বিসিএস বাংলা বিভক্ত যোগের নিয়ম
পিডিএফ ডাউনলোড
১. স্বরান্ত শব্দের পরে ‘এ’ বিভক্তির রূপ হয় ‘য়’ বা ‘য়ে’। যেমন
মেলা + য় = মেলায় পা + এ = পায়ে
২. স্বরান্ত শব্দের পরে ‘এ’ স্থানে ‘তে’ বিভক্তি যুক্ত হতে পারে। যেমন
৩. অ-কারান্ত বা ব্যঞ্জনান্ত শব্দের পর প্রথমায় ‘রা’ স্থানে ‘এরা’ হয় এবং ষষ্ঠী বিভক্তির ‘র’ এর স্থানে অনেক সময় ‘এর’ হয়। যেমন
বালক + এরা + বালকেরা বালক + এর = বালকের
৪. অপ্রাণিবাচক শব্দের পরে ‘কে’ বা ‘রে’ বিভক্তি হয় না, শন্য বিভক্তি হয়।
যেমন কাগজ নাও।
৫. অপ্রাণিবাচক বা ইতরপ্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে ‘রা’ যুক্ত হয় না গুলি, গুলা, গুলো হয়। যেমন লেবুগুলো, কাঁঠালগুলা, হাঁসগুলো, ফুলগুলো।
২. ক্রিয়া বিভক্তি: ধাতুর সাথে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠন করে তাকে ক্রিয়া বিভক্তি বলে। যেমন সে চিঠি লিখিতেছে।
এ বাক্যের ‘লিখিতেছে’ শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়
লেখা ক্রিয়া পদ ক্রিয়া বিভক্তি ইতেছে
লিখ্ ধাতু লিখ্ + ইতেছে = লিখিতেছে
এরূপ পড় + ইতেছে পড়িতেছে বল্ + আ = বলা
খেল্ + ইতেছে = খেলিতেছে কাঁদ্ + আ = কাঁদা
কারকের প্রকারভেদ
কর্তৃকারক: যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া স¤ক্সাদন করে, তাকে কর্তৃকারক বলে।
অর্থাৎ, ক্রিয়ার সাথে ‘কে’ বা ‘কারা’ যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায, তা-ই কর্তৃকারক। যেমন
সুজন ক্রিকেট খেলে।
যদি প্রশ্ন করা হয় কে ক্রিকেট খেলে? তাহলে উত্তর পাওয়া যাবে- ‘সুজন’। অতএব, ‘সুজন’ কর্তৃকারক।
কর্তৃকারকের প্রকারভেদ: বাক্যের কি্িযযা সম্পাদনের বৈচিত্র্য এবং বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্তৃকারক চার প্রকার।
যেমন- (ক) মুখ্য কর্তা, (খ) প্রযোজক কর্তা, (গ) প্রযোজ্য কর্তা ও (গ) ব্যতিহার কর্তা।
ক. মুখ্য কর্তা: যে কর্তা নিজেই ক্রিয়া স¤ক্সাদন করে, তাকে মুখ্য কর্তা বলে। যেমন
মামুন সাঁতার কাটছে।
খ. প্রযোজক কর্তা: যে কর্তা অন্যকে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করায় তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন- মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।
গ. প্রযোজ্য কর্তা: প্রযোজক কর্তা যাকে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করায়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন- রাখাল গরু চরায়।
উপরিউক্ত ‘রাখাল গরু চরায়’ বাক্যে ‘রাখাল’ প্রযোজক কর্তা এবং ‘গরু’ প্রযোজ্য কর্তা।
অনুরূপ- শিক্ষক ছাত্রকে পড়াচ্ছেন। মা ছেলেকে দুধ খাওয়ায়।
ঘ. ব্যতিহার কর্তা: দুটো কর্তা একত্রে এক জাতীয় ক্রিয়া সম্পাদন করলে, তাকে ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন
বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। সাপে-নেউলে লড়াই হচ্ছে।
বাপে-বেটায় ঝগড়া করছে।
রাজায় রাজায় লড়াই, উলু খাগড়ার প্রাণান্ত।
রাম-রাবণে করে রণ।
কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
১. প্রথমা বা শন্য বিভক্তি সুমান বই পড়ে।
২. দ্বিতীয়া বিভক্তি আমাকে যেতে হবে।
৩. তৃতীয়া বিভক্তি তোমার দ্বারা এ কাজ হবে না।
৪. পঞ্চমী বিভক্তি আমা হতে এ কাজ হবে না সাধন।
৫. ষষ্ঠী বিভক্তি করিমের যাওয়া হয়নি।
৬. সপ্তমী বিভক্তি
‘এ’ বিভক্তি সেয়ানে সেয়ানে বেঁধেছে ঝগড়া
‘য়’ বিভক্তি ঘোড়ায় ঘাস খায়।
‘তে’ বিভক্তি বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।
কর্মকারক: কর্তা যা করে বা যাকে আশ্রয় করে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্মকারক বলে।
বাক্যের অন্তর্ভুক্ত ক্রিয়া পদকে ‘কি’ বা ‘কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা-ই কর্মকারক। যেমন
জেলেরা মাছ ধরে।
কর্মকারকের প্রকারভেদ: কর্মকারক কয়েক প্রকারের হতে পারে। যেমন
ক. মুখ্য কর্ম বা বস্তুবাচক কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটো করে কর্ম থাকে। একটি বস্তুবাচক, অপরটি ব্যক্তিবাচক। দ্বিকর্মক ক্রিয়ার বস্তুবাচক কর্মকে মুখ্য কর্ম বলে। মুখ্যকর্মে বিভক্তি যুক্ত হয় না। যেমন বাবা আমাকে জামা কিনে দিয়েছেন।
এ বাক্যে ‘জামা’ মুখ্য কর্ম এবং ‘আমাকে’ গৌণ কর্ম। কারণ ‘জামা’ শব্দটির সাথে কোন বিভক্তি যুক্ত হয়নি।
খ. গৌণ কর্ম/ব্যক্তিবাচক কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার ব্যক্তিবাচক কর্মকে গৌণ কর্ম বলে। যেমন- তিনি আমাকে একটি কলম উপহার দিয়েছেন।
এ বাক্যে ‘আমাকে’ গৌণ কর্ম এবং ‘কলম’ মুখ্য কর্ম। কারণ ‘আমাকে’ শব্দটির সঙ্গে ‘কে’ বিভক্তি যুক্ত হয়েছে।
গ. উদ্দেশ্য কর্ম: বিভক্তিযুক্ত স্বাভাবিক কর্মকে উদ্দেশ্য কর্ম বলে। যেমন
তিনি আমাকে সত্যবাদী বলেছেন।
ঘ. বিধেয় কর্ম: বিভক্তিহীন দ্বিতীয় অতিরিক্ত কর্মকে বিধেয় কর্ম বলে। যেমন
দুধকে মোরা দুগ্ধ বলি, হলুদকে বলি হরিদ্রা।
তিনি দেশকে জননী ভাবতেন।
ঙ. সমধাতুজ কর্ম: কোন কোন অকর্মক ক্রিয়ার ক্ষেত্রে সেই ক্রিয়াজাত কোন শব্দকে কর্মরূপে ব্যবহার করে ক্রিয়া নিষ্পন্ন করতে হয়; এরূপ কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন
সে বেশ এক ঘুম ঘুমিয়েছে।
সে কি কান্নাই কাঁদল।
কর্মকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
১. প্রথমা বা শন্য বিভক্তি সে ভাত খায়।
২. দ্বিতীয়া বিভক্তি ধোপাকে কাপড় দাও।
৩. ষষ্ঠী বিভক্তি তোমার দেখা পেলাম না।
৪. সপ্তমী বিভক্তি জিজ্ঞাসিব জনে জনে।
বি.দ্র. কর্মকারকে সাধারণত দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়।
করণকারক: কর্তা যে উপায়ে বা যার দ্বারা ক্রিয়া স¤ক্সাদন করে, তাকে করণকারক বলে।
‘করণ’ শব্দটির অর্থ যš, সহায়ক উপায়। যেমন
জেলেরা জাল দ্বারা মাছ ধরে। লাঙ্গল দ্বারা জমি চাষ করা হয়।
করণ কারক তিন প্রকার। যথা
ক. উপায়াÍক করণ; খ. হেত্বার্থক করণ, গ. উপলক্ষণে করণ।
ক. উপায়Íক করণ: যে উপায় দ্বারা ক্রিয়া সাধিত হয়, তাকে উপায়Íক করণ বলে। যেমন মন দিয়া কর সবে বিদ্যা উপার্জন।
তার বাঁশির সুরে ঘরে থাকা দায়।
খ. হেত্বার্থক করণ: হেতু বা কারণ বোঝাতে হেত্বার্থক করণ হয়। যেমন
আনন্দে সে হাসতে লাগল।
শোকে সে বিহŸল হয়ে গেল।
গ. উপলক্ষণে করণ: লক্ষণ বা চিহ্ন বোঝাতে উপলক্ষণাÍক করণ হয়। যেমন
শিকারি বিড়াল গোঁফে চেনা যায়।
বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা বীরের বেশে মাঠে নামলো।
করণকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
১. প্রথমা বা শন্য বিভক্তি প্রদীপ বল খেলে।
২. তৃতীয়া বিভক্তি ছুরি দিয়ে আম কাট।
৩. সপ্তমী বিভক্তি এ কলমে লেখা হয় না।
ফুলে ফুলে সাজানো বাসর।
মায়ের কথা মধুতে মাখা।
এ সুতায় ভালো কাপড় হয় না।
সম্প্রদানে কারক: যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে স¤ক্স্রদান কারক বলে। যেমন ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও।
সম্প্রদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
১. চতুর্থী বিভক্তি দরিদ্রকে দান কর।
২. সপ্তমী বিভক্তি দীনে দয়া কর।
অন্ধজনে দেহ আলো।
সমিতিতে চাঁদা দাও।
কোন কিছুর নিমিত্ত বোঝালে স¤ক্স্রদান কারক হয় এবং ‘কে’ বিভক্তি থাকলে তা চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন বেলা যে পড়ে এল জলকে চল। (নিমিত্তার্থে চতুর্থী)
বি: দ্র: স¤ক্স্রদান কারকে সাদারণত চতুর্থী বিভক্তি হয়।
অপাদান কারক: যা তেকে কোন কিছু গৃহীত, জাত, বিচ্যুত, আরম্ভ, ভীত, উৎপন্ন, দরীভ‚ত, রক্ষিত ইত্যাদি হয়, তাকে অপাদান কারক বলে।
অর্থাৎ, যা থেকে ক্রিয়া প্রকাশিত হয় তার নাম অপাদান কারক। যেমন
গৃহীত মেঘ হতে বৃষ্টি হয়। ভীত যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়।
জাত খেজুর রসে গুড় হয়। উৎপন্ন জমি থেকে ধান হয়।
বিচ্যুত গাছ থেকে পাতা পড়ে। দরীভ‚ত এ দেশ থেকে সব অন্যায় দর করে দাও।
আরম্ভ সোমবার থেকে কাজে যোগ দাও।
রক্ষিত বিপদ হতে রক্ষা কর।
অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
১. প্রথমা বা শন্য বিভক্তি মনে পড়ে সেই চৈত্র দুপুরে পাঠশালা পলায়ন।
২. দ্বিতীয়া বিভক্তি ভ‚তকে আবার কিসের ভয়?
৩. ষষ্ঠী বিভক্তি এখানে সাপের ভয় আছে।
৪. সপ্তমী বিভক্তি তিলে তৈল হয়।
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।
টাকায় টাকা হয়।
অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তি ছাড়াও হইতে, হতে, দিযা, দিয়ে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি অনুসর্গ ব্যবহ্রত হয়।
যেমন
হইতে/হতে দর হতে শুনি মহাসাগরের গান।
থেকে তিনি ঢাকা থেকে আসলেন।
দিয়া/দিয়ে তার চোখ দিয়ে জল ঝরছে।
চেয়ে জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের চেয়ে বড়।
অধিকরণ কারক: ক্রিয়া সম্পাদানে কাল (সময়) এবং আধার (স্থান- কে অধিকরণ কারক বলে।
ক্রিয়া নিষ্পন্ন হওয়ার জন্য স্থান, কাল ও বিষয়ের প্রয়োজন হয়। যে স্থানে, যে কালে কিংবা যে বিষয়ে ক্রিয়া নিষ্পন্ন হয়, সেক্ষেত্রে অধিকরণ কারক হয়। যেমন
কাল (সময়) বিকালে সর্য ডুবে।
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি।
আধার (স্থান) আকাশে তারার মেলা।
বাগানে ফুল ফুটছে।
বিষয় ছেলেটি অংকে দুর্বল।
অধিকরণ কারক চার প্রকার। যেমন
ক. কালাধিকরণ; খ. আধারিকরণ; গ. বিষয়াধিকরণ; ঘ. ভাবাধিকরণ।
ক. কালাধিকরণ: যে কালে বা সময়ে ক্রিয়া স¤ক্সন্ন হয়, তাকে কালাধিকরণ বলে। যেমন আমরা সকালে রওনা হব।
পনের তারিখে পরীক্ষা ফল প্রকাশ হবে।
খ. আধারাধিকরণ: ক্রিয়া সংঘটনের স্থানকে বলে আধারাধিকরণ। যেমন
তিনি ঢাকায় বাস করেন।
তার মুখে মধু, অন্তরে বিষ।
গ. বিষয়াধিকরণ: কোন বিষয়ে কিংবা কোন বিশেষ গুণে কারও দক্ষতা বা অদক্ষতা এবং ক্ষমতা ও অক্ষমতা বোঝালে বিষয়াধিকরণ কারক হয়। যেমন
সে ইংরেজিতে ভালো কিন্তু অংকে কাঁচা
বাঙালিরা সাহসে দুর্জয়।
ঘ. ভাবাধিকরণ: কোন ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য যদি অন্য ক্রিয়ার কোনরূপ ভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তাহলে তাকে ভাবাধিকরণ বলে।
ভাবাধিকরণে সবসময় সপ্তমী বিভক্তির প্রয়োগ করে। যেমন
সর্যোদয়ে অন্ধকার দরীভ‚ত হয়।
কান্নায় শোক মন্দীভ‚ত হয়।
কারক ও বিভক্তি নির্ণয়ের সহজ ও নির্ভুল উপায়
বিভক্তি নির্ণয়ের নিয়ম: যে পদের নিচে রেখাঙ্কিত পদ থাকবে বা মোটা বর্ণে লিখিত থাকবে প্রথমে লক্ষ রাখতে হবে যে রেখাচিহ্নিত পদের পর অনুসর্গ বিভক্তি অর্থাৎ দ্বারা/দিয়া/কর্তৃক (৩য়) বা হইতে (হতে)/থেকে/চেয়ে/অপেক্ষা ৫মী বিভক্তি আছে কিনা, থাকলে সেক্ষেত্রে ৩য়া বা ৫মী উলেখ করতে হবে। যেমন
শাক দিয়া মাছ ঢেকো না ৩য়া
শীতে গাছ থেকে পাতা ঝরে।
যদি অনুসর্গ বিভক্তি না থাকে তাহলে বিভক্তি যুক্ত পদ থেকে মল পদ বা দিলে যেটুকু থাকবে সেটুকু যে বিভক্তি হয় সেটাই উলেখ করতে হবে। যেমন
পাগলে কি না বলে।
পাগল বাদ দিলে এ থাকে পাগলেপাগল = এ সুতরাং ৭মী।
রহিমকে যেতে হবে।
রহিম = কে অর্থাৎ ২য়া
যদি সম্প্রদান কারক হয় তবে কে = ৪র্থী
গুরুজনকে ভক্তি কর। ৪র্থী।
লাঠির আঘাতে। ৬ষ্ঠী
লাঠি = র
যদি কোন বিভক্তি না থাকে তবে শন্য বা ১মা হবে।
তীর বেধা পাখি। শন্য/১মা
তীর = ০/১
কারক নির্ণয়ের অভিন্ন উপায়: প্রত্যেক কারকেরই একটি নির্দিষ্ট বিভক্তি আছে। যেমন
কর্তৃ ১মা অ, আ
কর্ম ২য়া কে
করণ ৩য়া, দ্বারা
সম্প্রদান কে ৪র্থী
অপাদান ৫মী, হইতে, থেকে
অধিকরণ ৭মী এ, য়, তে
বিশেষত কর্ম এবং করণ কারকে সমস্যা দেখা দেয়। যেমন করিম বই পড়ে।
আমরা ২য়া ও ৩য়া উভয় বিভক্তি যুক্ত করে দেখিনি কোন বিভক্তিতে বাক্যটি অর্থবহ হয়।
করিম বই পড়ে: করিম বইকে পড়ে (অর্থবহ) করিম বই দ্বারা পড়ে (নয়) ফল এটি কর্ম কারক। কারণ কর্মকারকের নিজস্ব বিভক্তি কে তে অর্থবহ হয়েছে।
করিম তাস খেলে।
করিম তাস কে খেলে। (অর্থবহ না)
করিম তাস দ্বারা খেলে। (অর্থবহ)
সুতরাং এটি করণ।
অপাদান ও অধিকরণ কারকেও এভাবে সমাধান করা যাবে।
তিলে তৈল হয়।
তিল হইতে তৈল হয়। (অর্থবহ)
তিলে তৈল হয়। (অর্থবহ)
উভয় ক্ষেত্রে অর্থবহ হলে, সে ক্ষেত্রে যদি অতিথি বিবক্তিতে অর্থবহ হয় তাহলে তার গুরুত্বই প্রধান। উপরের উদাহরণে অপাদান কারক হবে।
ছাদে বৃষ্টি পড়ে। এটি অপাদান কারক। কারণ ছাদ স্থান হওয়া সত্তে¡ও অপাদানের বিভক্তিতে বাক্য অর্থব হচ্ছে, ফলে তার অগ্রাধিকার। ছাদ হইতে বৃষ্টি পড়ে। বাক্যটি অর্থবহ।
রোববার স্কুল খুলবে।
(র) রোববারে স্কুল খুলবে। (অর্থবহ) (রর) রোববার হইতে স্কুল খুলবে (অর্থবহ)
যেহেতু সময় অধিকরণ কারকের শর্ত। কিন্তু সেক্ষেত্রে এ বিভক্তি দিয়ে অর্থ তো হবেই, যেহেতু হইতে (অতিথি বিভক্তি) প্রয়োগেও অর্থ হচ্ছে, তখন সেক্ষেত্রে ৫মী বিভক্তির কারণে অবশ্যই অপাদান কারক হবে।
ট্রেন ঢাকা ছাড়ল।
(র) ট্রেন ঢাকায় ছাড়ল (অর্থ হয় না) (রর) ট্রেন ঢাকা হইতে ছাড়ল (অর্থবহ)
সুতরাং অপাদান কারক। এমনিভাবে কারক, নির্ণয় করলে শিক্ষার্থীদের সুবিধা হয়।
কি প্রশ্নে জবাব মিললে কর্ম? কি দ্বারা প্রশ্নে জবাব মিললে করণ কারক হয়? এমন বললে ছাত্রছাত্রীকে আগে জেনে নিতে হয় জবাবটি। কারণ
ছেলেটি বল খেলে। কি খেলে? বল
কি দ্বারা খেলে? বল।
একই জবাব, তাহলে ছাত্রটি কোন কারক লিখবে?
তার তো জানা নেই যে, এটি করণ। ফলে সে কর্ম বা করণ যে কোন একটি লিখে আসতে পারে। অথচ কর্ম লিখলে তো ভুল হবে।
যদি সে যদি বলকে খেলে। বল দ্বারা খেলে। এভাবে ব্যাখ্যা করে দেখে যে কর্ম বল তার সাথে অতিথি বিভক্তি যুক্ত হওয়ায় বাক্যটি অর্থবহ হচ্ছে, ফলে তখন করণ লিখবে এবং সঠিক জবাব হবে।