এস. এস. সি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৭:রাষ্ট্র,নাগরিকতা ও আইন
এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন
রাষ্ট্রের ধারণা
প্রত্যেক মানুষই কোন না কোন রাষ্ট্রে বসবাস করে। হঠাৎ করে কোন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয় নি। আদিম মানুষ প্রথমে গোত্রভিত্তিক বসবাস করত। সময়ের পরিবর্তনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ও রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এরিস্টটলের মতে, “স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সংগঠনে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।” রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত নাগরিকদের উপর বলবৎ হয়।” অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন,’রাষ্ট্র হল বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক সমাজ, যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।‘
সুতরাং আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র হল একটি ভূ-খণ্ডভিত্তিক সমাজ বিশেষ, যার সংগঠিত সরকার ও জনসমষ্টি রয়েছে এবং যার নিজস্ব এলাকার মধ্যে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের উপর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত আছে।
রাষ্ট্রের ধারণা ব্যাখ্যা করলে আমরা চারটি উপাদান দেখতে পাই। যথা, জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। প্রত্যেক রাষ্ট্রই এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
প্রত্যেক মানুষই কোন না কোন রাষ্ট্রে বসবাস করে। হঠাৎ করে কোন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয় নি। আদিম মানুষ প্রথমে গোত্রভিত্তিক বসবাস করত। সময়ের পরিবর্তনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ও রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এরিস্টটলের মতে, “স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সংগঠনে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।” রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত নাগরিকদের উপর বলবৎ হয়।” অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন,’রাষ্ট্র হল বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক সমাজ, যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।‘
সুতরাং আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র হল একটি ভূ-খণ্ডভিত্তিক সমাজ বিশেষ, যার সংগঠিত সরকার ও জনসমষ্টি রয়েছে এবং যার নিজস্ব এলাকার মধ্যে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের উপর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত আছে।
রাষ্ট্রের ধারণা ব্যাখ্যা করলে আমরা চারটি উপাদান দেখতে পাই। যথা, জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। প্রত্যেক রাষ্ট্রই এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
তথ্য অধিকার
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এরই একটি অংশ। বাংলাদেশ সরকার ৫ এপ্রিল,২০০৯ তথ্য অধিকার আইন জারি করে। জনগণের প্রাপ্ত অধিকারকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই আইন প্রণীত হয়।
পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রেই তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। সাধারণভাবে বলতে গেলে যে কোন ধরনের রেকর্ডই তথ্যের অন্তর্ভুক্ত। তথ্য অধিকার আইন বলতে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো, দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড যে কোন স্মারক, বই, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবহি, আদেশ-বিজ্ঞপ্তি,দলিল,নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনসট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা এদের প্রতিলিপিকে বুঝানো হয়েছে। তবে দাপ্তরিক নোট বা সিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হয়।
বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনে ‘তথ্য কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। তথ্য কমিশনে একজন প্রধান তথ্য কমিশনারসহ দুইজন তথ্য কমিশনার রয়েছেন।
এই আইনে বলা হয়েছে- প্রত্যেক নাগরিকের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষও একজন নাগরিকের তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকবে। আইন অনুযায়ী সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত বা অধীনস্থ কোন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয় তথ্য প্রদান ইউনিট হিসেবে কাজ করবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এরই একটি অংশ। বাংলাদেশ সরকার ৫ এপ্রিল,২০০৯ তথ্য অধিকার আইন জারি করে। জনগণের প্রাপ্ত অধিকারকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই আইন প্রণীত হয়।
পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রেই তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। সাধারণভাবে বলতে গেলে যে কোন ধরনের রেকর্ডই তথ্যের অন্তর্ভুক্ত। তথ্য অধিকার আইন বলতে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো, দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড যে কোন স্মারক, বই, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবহি, আদেশ-বিজ্ঞপ্তি,দলিল,নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনসট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা এদের প্রতিলিপিকে বুঝানো হয়েছে। তবে দাপ্তরিক নোট বা সিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হয়।
বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনে ‘তথ্য কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। তথ্য কমিশনে একজন প্রধান তথ্য কমিশনারসহ দুইজন তথ্য কমিশনার রয়েছেন।
এই আইনে বলা হয়েছে- প্রত্যেক নাগরিকের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষও একজন নাগরিকের তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকবে। আইন অনুযায়ী সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত বা অধীনস্থ কোন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয় তথ্য প্রদান ইউনিট হিসেবে কাজ করবে।
সরকার
রাষ্ট্রের অপরিহার্য তৃতীয় উপাদানটি হল সরকার । সরকার গঠনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠন আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনটি বিভাগ থাকে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সমন্বয়ে সরকার গঠিত হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারণত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের সরকার গঠন করে। সরকার পদ্ধতি বিভিন্ন রাষ্ট্রে বিভিন্ন হতে পারে। সরকার বলতে ব্যাপক অর্থে শাসকগোষ্ঠীর সকলকে বোঝায়, যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে। অর্থাৎ, রাষ্ট্রের ক্ষমতা সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়। অধ্যাপক গার্নারের মতে, “রাষ্ট্র যদি হয় জীবদেহ তবে সরকার হলো এর মস্তিষ্কস্বরূপ।”
আইনের ধারণা
সাধারণভাবে আইন বলতে সামাজিকভাবে স্বীকৃত লিখিত ও অলিখিত বিধিবিধান ও রীতিনীতিকে বোঝায়। মানুষের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অধিকাংশ মানুষই এ নিয়মকানুনসমূহ মেনে চলে। সুতরাং আইন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন, রীতিনীতি বা বিধিবিধান। সামাজিক জীবনে যেসব গন্ডিবিধি বা রীতিনীতি মানুষ মেনে চলে তা হচ্ছে সামাজিক আইন। আর রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিভিন্ন জাতীয় নীতিমালার প্রেক্ষিতে এবং মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে কিংবা সমাজে সৃষ্টি বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সার্বজনীনভাবে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশই রাষ্ট্রীয় আইন নামে পরিগণিত। বিভিন্ন রাজনৈতিক তত্ত্ববিদ ও আইন বিশারদগণ আইনের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
টি. এইচ. গ্রিন বলেন, “রাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত অধিকার এবং বাধ্যবাধকতাসমূহ আইন।” হল্যান্ড বলেন,” আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের কতকগুলো সাধারণ নিয়ম, যা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রণীত হয়।” উড্রো উইলসন বলেন,”আইন হল সমাজের সেই সকল প্রতিষ্ঠিত প্রথা ও রীতিনীতি যেগুলো সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত এবং যা সরকারের অধিকার ও ক্ষমতার দ্বারা বলবৎ করা হয়।”
আইনের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হল্যান্ড আইনের ৬টি উৎসের কথা বলেছেন। এগুলো হলঃ প্রথা, ধর্ম, বিচার সংক্রান্ত রায়, বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা, ন্যায়বোধ ও আইনসভা।
আইনের বৈশিষ্ট্য
আইনের কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। তা নিম্নরূপ-
১. আইন মানুষের বাহ্যিক আচরণ ও ক্রিয়াকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।
২. আইন হচ্ছে সার্বজনীন, কেননা তা সমভাবে রাষ্ট্রের সকলের জন্য প্রযোজ্য হয়।
৩. আইন হচ্ছে এক ধরনের আদেশ বা নিষেধ যা সকলকে মান্য করতে হয় এবং যারা আইন অমান্য করে তাদের সাজা পেতে হয়।
৪. আইন রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বমূলক কর্তৃপক্ষ হতে স্বীকৃত এবং আরোপিত।
৫. সমাজে প্রচলিত প্রথা ও রীতিনীতি সকলের নিকট মান্য।
সার্বভৌমত্ব
রাষ্ট্র গঠনের মুখ্য উপাদান সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌমিকতা। সার্বভৌম শব্দ দ্বারা চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতাকে বোঝায়। সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রের গঠন পূর্ণতা পায়। এ ক্ষমতা রাষ্ট্রকে অন্যান্য সংস্থা থেকে পৃথক করে। সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের ঐ বৈশিষ্ট্য যার ফলে নিজের ইচ্ছা ছাড়া অন্যকোনো প্রকার ইচ্ছার দ্বারা রাষ্ট্র আইনসংগতভাবে আবদ্ধ নয়। প্রত্যেক সমাজব্যবস্থায় চূড়ান্ত ক্ষমতা কার্যকরী করার জন্য মাত্র একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ থাকবে। আর এ ক্ষমতাই হলো সার্বভৌম ক্ষমতা। সার্বভৌমের আদর্শই হলো আইন। সার্বভৌমের আদর্শ বা আইন মানতে সকলেই বাধ্য। সার্বভৌম ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দুইটি দিক রয়েছে। অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যকার সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। এই সার্বভৌম ক্ষমতার উর্ধ্বে কোন কর্তৃপক্ষ নেই। বাহ্যিক সার্বভৌমের অর্থ হল রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকবে। কেবল জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড ও সরকার থাকা সত্ত্বেও একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা না থাকলে তা রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হবে না। যতদিন রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব বিদ্যমান থাকে ততদিন সার্বভৌমত্বের স্থায়িত্ব থাকবে। সরকারের পরিবর্তন সার্বভৌমত্বের স্থায়িত্বকে নষ্ট করে।
নাগরিকের ধারণা
রাষ্ট্র গঠনের একটি পূর্বশর্ত হল জনসমষ্টি। যখন একটি রাষ্ট্র পূর্ণাঙ্গভাবে আত্মপ্রকাশ করে তখন সেই জনসমষ্টি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রের সঙ্গে এর নাগরিকের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। রাষ্ট্রের নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যজ্ঞানের উপর রাষ্ট্রের কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে। অতএব, নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং কীভাবে সুনাগরিক হওয়া যায় তা আমাদের জানতে হবে।
ল্যাটিন শব্দ Civics থেকে Citizen বা নাগরিক শব্দটির উৎপত্তি হয়। পৌরনীতি পাঠের মূল বিষয়বস্তু হল নাগরিকত্ব ও রাষ্ট্র। সাধারণত নাগরিক শব্দটি দ্বারা নগরে বসবাসরত অধিবাসীকে বোঝায়। যারা শাসনকার্যে সরাসরি জড়িত থাকতেন, তাদেরকে কেবল নাগরিক হিসেবে ধরা হত।
বর্তমানে নগর রাষ্ট্রের স্থলে জাতীয় রাষ্ট্রের উৎপত্তি ঘটেছে। আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ আয়তনে অনেক বড়, জনসংখ্যাও বেশি এবং নাগরিক সুবিধাসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সকলেই ভোগ করে। কিন্তু এত বিপুল জনসমষ্টিকে সরাসরি শাসনকার্যে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের স্থলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং যারা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করেন সেই মাপকাঠি তুলে ধরা হয়েছে। আধুনিক ব্রিটিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড জে. লাস্কি নাগরিকের সংজ্ঞায় বলেছেন, যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে তাকেই নাগরিক বলা হয়।” অধ্যাপক গেটেল বলেন,”নাগরিক হচ্ছে রাজনৈতিক সমাজের সেইসব সদস্য, যারা উক্ত সমাজের প্রতি কর্তব্য পালনে বাধ্য থাকেন এবং সে সমাজ থেকে সকল প্রকার সু্যোগ সুবিধা লাভের অধিকারী হন।”
সুতরাং নাগরিকত্ব বলতে বোঝায়, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে বাধ্য হওয়া। নাগরিক হচ্ছেন তিনি যিনি ঐ রাষ্ট্রে স্থায়িভাবে বসবাস করেন এবং রাষ্ট্রের আইন, সংবিধান এবং অন্যান্য নির্দেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন। রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধনে নিজের কর্মের মাধ্যমে ভূমিকা রাখেন এবং রাষ্ট্র কর্তৃক বন্টনকৃত সকল সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করেন। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সকলেই সমান এবং আধুনিক নাগরিকত্বে সমাজের নারীপুরুষ, সকল ধর্ম, গোত্র সকলেই নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে।
নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য
রাষ্ট্র যেমন নাগরিকদের বিবিধ সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার দিয়ে থাকে তেমনি রাষ্ট্রের প্রতিও নাগরিকদের কতগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। অধিকার ও কর্তব্য পরস্পর নির্ভরশীল ও পরিপূরক। নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য নিচে আলোচনা করা হলঃ
নাগরিকের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের নির্দেশ মেনে চলা। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে সর্বদা সজাগ এবং চরম ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন এবং সংবিধান মেনে চলা এবং আইনের প্রতি সম্মান দেখানো নাগরিকদের অন্যতম দায়িত্ব। কেউ আইন অমান্য করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। স্বাভাবিক জীবনের ব্যাঘাত ঘটে। তাই সুষ্ঠু জীবনযাপন, শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রত্যেক নাগরিককে আইন মেনে চলতে হবে।
সততা ও সুবিবেচনার সাথে ভোট দেওয়া নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। এর ফলে যোগ্য ও উপযুক্ত প্রার্থী জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবে। অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ প্রার্থীকে ভোটদানে বিরত থাকা উচিত।
রাষ্ট্রীয় আয়ের প্রধান উৎস নাগরিকদের প্রদেয় কর ও খাজনা, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক, প্রতিরক্ষা এবং উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। নাগরিকদের যথাসময়ে কর প্রদান করে রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগিতা করতে হবে।
রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা নাগরিকের কর্তব্য। সরকারের গৃহীত কোনো কাজ মানে হলো জনগণের কাজ। সরকারি কর্মকর্তা তদুপরি নাগরিকদের সততা ও কাজে একাগ্রতা ও নিষ্ঠার উপর সরকারের সফলতা, উন্নতি ও অগ্রগতি নির্ভর করে।
প্রতিটি শিশুই রাষ্ট্রের নাগরিক। পিতামাতা তার অভিভাবক হিসেবে কাজ করেন। তাই সন্তানদের জীবনরক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রতিষেধক টীকাদান, সুস্থসবল রাখা এবং নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পাঠানো পিতামাতার দায়িত্ব। এতে করে সন্তান সুশিক্ষিত হয়ে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে এবং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে অবদান রাখবে।
প্রত্যেক নাগরিককেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থাকতে হবে। নিজস্ব সংস্কৃতি, রাষ্ট্রীয় অর্জন ও সফলতা এবং সবসময় দেশের মঙ্গল কামনা করা নাগরিকদের কর্তব্য। জাতীয় সংগীত, জাতীয় ইতিহাস, জাতীয় বীর ও মনীষীদের অবদানকে স্মরণ করতে হবে।
প্রত্যেক নাগরিককে একে অপরকে সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। ভিন্নমতকে মূল্যায়ন করা এবং সম্মান করার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংহতি অর্জন করা সম্ভব। এটা প্রত্যেককেই বিশ্বাস করতে হবে যে বৈচিত্র্যের মধ্যেই সৌন্দর্য নিহিত।
প্রত্যেক নাগরিককেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এমনকি রাষ্ট্রের বেআইনী কোন কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো নাগরিকদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে কোনক্রমেই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। তাহলেই সুশাসন এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে।
রাষ্ট্রের অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ
রাষ্ট্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ও রাষ্ট্রের বসবাসরত জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্র সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেগুলোকে অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ বলা হয়। রাষ্ট্রের অপরিহার্য কাজগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
আর.এম.ম্যাকাইভার তার ‘The Modern State’ গ্রন্থে বলেছেন,”আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক কাজ বা দায়িত্ব।” নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ব্যাক্তিস্বাধীনতা রক্ষার নিশ্চয়তা থেকে রাষ্ট্র নামক সংগঠনের সৃষ্টি হয়। জনসাধারণকে আইন মেনে চলতে বাধ্য করা, আইন ভংগকারীদের শাস্তির বিধান করা এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখা রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে থাকে। রাষ্ট্র আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ ও অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনী গড়ে তোলে। বাংলাদেশে পুলিশ, র্যাব আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা দল ইত্যাদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা আর একটি অপরিহার্য কাজ। দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা রক্ষার জন্য এবং বৈদেশিক আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন ও পরিচালনা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। আধুনিককালে প্রতিটি রাষ্ট্রই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলেছে। স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাষ্ট্রকে পরিচিতি করা, রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডে অবস্থিত সম্পদের ওপর দাবি প্রতিষ্ঠিত করা, অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন, আঞ্চলিক কোর্ট গঠন, বহিঃ বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করা, বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা অ সেবা প্রদান করা ইত্যাদি হচ্ছে রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক অপরিহার্য কাজ।
আইন প্রণয়ন, আইনের শাসন ও ন্যাবিচার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ। রাষ্ট্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইন প্রণীত হয়। দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে জুডিশিয়াল কাউন্সিল, সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট প্রভৃতি বিচারালয়ের মাধ্যমে দেশের সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজের মধ্যে পড়ে।
রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠূভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, তাদের কর্ম বণ্টন ও নির্দেশ, কাজ তদারক এবং পরিচালনা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব।
অর্থ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্র পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহ ও বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের একটি মুখ্য কাজ। রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,মালিকানার উপর খাজনা ও কর নির্ধারণ, আদায় এবং সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা, রাষ্ট্রের বাজেট প্রণয়ন, মুদ্রা প্রবর্তন ও বিনিয়োগ, গণনা ও পরিমাপের একক নির্ধারণ এবং মূল্য নির্ধারণ, অর্থনৈতিক পরিচালনা, মুদ্রাস্ফীতি রোধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এগুলোও রাষ্টের মুখ্য কার্যাবলি।
সুশাসনের জন্য আইনের প্রয়োজনীয়তা
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনের অনুশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রে আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সকল নাগরিক সমানভাবে স্বাধীনতা ও রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা পেতে পারে। কেউ কারও অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে না। সাধারনভাবে আইনের অনুশাসন ২টি ধারণা প্রকাশ করে। যথা- আইনের প্রাধান্য ও আইনের দৃষ্টিতে সকলের সাম্য।
আইনের প্রাধান্য বজায় থাকলে সরকার স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না এবং ক্ষমতা অপব্যবহার করতে সচরাচর সাহস করে না। আইনের প্রাধান্য নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ। সমাজের আইনের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হলে কেউ আইন অমান্য করে অন্যের অধিকারের হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সরকারও কারও ব্যাক্তিস্বাধীনতায় অযৌক্তিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে সাহস পাবে না।
আইনের দৃষ্টিতে সাম্য মানে সমাজে ধনী- দরিদ্র, সবল- দুর্বল, জাতি, ধর্ম সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলেই সমান। আইনের চোখে কেউ বাড়তি সুবিধা পাবে না। সকলের জন্য একই আইন প্রযোজ্য। রাষ্ট্রে ব্যাক্তি স্বাধীনতা তখনই খর্ব হয় যখন আইনের অনুশাসন থাকে না। আইনের অনুশাসনের অভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সচরাচর নাগরিকদের হয়রানি করে, বিনা অপরাধেও আটক করে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি না হলে আইনের শাসন কায়েম হয় না।
ধর্ম
মানুষের ওপর ধর্মের প্রভাব অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ঐশ্বরিক আইন অনুসরণ করে আসছে। তাই ধর্ম, ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মগ্রন্থ আইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ন্যায়- অন্যায় পাপ পূন্য ইত্যাদি মূল্যবোধসমূহ ধর্ম চিহ্নিত করেছে বলে প্রাচীন ও মধ্যযুগে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতিনীতি প্রভাব বিস্তার করে। ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্রে ধর্মীয় বিধানই রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে বিবেচিত হয়। ইসলামিক রাষ্ট্রের আইন প্রধানত কুরআন ও শরিয়ার ওপর নির্ভরশীল। হিন্দু আইনও মূলগতভাবে হিন্দুদের ধর্মীয় বই যেমন- বেদ, গীতা, রামায়ণের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান যুগেও ধর্মীয় রীতিনীতি আইনরূপে গ্রহণ করে রাষ্ট্রীয় আইন প্রবর্তন করা হয়। বিবাহ, উত্তরাধিকার প্রভৃতি বিষয়ে মুসলমান ও হিন্দুরা নিজ নিজ ধর্মীয় আইন মেনে চলে।
জনসমষ্টি
রাষ্ট্রের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে জনসমষ্টি। জনসমস্টি বলতে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনগণকে বোঝায়। রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনসমষ্টি একান্ত অপরিহার্য। জনসমষ্টির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ইচ্ছা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক থেকে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছে। তবে রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনসংখ্যা কত হবে তার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। রাজনৈতিকভাবে রাষ্ট্রের জনসংখ্যা কয়েক কোটি হতে পারে আবার কয়েক হাজারও হতে পারে। যেমন- গণচীন ও ভারতে জনসংখ্যা একশত কোটির উপরে। অন্যদিকে, স্যানম্যারিনো, মোনাকো প্রভৃতি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের জনসংখ্যা যথাক্রমে বিশ হাজার ও চৌদ্দ হাজার।
কল্যাণমূলক কাজ
রাষ্ট্রের বিশাল কর্মবাহিনীকে পরিচালনা করা এবং সুস্থ রাখা রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য শ্রমনীতিমালা প্রণয়ন, ন্যূনতম সঠিক মজুরি নির্ধারণ, কাজের সময় নির্ধারণ, কাজের পরিবেশ সৃষ্টি, বোনাস, ইন্সুরেন্স এবং পেনশন সুবিধা প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য শ্রম অফিসার নিয়োগ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
জনসাধারণের স্বাস্থ্য
জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং সমস্ত বিদ্যমান বিভিন্ন বৈষম্য ও কুপ্রথা দূরীকরণে রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান (বিনামূল্যে ও স্বল্প খরচে), হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয়, শিশুসদন, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, দেশব্যাপী অস্থায়ী হেলথ ক্যাম্পেইন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে। তাছাড়া জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক টিকা প্রদান প্রভৃতি সেবা রাষ্ট্র প্রদান করে। এছাড়া যৌতুক ও বর্ণপ্রথা দূরীকরণ, বাল্যবিবাহ রোধে, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাষ্ট্রের কার্যাবলি
সমাজের অঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্র কী কাজ করে কিংবা কী কাজ করতে পারে তা আমাদের জানা দরকার। অর্থাৎ জনগণের জন্য রাষ্ট্র কী ধরণের সেবা প্রদান করে এবং এর সামর্থ্য কতটুকু এ পাঠ থেকে তা আমরা জানব। আমরা জানি মানুষের প্রয়োজনেই রাষট্র গড়ে উঠেছে। মানব জীবনের সামগ্রিক কল্যাণই রাষ্ট্রের কাজ।বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্র প্রধানত দুই ধরণের ভূমিকা পালন করে।যথাঃ নিয়ন্ত্রণমূলক ও কল্যাণমূলক। এ দুই ধরণের ভূমিকার ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন, অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি এবং কল্যাণ মূলক বা ঐচ্ছিক কার্যাবলি।
আইনসভা
আধুনিক রাষ্ট্রের আইনসভাই আইনের প্রধান। সকল গণতান্ত্রিক রাষ্টেরই আইনসভা বা আইন পরিষদ আছে। এ আইনসভায় দেশের মানুষের স্বার্থকে লক্ষ রেখে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও সংশোধন হয়ে থাকে।
নির্দিষ্ট ভূখন্ড
নিদিষ্ট ভূখন্ড হচ্ছে রাষ্ট্রের অপরিহার্য দ্বিতীয় উপাদান। প্রত্যেক রাষ্ট্রই একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখা দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভূখন্ড বলতে স্থলভাগ, সমুদ্রসীমা, আকাশসীমাও বোঝায়। রাষ্ট্রের জনগণের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের উপর নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক। জনসমষ্টি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে অথবা সাংবিধানিকভাবে নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিটি রাষ্ট্রেই ভূখন্ডের সীমানাকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলে। ভূখন্ডে বিশাল বড় বা ছোট হতে পারে। যেমন- রাশিয়ার বিশাল আয়তন অথবা ছোট আয়তনের রাষ্ট্র হল দারুস সালাম, সুইজারল্যান্ড, ব্রুনাই ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের স্বাধীন যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভূখন্ডটি পৃথিবীর মানচিত্র স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্থান পেয়েছে। অনেক সময় রাষ্ট্রেে নির্দিষ্ট ভূখন্ড বেশ কয়েকটি দ্বীপের সমষ্টি ও হতে পারে। যেমন- জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া।
ন্যায়বোধ
বিচারক যখন প্রচলিত আইনের মাধ্যমে কিংবা উপযুক্ত আইনের অভাবে ন্যায়বিধান করতে ব্যর্থ হয়ে নিজস্ব সামাজিক নীতিবোধের আলোকে ন্যায় রায় প্রদান করেন, তখন তার নীতিবোধের দ্বারা প্রণীত আইন দেশের আইনের পূর্ণ মর্যাদা লাভ করে। তাই ন্যায়নীতি ও ন্যায়পরায়ণতা আইনের একটি প্রকৃষ্ট উৎস।
শিক্ষিত
রাষ্ট্রের জনগণকে শিক্ষিত করে তোলা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শিক্ষিত জনগণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষিত নাগরিক অধিকার, কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন থাকেন এবং দেশপ্রেমে উদ্ভুব্ধ হন। এজন্য রাষ্ট্র শিক্ষা বিস্তারের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করে এবং শিক্ষা সুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন, নারী শিক্ষার উপর গুরত্বসহ বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা করে, নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৭ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড
১. ‘সার্বভৌম’ শব্দ দ্বারা কেমন ক্ষমতাকে বোঝায়?
ক) সামরিক
খ) স্থায়ী
গ) চরম ও চূড়ান্ত
ঘ) অলিক
সঠিক উত্তর: (গ)
২. সার্বভৌম ক্ষমতার কয়টি দিক রয়েছে?
ক) তিনটি
খ) চারটি
গ) দুইটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (গ)
৩. জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কোন আইন প্রণীত হয়?
ক) তথ্য মন্ত্রণালয়
খ) তথ্য অধিকার আইন
গ) তথ্য কমিশন আইন
ঘ) প্রতিলিপি অধিকার আইন
সঠিক উত্তর: (খ)
৪. অনেক সামাজিক প্রথা অমান্য করলে কী ঘটে থাকে?
ক) মানুষের উন্নতি
খ) সামাজিক সমস্যা
গ) সংঘাত ও বিদ্রোহ
ঘ) সমাজের পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (গ)
৫. নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন, নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য ও পুনর্বাসন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রভৃতি কাজগুলো রাষ্ট্রের –
i. অপ্রয়োজনীয় কাজ
ii. উন্নয়নমূলক কাজ
iii. জনহিতকর কাজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)
৬. কিসের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন হয়?
ক) পার্লামেন্ট
খ) আইনমন্ত্রী
গ) প্রধানমন্ত্রী
ঘ) বিলের
সঠিক উত্তর: (ঘ)
৭. কোনটি তথ্য শব্দটির অন্তর্ভুক্ত?
ক) যেকোনো ধরনের রেকর্ড
খ) দাপ্তরিক নোট সিট
গ) নোট সিটের প্রতিলিপি
ঘ) প্রামাণ্য প্রতিলিপি
সঠিক উত্তর: (ক)
৮. বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্র প্রধানত কত ধরনের ভূমিকা পারন করে?
ক) দুই
খ) ছয়
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)
৯. দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব কার?
ক) নাগরিকের
খ) চাকরিজীবীদের
গ) রাষ্ট্রের
ঘ) শিক্ষিতদের
সঠিক উত্তর: (গ)
১০. ‘রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত অধিবাসীদের ওপর বলবৎ হয়’ সংজ্ঞাটি কার?
ক) এরিস্টটল
খ) ম্যাকাইভার
গ) গার্নার
ঘ) গেটেল
সঠিক উত্তর: (খ)
১১. আবেদনকারী আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট আইন মোতাবেক সুবিচার না পেলে কার নিকট অভিযোগ পাঠানো যাবে?
ক) তথ্য মন্ত্রণালয়কে
খ) তথ্য অধিদপ্তরের
গ) তথ্য কমিশনের
ঘ) তথ্য বিভাগীয় কার্যালয়ের
সঠিক উত্তর: (গ)
১২. তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে –
i. প্রান্তিক মানুষের
ii. সুবিধাবঞ্চিত মানুষের
iii. অসুস্থ মানুষের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)
১৩. ‘The Modern State’ গ্রন্থটির লেখক কে?
ক) জন মিল
খ) এরিস্টটল
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) আর এম ম্যাকাইভার
সঠিক উত্তর: (ঘ)
১৪. জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব ব্যতীত রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভূখন্ড হলো –
i. একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ
ii. একটি রাষ্ট্রের জলভাগ
iii. একটি রাষ্ট্রের আকাশসীমা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)
১৫. রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ হচ্ছে –
i. আইন প্রণয়ন
ii. আঞ্চলিক জোট
iii. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)
১৬. আইনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে –
i. মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা
ii. সকলের অধিকার সমভাবে সংরক্ষণ করা
iii. বিধিবিধান মানতে বাধ্য করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)
১৭. রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক অপরিহার্য কাজ হলো –
i. শরণার্থীদের আশ্রয় দান
ii. আঞ্চলিক জোট গঠন
iii. বহির্বিশ্বে অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)
১৮. আধুনিক রাষ্ট্রে আইনের প্রধান উৎস কী?
ক) বিচারকের রায়
খ) ধর্মীয় অনুশাসন
গ) আইনসভা
ঘ) ঐশ্বরিক আইন
সঠিক উত্তর: (গ)
১৯. আইনের সবচেয়ে প্রাচীনতম উৎস কী?
ক) ন্যায়বোধ
খ) আইন
গ) ধর্ম
ঘ) প্রথা
সঠিক উত্তর: (ঘ)
২০. জনসমষ্টি নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর যেভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে –
i. জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে
ii. সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে
iii. সাংবিধানিকভাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)
২১. “আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের এমন কতকগুলো সাধারণ নিয়ম বা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রযুক্ত হয়।” – কে বলেছেন?
ক) হল্যান্ড
খ) উড্রো উইলসন
গ) অস্টিন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (ক)
২২. কোনটি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ?
ক) প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন
খ) আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা
গ) জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা
ঘ) অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা
সঠিক উত্তর: (গ)
২৩. রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কতটি বিভাগ থাকে?
ক) চারটি
খ) তিনটি
গ) সাতটি
ঘ) ছয়টি
সঠিক উত্তর: (খ)
২৪. প্রত্যেক সমাজব্যবস্থায় চূড়ান্ত ক্ষমকা কার্যকরী করার জন্য কী থাকতে হয়?
ক) আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ
খ) স্থায়ী কর্তৃপক্ষ
গ) অস্থায়ী কর্তৃপক্ষ
ঘ) কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ
সঠিক উত্তর: (ঘ)
২৫. সার্বভৌমের আদর্শকে কী বলা হয়?
ক) আইন
খ) নিয়ম
গ) নির্দেশ
ঘ) হুকুম
সঠিক উত্তর: (ক)
২৬. রাষ্ট্রকে মনে করা হতো ঈশ্বরের সৃষ্টি করা একটি প্রতিষ্ঠান –
i. প্রাচীন যুগে
ii. মধ্যযুগে
iii. লৌহযুগে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)
২৭. ১৯৭১ সালের পূর্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করতে পারেনি কোন কারণে?
ক) জনসংখ্যার অভাব ছিল
খ) নির্দিষ্ট ভূখন্ড ছিল না
গ) সার্বভৌমত্ব ছিল না
ঘ) প্রশাসনিক ক্ষমতা ছিল না বলে
সঠিক উত্তর: (গ)
২৮. বাংলাদেশের অনেক রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের জন্য নিম্নলিখিতগুলো অন্যতম। এর কোনটি বাংলাদেশের জন্য ঐচ্ছিক কাজ বলে তুমি মনে কর?
ক) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ
খ) আঞ্চলিক জোট গঠন
গ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন
ঘ) কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন
সঠিক উত্তর: (ক)
২৯. রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক কাজ কী?
ক) অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা
খ) অন্য রাষ্ট্রের সাথে চুক্তি সম্পাদন
গ) নাগরিকদের স্বাস্থ্যরক্ষা করা
ঘ) সরকারি কর্মচারীদের কাজ তদারক
সঠিক উত্তর: (খ)
৩০. রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় কোনটিকে?
ক) সুনির্দিষ্ট জনসংখ্যা নেই যার
খ) কখনো সার্বভৌমত্ব থাকে, কখনো থাকে না যার
গ) নির্দিষ্ট সরকার ব্যবস্থাপনা নেই যার
ঘ) নির্দিষ্ট আয়তনের ভূখন্ড থাকলেও কিছু অংশ অমীমাংসিত যার
সঠিক উত্তর: (ক)
৩১. সুশাসন থাকলে রাষ্ট্রে নাগরিকেরা কী পায়?
ক) আইনের বাধ্যবাধকতা
খ) পরাধীনতা আর গ্লানি
গ) স্বাধীনতা ও রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা
ঘ) অবাধ স্বাধীনতা
সঠিক উত্তর: (গ)
৩২. রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হল্যান্ড আইনের কয়টি উৎসের কথা বলেছেন?
ক) চারটি
খ) পাঁচটি
গ) ছয়টি
ঘ) সাতটি
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৩. মানুষের ওপর কীসের প্রভাব অপরিসীম?
ক) আেইনের
খ) প্রথার
গ) ধর্মের
ঘ) রীতিনীতির
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৪. ২১ বর্গ কি.মি. এলাকা এবং ৯৩০০ জনসংখ্যা নিয়ে নাউরো রাষ্ট্রটি গঠিত। এ রাষ্ট্রটির ক্ষেত্রে কোন দার্শনিকের সংজ্ঞার প্রতিফলন ঘটেছে?
ক) অধ্যাপক বার্জেস
খ) এরিস্টটল
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) গেটেল
সঠিক উত্তর: (খ)
৩৫. ‘রাষ্ট্র হলো বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন একটি জনসমাজ, যারা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে স্থায়িভাবে বসবাস করে; যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের একটি সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।’ – কথাটি কে বলেছেন?
ক) এরিস্টটল
খ) সক্রেটিস
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) আর এম ম্যাকাইভার
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৬. সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের কোন ধরনের উপাদান?
ক) গৌণ
খ) ঐচ্ছিক
গ) মুখ্য
ঘ) অনৈচ্ছিক
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৭. নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ ক?
ক) বিচার বিভাগ
খ) আইনের সাম্য
গ) আইনের প্রাধান্য
ঘ) আইন মন্ত্রণালয়
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৮. আইনের সর্বোৎকৃষ্ট সংজ্ঞা কে দিয়েছেন?
ক) অস্টিন
খ) হল্যান্ড
গ) উড্রো উইলসন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৯. গ্রিক নগররাষ্ট্রে দাস এবং নারীদের কী করা হতো না?
ক) নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হতো না
খ) বিক্রি করা হতো না
গ) অন্য দেশে পাচার করা হতো না
ঘ) খাদ্য প্রদান করা হতো না
সঠিক উত্তর: (ক)
৪০. নাগরিকের দায়িত্ব হলো –
ক) রাস্তায় ট্রাফিক আইন মেনে চলা
খ) অধিক সংখ্যক লোককে শিল্পকারখানায় কাজে লাগানো
গ) দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা
ঘ) রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলা
সঠিক উত্তর: (ক)
৪১. ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে তাকেই নাগরিক বলা হয়’ – উক্তিটি কার?
ক) এরিস্টটলের
খ) লাস্কির
গ) গার্নারের
ঘ) ম্যাকাইভারের
সঠিক উত্তর: (খ)
৪২. ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।’ – কথাটি কে বলেছেন?
ক) এরিস্টটল
খ) প্লেটো
গ) সক্রেটিস
ঘ) ম্যাকিয়াভেলি
সঠিক উত্তর: (ক)
৪৩. রাষ্ট্র মূলত কোন ধরনের সমাজ?
ক) জনসংখ্যাকেন্দ্রিক সমাজ
খ) প্রকৃতিকেন্দ্রিক সমাজ
গ) জীবনযাপনকেন্দ্রিক সমাজ
ঘ) ভূখন্ডভিত্তিক সমাজ
সঠিক উত্তর: (ঘ)
৪৪. রাষ্ট্র যদি জীবদেহ হয় তাহলে সরকার কী?
ক) চোখস্বরূপ
খ) মস্তিষ্কস্বরূপ
গ) হাতস্বরূপ
ঘ) কলিজাস্বরূপ
সঠিক উত্তর: (খ)
৪৫. আইনের অনুশাসন বলতে প্রধান কয়টি ধারনাকে বুঝায়?
ক) দুইটি
খ) তিনটি
গ) চারটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (খ)
৪৬. ‘আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের কতগুলো সাধারণ নিয়ম, যা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রণীত হয়’ – উক্তিটি কার?
ক) টি. এইচ. গ্রীন
খ) হল্যান্ড
গ) উড্রো উইলসন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (খ)
৪৭. একজন নাগরিকের কর্তব্য হলো –
i. রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন
ii. নিয়মিত কর প্রদান
iii. রাষ্ট্রের সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)
৪৮. আইন কী?
ক) মানুষের জীবনের কর্ম
খ) মানবজীবনের শৃঙ্খলিত কর্মকান্ড
গ) মানব রচিত বিধি
ঘ) মানুষের জীবনযাপনের জন্য অনুসরণকৃত লিখিত বিধান
সঠিক উত্তর: (ঘ)
৪৯. এরিস্টটল তার ধারণায় কাদেরকে নাগরিক শ্রেণিভুক্ত করেননি?
ক) নারীদের
খ) অধিকাংশ জনগণকে
গ) দাসীদের
ঘ) শিশুদের
সঠিক উত্তর: (খ)
৫০. ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র’ – উক্তিটি কার?
ক) অধ্যাপক গার্নারের
খ) অধ্যাপক গেটেলের
গ) টি. এইচ. গ্রিনের
ঘ) এরিস্টটলের
সঠিক উত্তর: (ঘ)
PDF File Download From Here
📝 সাইজঃ-285 KB
📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7
Download From Google Drive
Download
Direct Download
Download