স্থায়ীভাবে রং এর সাহায্যে ডিজাইন করার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে যেসব স্থানে রং প্রবেশ করবেনা সেসব স্থানকে সুতা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। ভারতের রাজস্থানে টাই-ডাই বিশেষ সমৃদ্ধি অর্জন করেছে।

মহাভারতঃ-

সংস্কৃত ভাষায় রচিত ভারতের শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। কৃষদ্বৈপায়ন ও বেদব্যাস এর রচয়িতা। মহাভারতের মূল ঘটনা কুরু ও পান্ডবের যুদ্ধ। এটি কোন ধর্মগ্রন্থ নয়। এতে শৈব, শাক্ত ও বৈষ্ব ধর্মমতের সমন্বয় প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য। মহাভারত ১৮ পর্বে বিভক্ত।

চর্যাপদঃ-

প্রাচীন বাংলার আদিমতম নিদর্শন। একে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় ও বলা হয়। মহামহোপধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজকীয় লাইব্রেরী থেকে এই আবিস্কার করেন। এতে মোট ২৪ জন পদকর্তার নাম পাওয়া যায়। তার মধ্যে কাহ্নপাদ, শাস্ত্রীপাদ, লুইপাদ, সবরপাদ প্রসিদ্ধ। ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্র মতে এই পদগুলো আনুমানিক ৬৫০-১১০০ খ্রীষ্টাব্দে রচিত।

Download From Google Drive

Download

আরো পড়ুনঃ-

Download From Dropbox

Download

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here