এস.এস.সি বাংলা ১ম পত্র অধ্যায় – ৫: গদ্য – নিরীহ বাঙালি এর সকল তথ্য ও MCQ প্রশ্নোত্তর PDF ডাউনলোড করুন

নবম-দশম শ্রেণির নিরীহ বাঙালি অধ্যায়ের  সকল তথ্য ও MCQ প্রশ্নোত্তর পিডিএফ Download 

SSC Bangla 1st Paper MCQ Question With Answer

এখানের সবগুলো প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ আকারে নিচে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।

লেখক পরিচিতি

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। ছোটবেলায় বড় বোন করিমুন্নেসা বেগম রোকেয়াকে বাংলা শিক্ষায় সাহায্য করেন। পরে তিনি বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন। বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহের পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন। স্বামীর প্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। সমকালীন মুসলমান সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি লেখনী ধারণ করেন। মুসলিম নারী জাগরণে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ও আঞ্জুমানে খাতয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে তিনি মুসলমান নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করেন। পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ৯ই ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। ছোটবেলায় বড় বোন করিমুন্নেসা বেগম রোকেয়াকে বাংলা শিক্ষায় সাহায্য করেন। পরে তিনি বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন। বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহের পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন। স্বামীর প্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। সমকালীন মুসলমান সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি লেখনী ধারণ করেন। মুসলিম নারী জাগরণে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ও আঞ্জুমানে খাতয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে তিনি মুসলমান নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করেন। পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ৯ই ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

আমরা দুর্বল নিরীহ বাঙালি। এই বাঙালি শব্দে কেমন সুমধুর তরল

আমরা দুর্বল নিরীহ বাঙালি। এই বাঙালি শব্দে কেমন সুমধুর তরল কোমল ভাব প্রকাশ হয়। আহা! এই অমিয়াসিক্ত বাঙালি কোন বিধাতা গড়িয়াছিলেন? কুসুমের সৌকুমার্য, চন্দ্রের চন্দ্রিকা, মধুর মাধুরী, যুথিকার সৌরভ, সুপ্তির নীরবতা, ভূধরের অচলতা, নবনীর কোমলতা, সলিলের তরলতা-এক কথায় বিশ্বজগতের সমুদয় সৌন্দর্য এবং স্নিগ্ধতা লইয়া বাঙালি গঠিত হইয়াছে! আমাদের নামটি যেমন শ্রুতিমধুর তদ্রুপ আমাদের সমুদয় ক্রিয়াকলাপও সহজ ও সরল।

আমরা মূর্তিমতী কবিতা-যদি ভারতবর্ষকে ইংরাজি ধরনের একটি

আমরা মূর্তিমতী কবিতা-যদি ভারতবর্ষকে ইংরাজি ধরনের একটি অট্টালিকা মনে করেন, তবে বঙ্গদেশ তাহার বৈঠকখানা (drawing room) এবং বাঙালি তাহাতে সাজসজ্জা (drawing room suit)! যদি ভারতবর্ষকে একটা সরোবর মনে করেন, তবে বাঙালি তাহাতে পদ্মিনী। যদি ভারতবর্ষকে একখানা উপন্যাস মনে করেন তবে বাঙালি তাহার নায়িকা! ভারতের পুরুষ সমাজে বাঙালি পুরুষিকা! অতএব আমরা মূর্তিমান কাব্য।

আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলো, পুঁইশাকের ডাঁটা, সজিনা ও পুঁটি মৎস্যের ঝোল

আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলো, পুঁইশাকের ডাঁটা, সজিনা ও পুঁটি মৎস্যের ঝোল অতিশয় সরস। আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলো ঘৃত, দুগ্ধ, ছানা, নবনীত, ক্ষীর, সর, সন্দেশ ও রসগোল্লা অতিশয় সুস্বাদু। আমাদের দেশের প্রধান ফল আম্র ও কাঁঠাল-এগুলো রসাল ও মধুর। অতএব আমাদের খাদ্যসামগ্রী ত্রিগুণাত্মক সরস, সুস্বাদু, মধুর।

খাদ্যের গুণ অনুসারে শরীরের পুষ্টি হয়। তাই সজিনা যেমন বীজবহুল

খাদ্যের গুণ অনুসারে শরীরের পুষ্টি হয়। তাই সজিনা যেমন বীজবহুল আমাদের দেশে তেমনই ভুঁড়িটি স্থূল। নবনীতে কোমলতা অধিক তাই আমাদের স্বভাবের ভীরুতা অধিক। শারীরিক সৌন্দর্য সম্বন্ধে অধিক বলা নিষ্প্রয়োজন। এখন পোষাক পরিচ্ছদের কথা বলি।

আমাদের বর অঙ্গ যেমন তৈলসিক্ত, নবনিগঠিত সুকোমল, পরিধেয়ও তদ্রুপ

আমাদের বর অঙ্গ যেমন তৈলসিক্ত, নবনিগঠিত সুকোমল, পরিধেয়ও তদ্রুপ অতি সূক্ষ্ম শিমলার ধূতি ও চাদর। ইহাতে বায়ুসঞ্চালনের (Ventilation -এর) কোন বাধা বিঘ্ন হয় না! আমরা সময় সময় সভ্যতার অনুরোধে কোট শার্ট ব্যবহার করি বটে কারণ পুরুষমানুষের সবই সহ্য হয়। কিন্তু আমাদের অর্ধাঙ্গী-হেমাঙ্গী, কেষ্ণাঙ্গিগণ তদানুকরণে ইংরাজ ললনাদের নির্লজ্জ পরিচ্ছদ শেমিজ (জ্যাকেট) ব্যবহার করেন না। তাঁহারা অতিশয় সুকুমারী ললিতা লজ্জাবতী লতিকা তাই অতি মসৃণ ও সূক্ষ্ণ ‘হাওয়ার শাড়ি’পরেন। বাঙালির সকল বস্তুই সুন্দর, স্বচ্ছ ও সহজলব্ধ।

বাঙালির গুণের কথা লিখিতে হইলে অনন্ত মসী, কাগজ ও অক্লান্ত লেখকের আবশ্যক।

বাঙালির গুণের কথা লিখিতে হইলে অনন্ত মসী, কাগজ ও অক্লান্ত লেখকের আবশ্যক। তবে সংক্ষেপে দু/চারিটা গুণের বর্ণনা করি। ধনবৃদ্ধির দুই উপায়, বাণিজ্য ও কৃষি। বাণিজ্য আমাদের প্রধান ব্যবসায়। কিন্তু তাই বলিয়া আমরা আরব্যোপন্যাসের. সিন্ধবাদের ন্যায় বাণিজ্যপোত অনিশ্চিত ফল লাভের আশায় অনন্ত অপার সাগরে ভাসাইয়া দিয়া নৈরাশ্যের ঝঞ্ঝাবাতে ওতপ্রোত হই না। আমরা ইহাকে (বাণিজ্য) সহজ ও স্বল্পায়াসসাধ্য করিয়া লইয়াছি।

অর্থাৎ বাণিজ্যি ব্যবসায়ে যে কঠিন পরিশ্রম আবশ্যক, তাহা বর্জন করিয়াছি।

অর্থাৎ বাণিজ্যি ব্যবসায়ে যে কঠিন পরিশ্রম আবশ্যক, তাহা বর্জন করিয়াছি। এই জন্য আমাদের দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিস নাই, শুধু বিলাসদ্রব্য-নানাবিধ কেশতৈল ও নানাপ্রকার রোগবর্ধক ঔষধ এবং রাঙা পিত্তলের অলঙ্কার, নকল হীরার আংটি, বোতাম ইত্যাদি বিক্রয়ার্থ মজুদ আছে। ঈদৃশ ব্যবসায়ে কায়িক পরিশ্রম নাই। আমরা খাঁটি সোনা, রূপা, জওযাহেরাৎ রাখি না, কারণ টাকার অভাব। বিশেষতঃ আজি কালি কোন জিনিসটার নকল না হয়?

যখনই কেহ একটু যত্ন পরিশ্রম স্বীকার পূর্বক ‘দীর্ঘকেশী’ তৈল প্রস্তুত করেন,

যখনই কেহ একটু যত্ন পরিশ্রম স্বীকার পূর্বক ‘দীর্ঘকেশী’ তৈল প্রস্তুত করেন, অমনই আমরা তদনুকরণে ‘হ্রস্বকেশী’ বাহির করি। ‘কুন্তলীনের’ সঙ্গে ‘কেশলীন’ বিক্রয় হয়। বাজারে ‘মস্তিষ্ক স্নিগ্ধকারী’ ঔষধ আছে, ‘মস্তিষ্ক উষ্ণকারী’ দ্রব্যও আছে। এক কথায় বলি, যত প্রকারের নকল ও নিষ্প্রয়োজনীয় জিনিস হইতে পারে, সবই আছে। আমরা ধান্য তণ্ডুলের ব্যবসায় করি না কারণ তাহাতে পরিশ্রম আবশ্যক।

আমাদের অন্যতম ব্যবসায়-পাসবিক্রয়। এই পাসবিক্রেতার নাম ‘বর’ এবং ক্রেতাকে

আমাদের অন্যতম ব্যবসায়-পাসবিক্রয়। এই পাসবিক্রেতার নাম ‘বর’ এবং ক্রেতাকে ‘শ্বশুর’ বলে। এক একটি পাসের মূল্য কত জান? ‘অর্ধেক রাজত্ব ও এক রাজকুমারী’। এমএ পাস অমূল্যরত্ন, ইহা যে সে ক্রেতার ক্রেয় নহে। নিতান্ত সস্তা দরে বিক্রয় হইলে, মূল্য-এক রাজকুমারী এবং সমুদয় রাজত্ব। আমরা অলস, তরলমতি, শ্রমকাতর, কোমলাঙ্গ বাঙালি কিনা তাই ভাবিয়া দেখিয়াছি, সশরীরে পরিশ্রম করিয়া মুদ্রালাভ করা অপেক্ষা Old fool শ্বশুরের যথাসর্বস্ব লুণ্ঠন করা সহজ।

এখন কৃষিকার্যের কথা বলি। কৃষি দ্বারা অন্নবৃদ্ধি হইতে পারে। কিন্তু আমরা

এখন কৃষিকার্যের কথা বলি। কৃষি দ্বারা অন্নবৃদ্ধি হইতে পারে। কিন্তু আমরা ভাবিয়া দেখিয়াছি কৃষিবিভাগের কার্য (Agriculture) করা অপেক্ষা মস্তিষ্ক উর্বর (Brain culture) করা সহজ। অর্থাৎ কর্কশ উর্বর ভূমি কর্ষণ করিয়া ধান্য উৎপাদন করা অপেক্ষা মুখস্থ বিদ্যার জোরে অর্থ উৎপাদন করা সহজ। এবং কৃষিকার্যে পারদর্শিতা প্রদর্শন করা অপেক্ষা কেবল MRAC পাশ করা সহজ। আইনচর্চা করা অপেক্ষা কৃষি বিষয়ে জ্ঞানচর্চা করা কঠিন।

অথবা রৌদ্রের সময় ছত্র হস্তে কৃষিক্ষেত্র পরিদর্শনের জন্য কৃষি বিষয়ে জ্ঞানচর্চা

অথবা রৌদ্রের সময় ছত্র হস্তে কৃষিক্ষেত্র পরিদর্শনের জন্য কৃষি বিষয়ে জ্ঞানচর্চা অপেক্ষা টানাপাখার তলে আরাম কেদারায় বসিয়া দুর্ভিক্ষ সমাচার (Famine Report) পাঠ করা সহজ। তাই আমরা অন্নোৎপাদনের চেষ্টা না করিয়া অর্থ উৎপাদনে সচেষ্ট আছি। আমাদের অর্থের অভাব নাই, সুতরাং অন্নকষ্টও হইবে না। দরিদ্র হতভাগা সব অন্নাভাবে মরে মরুক, তাতে আমাদের কি?

আমরা আরও অনেক প্রকার সহজ কার্য নির্বাহ করিয়া থাকি।

আমরা আরও অনেক প্রকার সহজ কার্য নির্বাহ করিয়া থাকি। যথা: (১) রাজ্য স্থাপন করা অপেক্ষা ‘রাজ্য’ উপাধি লাভ সহজ। (২) শিল্পকার্যে পারদর্শী হওয়া অপেক্ষা বিএসসি ও ডিএসসি পাস করা সহজ। (৩) অল্পবিস্তর অর্থব্যয়ে দেশে কোন মহৎ কার্য দ্বারা খ্যাতি লাভ করা অপেক্ষা ‘খাঁ বাহাদুর’/‘রায় বাহাদুর’ উপাধি লাভের জন্য অর্থ ব্যয় করা সহজ। (৪) প্রতিবেশী দরিদ্রদের শোক দুঃখে ব্যথিত হওয়া অপেক্ষা বেদেশীয় বড় লোকদের মৃত্যুদুঃখে ‘শোক সভার’ সভ্য হওয়া সহজ। (৫) দেশের দুর্ভিক্ষ নিবারণের জন্য পরিশ্রম করা অপেক্ষা আমেরিকার নিকট ভিক্ষা গ্রহণ করা সহজ। (৬) স্বাস্থ্যরক্ষায় যত্নবান হওয়া অপেক্ষা স্বাস্থ্য নষ্ট করিয়া ঔষধ ও ডাক্তারের হস্তে জীবন সমর্পণ করা সহজ। (৭) স্বাস্থ্যের উন্নতি দ্বারা মুখশ্রীর প্রফুল্লতা ও সৌন্দর্য বর্ধন করা (অর্থাৎ healthy & cheerful হওয়া অপেক্ষা শুষ্কগণ্ডে!) কালিডোর, মিল্ক অভ রোজ ও ভিনোলিয়া পাউডার (Kalydore, milk of rose and Vinolia powder) মাখিয়া সুন্দর হইতে চেষ্টা করা সহজ। (৮) কাহারও নিকট প্রহারলাভ করিয়া তৎক্ষণাৎ বাহুবলে প্রতিশোধ লওয়া অপেক্ষা মানহানির মোকদ্দমা করা সহজ ইত্যাদি।

তারপর আমরা মূর্তিমান আলস্য আমাদের গৃহিণীগণ এ বিষয়ে অগ্রণী।

তারপর আমরা মূর্তিমান আলস্য আমাদের গৃহিণীগণ এ বিষয়ে অগ্রণী। কেহ কেহ শ্রীমতীদিগকে স্বহস্তে রন্ধন করিতে অনুরোধ করিয়া থাকেন। কিন্তু বলি, আমরা যদি রৌদ্রতাপ সহ্য করিতে না পারি তবে আমাদের অর্ধাঙ্গীগণ কিরূপে অগ্নিত উত্তাপ সহিবেন? আমরা কোমলাঙ্গা তাঁহারা কোমলাঙ্গী; আমরা পাঠক, তাঁহারা পাঠিকা; আমরা লেখক, তাঁহারা লেখিকা। অতএব আমরা পাচক না হইলে তাঁহারা পাচিকা হইবেন কেন?

সুতরাং যে লক্ষীছাড়া দিব্যাঙ্গনাদিগকে রন্ধন করিতে বলে, তাহার ত্রিবিধ

সুতরাং যে লক্ষীছাড়া দিব্যাঙ্গনাদিগকে রন্ধন করিতে বলে, তাহার ত্রিবিধ দণ্ড হওয়া উচিত। যথা: তাহাকে (১) তুষানলে দগ্ধ কর, অতঃপর (২) জবেহ্ কর, তারপর (৩) ফাঁসি দাও! আমরা সকলেই কবি। আমাদের কাব্যে বীররস অপেক্ষা করুণরস বেশি। আমাদের এখানে লেখক অপেক্ষা লেখিকার সংখ্যা বেশি। তাই কবিতার স্রোতে বিনা কারণে অশ্রুপ্রবাহ বেশি বহিয়া থাকে। আমরা পদ্য লিখিতে বসিলে কোন বিষয়টা বাদ দিই? ‘ভগ্ন শূর্প’, ‘জীর্ণ কাঁথা’, ‘পুরাতন চটিজুতা’ কিছুই পরিতাজ্য নহে।

আমরা আবার কত নতুন শব্দের সৃষ্টি করিয়াছি। যথা: অতি শুভ্রনীলাম্বর,

আমরা আবার কত নতুন শব্দের সৃষ্টি করিয়াছি। যথা: অতি শুভ্রনীলাম্বর, সাশ্রুসজল নয়ন ইত্যাদি। শ্রীমতীদের করুণ বিলাপ প্রলাপপূর্ণ পদ্যের ‘অশ্রুজলের’ বন্যায় বঙ্গদেশ ধীরে ধীরে ডুবিয়া যাইতেছে! সুতরাং দেখিতেছেন, আমরা সকলেই কবি। আর আত্মপ্রশংসা কত করিব? এখন উপসংহার করি।

সৌকমার্য- সৌন্দর্য, ঝঞ্ঝাবাতে- ঝঞ্ঝার বাতাস, কুন্তলীন, কেশলীন- লেখকের

সৌকমার্য- সৌন্দর্য, ঝঞ্ঝাবাতে- ঝঞ্ঝার বাতাস, কুন্তলীন, কেশলীন- লেখকের আমলে জনপ্রিয় চুলে দেয়ার তেলের নাম, হাওয়ার শাড়ি- সূক্ষ্ম সুতোর শাড়ি, পাতলা শাড়ি, তণ্ডল- চাল, কালিডোর, মিল্ক অব রোজ, ভিনোলিয়া পাউডার- সৌন্দর্যবর্ধক সামগ্রী, দিব্যাঙ্গনা- স্বর্গের রূপসি, হুরপরি, শুভ্রনীলাম্বর-পরিষ্কার নীল আকাশ, সাশ্রুসজলনয়ন- জলভরা চোখ, আত্মপ্রশংসা- নিজের প্রশংসা।

বাঙালি নারী-পুরুষের প্রাত্যহিক জীবনাচরণের বিভিন্ন দিক হাস্য রসাত্মকভাবে

‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধটি রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনর রচনা সমগ্র থেকে নেয়া হয়েছে। এখানে লেখক বাঙালির গুণ রসাত্মকভাবে তুলে ধরেছেন।

বাঙালি নারী-পুরুষের প্রাত্যহিক জীবনাচরণের বিভিন্ন দিক হাস্য রসাত্মকভাবে তিনি বর্ণনা করেছেন। বাঙালি পুরুষগণের অলসপ্রিয়তা, শারীরিক পরিশ্রমে অনীহা, বাগাড়ম্বর আচরণ সম্পর্কে আলোচনা যেমন রয়েছে তেমনি নারীদের অহেতুক রূপচর্চা, পরিচর্চা এবং নিজেদের অবলা প্রমাণ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রতি নেতিবাচক রয়েছেন।

লেখক পরিচিতি

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। ছোটবেলায় বড় বোন করিমুন্নেসা বেগম রোকেয়াকে বাংলা শিক্ষায় সাহায্য করেন। পরে তিনি বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন। বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহের পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন। স্বামীর প্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। সমকালীন মুসলমান সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি লেখনী ধারণ করেন। মুসলিম নারী জাগরণে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ও আঞ্জুমানে খাতয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে তিনি মুসলমান নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করেন। পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ৯ই ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

নিরীহ বাঙালি অধ্যায়ের সকল বহুনির্বাচনী সাজেশন

১. নবনীতে কোমলতা থাকার কারণে বাঙালিদের স্বভাবে কী বেশি?
ক) সাহসিকতা
খ) ভীরুতা
গ) স্নিগ্ধতা
ঘ) কঠোরতা
সঠিক উত্তর: (খ)

২. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে পাওয়া যায় –
i. দুর্বল
ii. অবলা
iii. নিরীহ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৩. বাঙালি বাণিজ্যকে সহজ ও স্বল্পায়াস সাধ্য করে নিয়েছে যে কারণে তা হলো –
i. ভালোবেসে
ii. পরিশ্রমে অনীহা
iii. নিজেদের সুবিধায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৪. আমাদের দেশের প্রধান ফলগুলো কেমন?
ক) রসালো
খ) তিতা
গ) পানসে
ঘ) টক
সঠিক উত্তর: (ক)

৫. ‘ভাঙ্গাকুলা’ বলতে লেখিকা কোনটি ব্যবহার করেছেন?
ক) জীর্ণ কাঁথা
খ) কালিডোর
গ) কুন্তলীন
ঘ) ভগ্ন শূর্প
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৬. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে লেখিকা বাঙালি নারীর প্রতি যে মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তা হলো –
ক) ইতিবাচক
খ) নেতিবাচক
গ) হাস্যরসাত্মক
ঘ) প্রশংসাবাচক
সঠিক উত্তর: (খ)

৭. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে বাঙালির পশ্চাৎপদতার স্বরূপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে –
i. অলসপ্রিয়তা
ii. পরিশ্রমে অনীহা
iii. বাগাড়ম্বর আচরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৮. মুসলমান মেয়েদেরকে শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করতে লেখিকা –
i. সাহিত্য রচনা করেছেন
ii. বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন
iii. উপবৃত্তি প্রদান করেছেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৯. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে কারা সবই সহ্য করতে পারে?
ক) পুরুষরা
খ) নারীরা
গ) ধনীরা
ঘ) দরিদ্ররা
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. ৯ ডিসেম্বরের সাথে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সম্পর্ক –
i. জন্মে
ii. মৃত্যুতে
iii. বিবাহে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১১. আবীর সাহেব একজন বড় ব্যবসায়ী। তিনি শ্বশুরের টাকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখানে ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রতিফলিত –
i. শ্বশুরের সম্পত্তি ভোগের লালসা
ii. পাস বিক্রয়
iii. ভিক্ষা গ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১২. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধ পড়ে শিক্ষার্থীরা ধারণা পাবে –
i. বাঙালি নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক দিক সম্পর্কে
ii. সমাজে নারী-পুরুসের বৈষম্য সম্পর্কে
iii. নারীর মানসিক দাসত্ব সম্পর্কে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৩. ‘বাঙালির গুণের কথা লিখতে হেইলে অনন্ত মসী, কাগজ, অক্লান্ত লেখকের আবশ্যক’ – এখানে ‘গুণ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) বৈচিত্র‌্য
খ) মর্যাদা
গ) বৈশিষ্ট্য
ঘ) দোষ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৪. দেশের দুর্ভিক্ষ নিবারণের জন্য তুমি কী করবে?
ক) আমেরিকায় ভিক্ষা করব
খ) পরিশ্রম করব
গ) বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করব
ঘ) সেনাবাহিনীতে যোগ দেব
সঠিক উত্তর: (খ)

১৫. স্বাস্থ্যের উন্নতির দ্বারা সম্ভব হয় –
i. মুখম্রীর প্রফুল্লতা
ii. মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা
iii. সৌন্দর্য বর্ধন করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

১৬. সৌকমুার্য শব্দের অর্থ কী?
ক) সৌন্দর্য
খ) আনন্দ
গ) আকাশ
ঘ) বন
সঠিক উত্তর: (ক)

১৭. বাঙালির খাদ্যসামগ্রীর গুণ হলো – i. সরস ii. সুস্বাদু iii. মধুর নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৮. আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলো আসলে কী?
ক) পুঁইশাকের ডাঁটা, সজিনা
খ) ফ্রাইড রাইস, নুডুলস
গ) স্যুপ, চিকেন ফ্রাই
ঘ) রুটি, ডাল
সঠিক উত্তর: (ক)

১৯. নারীরা নিজেদের সর্বদা কী প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা চালায়?
ক) স্নেহময়ী রূপ
খ) কঠোর রূপ
গ) অবলা
ঘ) বন্ধুত্বের রূপ
সঠিক উত্তর: (গ)

২০. বেগম রোকেয়ার সাহিত্য রচনার মূল সুর কী?
ক) সমাজসংস্কার
খ) নারী জাগরণ
গ) নারী জাতির মূল্যায়ন
ঘ) ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে সোচ্চার
সঠিক উত্তর: (খ)

২১. কোন ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে রোকেয়া ইংরেজি শেখেন?
ক) বড় ভাই
খ) মেজ ভাই
গ) সেজ ভাই
ঘ) ছোট ভাই
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. ‘নিরীহ বাঙালি’ কী জাতীয় রচনা?
ক) বিজ্ঞান বিষয়ক
খ) হাস্যরসাত্মক
গ) তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক
ঘ) নারীর উন্নতি বিষয়ক
সঠিক উত্তর: (খ)

২৩. দুর্ভিক্ষ নিবারণ অপেক্ষা ভিক্ষা চাওয়া সহজ কেন?
ক) না চাইতেই পাওয়া যায় বলে
খ) সহজেই পাওয়া যায় বলে
গ) চাইলেই পাওয়া যায় বলে
ঘ) বিনা পরিশ্রমে পাওয়া যায় বলে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৪. বাঙালির গুণের কথা লিখতে আবশ্যক –
i. অনন্ত মসী
ii. কাগজ
iii. অক্লান্ত লেখক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৫. লেখকার মতে বাঙালিদের ধনবৃদ্ধির উপায় কী?
ক) কৃষি
খ) মৃৎশিল্প
গ) তাঁতশিল্প
ঘ) বস্ত্রশিল্প
সঠিক উত্তর: (ক)

২৬. বাঙালির খাদ্যসামগ্রী হলো –
i. ত্রিগুণাত্মক
ii. সুস্বাদু
iii. মধুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২৭. ‘আজি কালি কোন জিনিষটার নকল না হয়?’ লেখিকা এই উক্তিটি করেছেন কেন?
ক) ভেজালের চাহিদা বেশি বলে
খ) ভেজাল সহজলভ্য বলে
গ) ভেজালের অল্পতা বোঝাতে
ঘ) ভেজাল দ্রব্য সস্তা বলে
সঠিক উত্তর: (খ)

২৮. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে আরব্য উপন্যাসের কোন চরিত্রের উল্লেখ রয়েছে?
ক) আলিবাবা
খ) আলাদিন
গ) সিন্ধবাদ
ঘ) হারুন-অর-রশিদ
সঠিক উত্তর: (গ)

২৯. সমকালীন মুসলমান সমাজের কীসের বিরুদ্ধে তিনি লেখনী ধারণ করেন?
ক) কুসংস্কার
খ) দারিদ্র‌্য
গ) শিক্ষা
ঘ) অর্থনীতি
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে লেখিকা ‘পাস বিক্রয়’ বলতে কী বুঝিয়েছেন?
ক) শিক্ষাকে
খ) ব্যক্তিকে
গ) ব্যক্তিত্বকে
ঘ) মূল্যবোধকে
সঠিক উত্তর: (ক)

এছাড়া ও এই অধ্যায়ের আরো অনেকগুলো MCQ সাজেশন পেতে নিচের পিডিএফ ফাইল টি ডাউনলোড করে নিন

PDF File Download From Here

? সাইজঃ- 277 KB

? পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here