Tuesday, April 23, 2024
Home Blog Page 68

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৭: রাষ্ট্র নাগরিকতা ও আইন | সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

এস. এস. সি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৭:রাষ্ট্র,নাগরিকতা ও আইন

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

রাষ্ট্রের ধারণা

প্রত্যেক মানুষই কোন না কোন রাষ্ট্রে বসবাস করে। হঠাৎ করে কোন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয় নি। আদিম মানুষ প্রথমে গোত্রভিত্তিক বসবাস করত। সময়ের পরিবর্তনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ও রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এরিস্টটলের মতে,  “স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সংগঠনে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।” রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত নাগরিকদের উপর বলবৎ হয়।” অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন,’রাষ্ট্র হল বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক সমাজ, যা  বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।‘

সুতরাং আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র হল একটি ভূ-খণ্ডভিত্তিক সমাজ বিশেষ, যার সংগঠিত সরকার ও জনসমষ্টি রয়েছে এবং যার নিজস্ব এলাকার মধ্যে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের উপর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত আছে।

রাষ্ট্রের ধারণা ব্যাখ্যা করলে আমরা চারটি উপাদান দেখতে পাই। যথা, জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। প্রত্যেক রাষ্ট্রই এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়।

 

প্রত্যেক মানুষই কোন না কোন রাষ্ট্রে বসবাস করে। হঠাৎ করে কোন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয় নি। আদিম মানুষ প্রথমে গোত্রভিত্তিক বসবাস করত। সময়ের পরিবর্তনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ও রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এরিস্টটলের মতে,  “স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সংগঠনে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।” রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত নাগরিকদের উপর বলবৎ হয়।” অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন,’রাষ্ট্র হল বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক সমাজ, যা  বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।‘

সুতরাং আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র হল একটি ভূ-খণ্ডভিত্তিক সমাজ বিশেষ, যার সংগঠিত সরকার ও জনসমষ্টি রয়েছে এবং যার নিজস্ব এলাকার মধ্যে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের উপর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত আছে।

রাষ্ট্রের ধারণা ব্যাখ্যা করলে আমরা চারটি উপাদান দেখতে পাই। যথা, জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। প্রত্যেক রাষ্ট্রই এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়।

 

তথ্য অধিকার

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এরই একটি অংশ। বাংলাদেশ সরকার ৫ এপ্রিল,২০০৯ তথ্য অধিকার আইন জারি করে। জনগণের প্রাপ্ত অধিকারকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই আইন প্রণীত হয়। 

পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রেই তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। সাধারণভাবে বলতে গেলে যে কোন ধরনের রেকর্ডই তথ্যের অন্তর্ভুক্ত। তথ্য অধিকার আইন বলতে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো, দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড যে কোন স্মারক, বই, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবহি, আদেশ-বিজ্ঞপ্তি,দলিল,নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনসট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা এদের প্রতিলিপিকে বুঝানো হয়েছে। তবে দাপ্তরিক নোট বা সিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হয়।

বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনে ‘তথ্য কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। তথ্য কমিশনে  একজন প্রধান তথ্য কমিশনারসহ দুইজন তথ্য কমিশনার রয়েছেন।

এই আইনে বলা হয়েছে- প্রত্যেক নাগরিকের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষও একজন নাগরিকের তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকবে। আইন অনুযায়ী সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত বা অধীনস্থ কোন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয় তথ্য প্রদান ইউনিট হিসেবে কাজ করবে।

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার এরই একটি অংশ। বাংলাদেশ সরকার ৫ এপ্রিল,২০০৯ তথ্য অধিকার আইন জারি করে। জনগণের প্রাপ্ত অধিকারকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই আইন প্রণীত হয়। 

পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রেই তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। সাধারণভাবে বলতে গেলে যে কোন ধরনের রেকর্ডই তথ্যের অন্তর্ভুক্ত। তথ্য অধিকার আইন বলতে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো, দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড যে কোন স্মারক, বই, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবহি, আদেশ-বিজ্ঞপ্তি,দলিল,নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনসট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা এদের প্রতিলিপিকে বুঝানো হয়েছে। তবে দাপ্তরিক নোট বা সিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হয়।

বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনে ‘তথ্য কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। তথ্য কমিশনে  একজন প্রধান তথ্য কমিশনারসহ দুইজন তথ্য কমিশনার রয়েছেন।

এই আইনে বলা হয়েছে- প্রত্যেক নাগরিকের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষও একজন নাগরিকের তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকবে। আইন অনুযায়ী সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত বা অধীনস্থ কোন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয় তথ্য প্রদান ইউনিট হিসেবে কাজ করবে।

 

সরকার

রাষ্ট্রের অপরিহার্য তৃতীয় উপাদানটি হল সরকার । সরকার গঠনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠন আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনটি বিভাগ থাকে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সমন্বয়ে সরকার গঠিত হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারণত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের সরকার গঠন করে। সরকার পদ্ধতি বিভিন্ন রাষ্ট্রে বিভিন্ন হতে পারে। সরকার বলতে ব্যাপক অর্থে শাসকগোষ্ঠীর সকলকে বোঝায়, যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে। অর্থাৎ, রাষ্ট্রের ক্ষমতা সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়। অধ্যাপক গার্নারের মতে, “রাষ্ট্র যদি হয় জীবদেহ তবে সরকার হলো এর মস্তিষ্কস্বরূপ।” 

আইনের ধারণা

সাধারণভাবে আইন বলতে সামাজিকভাবে স্বীকৃত লিখিত ও অলিখিত বিধিবিধান ও রীতিনীতিকে বোঝায়। মানুষের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অধিকাংশ মানুষই এ নিয়মকানুনসমূহ মেনে চলে। সুতরাং আইন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন, রীতিনীতি বা বিধিবিধান। সামাজিক জীবনে যেসব গন্ডিবিধি বা রীতিনীতি মানুষ মেনে চলে তা হচ্ছে সামাজিক আইন। আর রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিভিন্ন জাতীয় নীতিমালার প্রেক্ষিতে এবং মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে কিংবা সমাজে সৃষ্টি বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সার্বজনীনভাবে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশই রাষ্ট্রীয় আইন নামে পরিগণিত। বিভিন্ন রাজনৈতিক তত্ত্ববিদ ও আইন বিশারদগণ আইনের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।

টি. এইচ. গ্রিন  বলেন, “রাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত অধিকার এবং বাধ্যবাধকতাসমূহ আইন।” হল্যান্ড বলেন,” আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের কতকগুলো সাধারণ নিয়ম, যা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রণীত হয়।” উড্রো উইলসন বলেন,”আইন হল সমাজের সেই সকল প্রতিষ্ঠিত প্রথা ও রীতিনীতি যেগুলো সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত এবং যা সরকারের অধিকার ও ক্ষমতার দ্বারা বলবৎ করা হয়।”

আইনের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হল্যান্ড আইনের ৬টি উৎসের কথা বলেছেন। এগুলো হলঃ প্রথা, ধর্ম, বিচার সংক্রান্ত রায়, বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা, ন্যায়বোধ ও আইনসভা।

আইনের বৈশিষ্ট্য

আইনের কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। তা নিম্নরূপ- 
১. আইন মানুষের বাহ্যিক আচরণ ও ক্রিয়াকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। 
২. আইন হচ্ছে সার্বজনীন, কেননা তা সমভাবে রাষ্ট্রের সকলের জন্য প্রযোজ্য হয়। 
৩. আইন হচ্ছে এক ধরনের আদেশ বা নিষেধ যা সকলকে মান্য করতে হয় এবং যারা আইন অমান্য করে তাদের সাজা পেতে হয়। 
৪.  আইন রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বমূলক কর্তৃপক্ষ হতে স্বীকৃত এবং আরোপিত। 
৫.  সমাজে প্রচলিত প্রথা ও রীতিনীতি সকলের নিকট মান্য।     

সার্বভৌমত্ব

রাষ্ট্র গঠনের মুখ্য উপাদান সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌমিকতা। সার্বভৌম শব্দ দ্বারা চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতাকে বোঝায়। সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রের গঠন পূর্ণতা পায়। এ ক্ষমতা রাষ্ট্রকে অন্যান্য সংস্থা থেকে পৃথক করে। সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের ঐ বৈশিষ্ট্য যার ফলে নিজের ইচ্ছা ছাড়া অন্যকোনো প্রকার ইচ্ছার দ্বারা রাষ্ট্র আইনসংগতভাবে আবদ্ধ নয়। প্রত্যেক সমাজব্যবস্থায় চূড়ান্ত ক্ষমতা কার্যকরী করার জন্য মাত্র একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ থাকবে। আর এ ক্ষমতাই হলো সার্বভৌম ক্ষমতা। সার্বভৌমের আদর্শই হলো আইন। সার্বভৌমের আদর্শ বা আইন মানতে সকলেই বাধ্য। সার্বভৌম ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দুইটি দিক রয়েছে।  অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যকার সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। এই সার্বভৌম ক্ষমতার উর্ধ্বে কোন কর্তৃপক্ষ নেই। বাহ্যিক সার্বভৌমের অর্থ হল রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকবে। কেবল জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড ও সরকার থাকা সত্ত্বেও একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা না থাকলে তা রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হবে না। যতদিন রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব বিদ্যমান থাকে ততদিন সার্বভৌমত্বের স্থায়িত্ব থাকবে। সরকারের পরিবর্তন সার্বভৌমত্বের স্থায়িত্বকে নষ্ট করে। 

নাগরিকের ধারণা

রাষ্ট্র গঠনের একটি পূর্বশর্ত হল জনসমষ্টি। যখন একটি রাষ্ট্র পূর্ণাঙ্গভাবে আত্মপ্রকাশ করে তখন সেই জনসমষ্টি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রের সঙ্গে এর নাগরিকের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। রাষ্ট্রের নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যজ্ঞানের উপর রাষ্ট্রের কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে। অতএব, নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং কীভাবে সুনাগরিক হওয়া যায় তা আমাদের জানতে হবে।

ল্যাটিন শব্দ Civics থেকে Citizen বা নাগরিক শব্দটির উৎপত্তি হয়। পৌরনীতি পাঠের মূল বিষয়বস্তু হল নাগরিকত্ব ও রাষ্ট্র।  সাধারণত নাগরিক শব্দটি দ্বারা নগরে বসবাসরত অধিবাসীকে বোঝায়। যারা শাসনকার্যে সরাসরি জড়িত থাকতেন, তাদেরকে কেবল নাগরিক হিসেবে ধরা হত। 

বর্তমানে নগর রাষ্ট্রের স্থলে জাতীয় রাষ্ট্রের উৎপত্তি ঘটেছে। আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ আয়তনে অনেক বড়, জনসংখ্যাও বেশি এবং নাগরিক সুবিধাসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সকলেই ভোগ করে। কিন্তু এত বিপুল জনসমষ্টিকে সরাসরি শাসনকার্যে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের স্থলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং যারা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করেন সেই মাপকাঠি তুলে ধরা হয়েছে। আধুনিক ব্রিটিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড জে. লাস্কি নাগরিকের সংজ্ঞায় বলেছেন, যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে তাকেই নাগরিক বলা হয়।” অধ্যাপক গেটেল বলেন,”নাগরিক হচ্ছে রাজনৈতিক সমাজের সেইসব সদস্য, যারা উক্ত সমাজের প্রতি কর্তব্য পালনে বাধ্য থাকেন এবং সে সমাজ থেকে সকল প্রকার সু্যোগ সুবিধা লাভের অধিকারী হন।”

সুতরাং নাগরিকত্ব বলতে বোঝায়, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে বাধ্য হওয়া। নাগরিক হচ্ছেন তিনি যিনি ঐ রাষ্ট্রে স্থায়িভাবে বসবাস করেন এবং রাষ্ট্রের আইন, সংবিধান এবং অন্যান্য নির্দেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন। রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধনে নিজের কর্মের মাধ্যমে ভূমিকা রাখেন এবং রাষ্ট্র কর্তৃক বন্টনকৃত সকল সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করেন। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সকলেই সমান এবং আধুনিক নাগরিকত্বে সমাজের নারীপুরুষ, সকল ধর্ম, গোত্র সকলেই নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে।

নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য

রাষ্ট্র যেমন নাগরিকদের বিবিধ সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার দিয়ে থাকে তেমনি রাষ্ট্রের প্রতিও নাগরিকদের কতগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। অধিকার ও কর্তব্য পরস্পর নির্ভরশীল ও পরিপূরক। নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য নিচে আলোচনা করা হলঃ

নাগরিকের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের নির্দেশ মেনে চলা। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে সর্বদা সজাগ এবং চরম ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন এবং সংবিধান মেনে চলা এবং আইনের প্রতি সম্মান দেখানো নাগরিকদের অন্যতম দায়িত্ব। কেউ আইন অমান্য করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। স্বাভাবিক জীবনের ব্যাঘাত ঘটে। তাই সুষ্ঠু জীবনযাপন, শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রত্যেক নাগরিককে আইন মেনে চলতে হবে।

সততা ও সুবিবেচনার সাথে ভোট দেওয়া নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। এর ফলে যোগ্য ও উপযুক্ত প্রার্থী জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবে। অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ প্রার্থীকে ভোটদানে বিরত থাকা উচিত।

রাষ্ট্রীয় আয়ের প্রধান উৎস নাগরিকদের প্রদেয় কর ও খাজনা, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক, প্রতিরক্ষা এবং উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। নাগরিকদের যথাসময়ে কর প্রদান করে রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগিতা করতে হবে।

রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা নাগরিকের কর্তব্য। সরকারের গৃহীত কোনো কাজ মানে হলো জনগণের কাজ। সরকারি কর্মকর্তা তদুপরি নাগরিকদের সততা ও কাজে একাগ্রতা ও নিষ্ঠার উপর সরকারের সফলতা, উন্নতি ও অগ্রগতি নির্ভর করে।

প্রতিটি শিশুই রাষ্ট্রের নাগরিক। পিতামাতা তার অভিভাবক হিসেবে কাজ করেন। তাই সন্তানদের জীবনরক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রতিষেধক টীকাদান, সুস্থসবল রাখা এবং নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পাঠানো পিতামাতার দায়িত্ব। এতে করে সন্তান সুশিক্ষিত হয়ে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে এবং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে অবদান রাখবে।

প্রত্যেক নাগরিককেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থাকতে হবে। নিজস্ব সংস্কৃতি, রাষ্ট্রীয় অর্জন ও সফলতা এবং সবসময় দেশের মঙ্গল কামনা করা নাগরিকদের কর্তব্য। জাতীয় সংগীত, জাতীয় ইতিহাস, জাতীয় বীর ও মনীষীদের অবদানকে স্মরণ করতে হবে।

প্রত্যেক নাগরিককে একে অপরকে সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। ভিন্নমতকে মূল্যায়ন করা এবং সম্মান করার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংহতি অর্জন করা সম্ভব। এটা প্রত্যেককেই বিশ্বাস করতে হবে যে বৈচিত্র্যের মধ্যেই সৌন্দর্য নিহিত।

প্রত্যেক নাগরিককেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এমনকি রাষ্ট্রের বেআইনী কোন কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো নাগরিকদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে কোনক্রমেই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। তাহলেই সুশাসন এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে।

রাষ্ট্রের অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ

রাষ্ট্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ও রাষ্ট্রের বসবাসরত জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্র সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেগুলোকে অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ বলা হয়। রাষ্ট্রের অপরিহার্য কাজগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

আর.এম.ম্যাকাইভার তার ‘The Modern State’ গ্রন্থে বলেছেন,”আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক কাজ বা দায়িত্ব।” নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ব্যাক্তিস্বাধীনতা রক্ষার নিশ্চয়তা থেকে রাষ্ট্র নামক সংগঠনের সৃষ্টি হয়। জনসাধারণকে আইন মেনে চলতে বাধ্য করা, আইন ভংগকারীদের শাস্তির বিধান করা এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখা রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে থাকে। রাষ্ট্র আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ ও অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনী গড়ে তোলে। বাংলাদেশে পুলিশ, র‍্যাব আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা দল ইত্যাদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা আর একটি অপরিহার্য কাজ। দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা রক্ষার জন্য এবং বৈদেশিক আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন ও পরিচালনা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। আধুনিককালে প্রতিটি রাষ্ট্রই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলেছে। স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। 

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাষ্ট্রকে পরিচিতি করা, রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডে অবস্থিত সম্পদের ওপর দাবি প্রতিষ্ঠিত করা, অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন, আঞ্চলিক কোর্ট গঠন, বহিঃ বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করা, বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা অ সেবা প্রদান করা ইত্যাদি হচ্ছে রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক অপরিহার্য কাজ।

আইন প্রণয়ন, আইনের শাসন ও ন্যাবিচার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ। রাষ্ট্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইন প্রণীত হয়। দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে জুডিশিয়াল কাউন্সিল, সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট প্রভৃতি বিচারালয়ের মাধ্যমে দেশের সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজের মধ্যে পড়ে।

রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠূভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রের  প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, তাদের কর্ম বণ্টন ও নির্দেশ, কাজ তদারক এবং পরিচালনা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব।

অর্থ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্র পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহ ও বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের একটি মুখ্য কাজ। রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,মালিকানার উপর খাজনা ও কর নির্ধারণ, আদায় এবং সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা, রাষ্ট্রের বাজেট প্রণয়ন, মুদ্রা প্রবর্তন ও বিনিয়োগ, গণনা ও পরিমাপের একক নির্ধারণ  এবং মূল্য নির্ধারণ, অর্থনৈতিক পরিচালনা, মুদ্রাস্ফীতি রোধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এগুলোও রাষ্টের মুখ্য কার্যাবলি।

 

সুশাসনের জন্য আইনের প্রয়োজনীয়তা

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনের অনুশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রে আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সকল নাগরিক সমানভাবে স্বাধীনতা ও রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা পেতে পারে। কেউ কারও অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে না। সাধারনভাবে আইনের অনুশাসন ২টি ধারণা প্রকাশ করে।  যথা- আইনের প্রাধান্য ও আইনের দৃষ্টিতে সকলের সাম্য।

আইনের প্রাধান্য বজায় থাকলে সরকার স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না এবং ক্ষমতা অপব্যবহার করতে সচরাচর সাহস করে না। আইনের প্রাধান্য নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ। সমাজের আইনের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হলে কেউ আইন অমান্য করে অন্যের অধিকারের হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সরকারও কারও ব্যাক্তিস্বাধীনতায় অযৌক্তিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে সাহস পাবে না।

আইনের দৃষ্টিতে সাম্য মানে সমাজে ধনী- দরিদ্র, সবল- দুর্বল, জাতি, ধর্ম সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলেই সমান। আইনের চোখে কেউ বাড়তি সুবিধা পাবে না। সকলের জন্য একই আইন প্রযোজ্য। রাষ্ট্রে ব্যাক্তি স্বাধীনতা তখনই খর্ব হয় যখন আইনের অনুশাসন থাকে না। আইনের অনুশাসনের অভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সচরাচর নাগরিকদের হয়রানি করে, বিনা অপরাধেও আটক করে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি না হলে আইনের শাসন কায়েম হয় না। 

ধর্ম

মানুষের ওপর ধর্মের প্রভাব অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ঐশ্বরিক আইন অনুসরণ করে আসছে। তাই ধর্ম, ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মগ্রন্থ আইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ন্যায়- অন্যায় পাপ পূন্য ইত্যাদি মূল্যবোধসমূহ ধর্ম চিহ্নিত করেছে বলে প্রাচীন ও মধ্যযুগে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতিনীতি প্রভাব বিস্তার করে। ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্রে ধর্মীয় বিধানই রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে বিবেচিত হয়। ইসলামিক রাষ্ট্রের আইন প্রধানত কুরআন ও শরিয়ার ওপর নির্ভরশীল। হিন্দু আইনও মূলগতভাবে হিন্দুদের ধর্মীয় বই যেমন- বেদ, গীতা, রামায়ণের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান যুগেও ধর্মীয় রীতিনীতি আইনরূপে গ্রহণ করে রাষ্ট্রীয় আইন প্রবর্তন করা হয়। বিবাহ, উত্তরাধিকার প্রভৃতি বিষয়ে মুসলমান ও হিন্দুরা নিজ নিজ ধর্মীয় আইন মেনে চলে।

জনসমষ্টি

রাষ্ট্রের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে জনসমষ্টি। জনসমস্টি বলতে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনগণকে বোঝায়। রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনসমষ্টি একান্ত অপরিহার্য। জনসমষ্টির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ইচ্ছা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক থেকে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছে। তবে রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনসংখ্যা কত হবে তার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। রাজনৈতিকভাবে রাষ্ট্রের জনসংখ্যা কয়েক কোটি হতে পারে আবার কয়েক হাজারও হতে পারে। যেমন- গণচীন ও ভারতে জনসংখ্যা একশত কোটির উপরে। অন্যদিকে, স্যানম্যারিনো, মোনাকো প্রভৃতি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের জনসংখ্যা যথাক্রমে বিশ হাজার ও চৌদ্দ হাজার। 

কল্যাণমূলক কাজ

রাষ্ট্রের বিশাল কর্মবাহিনীকে পরিচালনা করা এবং সুস্থ রাখা  রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য শ্রমনীতিমালা প্রণয়ন, ন্যূনতম সঠিক মজুরি নির্ধারণ, কাজের সময় নির্ধারণ, কাজের পরিবেশ সৃষ্টি, বোনাস, ইন্সুরেন্স এবং পেনশন সুবিধা প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য শ্রম অফিসার নিয়োগ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

জনসাধারণের স্বাস্থ্য

জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং সমস্ত বিদ্যমান বিভিন্ন বৈষম্য ও কুপ্রথা দূরীকরণে রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান (বিনামূল্যে ও স্বল্প খরচে), হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয়, শিশুসদন, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, দেশব্যাপী অস্থায়ী হেলথ ক্যাম্পেইন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে। তাছাড়া জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক টিকা প্রদান প্রভৃতি সেবা রাষ্ট্র প্রদান করে। এছাড়া যৌতুক ও বর্ণপ্রথা দূরীকরণ, বাল্যবিবাহ রোধে, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

রাষ্ট্রের কার্যাবলি

সমাজের অঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্র কী কাজ করে কিংবা কী কাজ করতে পারে তা আমাদের জানা দরকার। অর্থাৎ জনগণের জন্য রাষ্ট্র কী ধরণের সেবা প্রদান করে এবং এর সামর্থ্য কতটুকু এ পাঠ থেকে তা আমরা জানব। আমরা জানি মানুষের প্রয়োজনেই রাষট্র গড়ে উঠেছে। মানব জীবনের সামগ্রিক কল্যাণই রাষ্ট্রের কাজ।বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্র প্রধানত দুই ধরণের ভূমিকা পালন করে।যথাঃ নিয়ন্ত্রণমূলক ও কল্যাণমূলক। এ দুই ধরণের ভূমিকার ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন, অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি এবং কল্যাণ মূলক বা ঐচ্ছিক কার্যাবলি। 

আইনসভা

আধুনিক রাষ্ট্রের আইনসভাই আইনের প্রধান। সকল গণতান্ত্রিক রাষ্টেরই আইনসভা বা আইন পরিষদ আছে। এ আইনসভায় দেশের মানুষের স্বার্থকে লক্ষ রেখে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও সংশোধন হয়ে থাকে।

নির্দিষ্ট ভূখন্ড

নিদিষ্ট ভূখন্ড হচ্ছে রাষ্ট্রের অপরিহার্য দ্বিতীয় উপাদান। প্রত্যেক রাষ্ট্রই একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখা দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভূখন্ড বলতে স্থলভাগ, সমুদ্রসীমা, আকাশসীমাও বোঝায়। রাষ্ট্রের জনগণের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের উপর নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক। জনসমষ্টি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে অথবা সাংবিধানিকভাবে নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিটি রাষ্ট্রেই ভূখন্ডের  সীমানাকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলে। ভূখন্ডে বিশাল বড় বা ছোট হতে পারে। যেমন- রাশিয়ার বিশাল আয়তন অথবা ছোট আয়তনের রাষ্ট্র হল দারুস সালাম, সুইজারল্যান্ড, ব্রুনাই ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের স্বাধীন যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভূখন্ডটি পৃথিবীর মানচিত্র স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্থান পেয়েছে। অনেক সময় রাষ্ট্রেে নির্দিষ্ট ভূখন্ড বেশ কয়েকটি দ্বীপের সমষ্টি ও হতে পারে। যেমন- জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া। 

ন্যায়বোধ

বিচারক যখন প্রচলিত আইনের মাধ্যমে কিংবা উপযুক্ত আইনের অভাবে ন্যায়বিধান করতে ব্যর্থ হয়ে নিজস্ব সামাজিক নীতিবোধের আলোকে ন্যায় রায় প্রদান করেন, তখন তার নীতিবোধের দ্বারা প্রণীত আইন দেশের আইনের পূর্ণ মর্যাদা লাভ করে। তাই ন্যায়নীতি ও ন্যায়পরায়ণতা আইনের একটি প্রকৃষ্ট উৎস। 

শিক্ষিত

রাষ্ট্রের জনগণকে শিক্ষিত করে তোলা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শিক্ষিত জনগণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষিত নাগরিক অধিকার, কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন থাকেন এবং দেশপ্রেমে উদ্ভুব্ধ হন। এজন্য রাষ্ট্র শিক্ষা বিস্তারের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করে এবং শিক্ষা সুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন, নারী শিক্ষার উপর গুরত্বসহ বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা করে, নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে। 

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৭ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. ‘সার্বভৌম’ শব্দ দ্বারা কেমন ক্ষমতাকে বোঝায়?
ক) সামরিক
খ) স্থায়ী
গ) চরম ও চূড়ান্ত
ঘ) অলিক
সঠিক উত্তর: (গ)

২. সার্বভৌম ক্ষমতার কয়টি দিক রয়েছে?
ক) তিনটি
খ) চারটি
গ) দুইটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (গ)

৩. জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কোন আইন প্রণীত হয়?
ক) তথ্য মন্ত্রণালয়
খ) তথ্য অধিকার আইন
গ) তথ্য কমিশন আইন
ঘ) প্রতিলিপি অধিকার আইন
সঠিক উত্তর: (খ)

৪. অনেক সামাজিক প্রথা অমান্য করলে কী ঘটে থাকে?
ক) মানুষের উন্নতি
খ) সামাজিক সমস্যা
গ) সংঘাত ও বিদ্রোহ
ঘ) সমাজের পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (গ)

৫. নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন, নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য ও পুনর্বাসন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রভৃতি কাজগুলো রাষ্ট্রের –
i. অপ্রয়োজনীয় কাজ
ii. উন্নয়নমূলক কাজ
iii. জনহিতকর কাজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৬. কিসের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন হয়?
ক) পার্লামেন্ট
খ) আইনমন্ত্রী
গ) প্রধানমন্ত্রী
ঘ) বিলের
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৭. কোনটি তথ্য শব্দটির অন্তর্ভুক্ত?
ক) যেকোনো ধরনের রেকর্ড
খ) দাপ্তরিক নোট সিট
গ) নোট সিটের প্রতিলিপি
ঘ) প্রামাণ্য প্রতিলিপি
সঠিক উত্তর: (ক)

৮. বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্র প্রধানত কত ধরনের ভূমিকা পারন করে?
ক) দুই
খ) ছয়
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)

৯. দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব কার?
ক) নাগরিকের
খ) চাকরিজীবীদের
গ) রাষ্ট্রের
ঘ) শিক্ষিতদের
সঠিক উত্তর: (গ)

১০. ‘রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত অধিবাসীদের ওপর বলবৎ হয়’ সংজ্ঞাটি কার?
ক) এরিস্টটল
খ) ম্যাকাইভার
গ) গার্নার
ঘ) গেটেল
সঠিক উত্তর: (খ)

১১. আবেদনকারী আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট আইন মোতাবেক সুবিচার না পেলে কার নিকট অভিযোগ পাঠানো যাবে?
ক) তথ্য মন্ত্রণালয়কে
খ) তথ্য অধিদপ্তরের
গ) তথ্য কমিশনের
ঘ) তথ্য বিভাগীয় কার্যালয়ের
সঠিক উত্তর: (গ)

১২. তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে –
i. প্রান্তিক মানুষের
ii. সুবিধাবঞ্চিত মানুষের
iii. অসুস্থ মানুষের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. ‘The Modern State’ গ্রন্থটির লেখক কে?
ক) জন মিল
খ) এরিস্টটল
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) আর এম ম্যাকাইভার
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৪. জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব ব্যতীত রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভূখন্ড হলো –
i. একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ
ii. একটি রাষ্ট্রের জলভাগ
iii. একটি রাষ্ট্রের আকাশসীমা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৫. রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ হচ্ছে –
i. আইন প্রণয়ন
ii. আঞ্চলিক জোট
iii. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

১৬. আইনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে –
i. মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা
ii. সকলের অধিকার সমভাবে সংরক্ষণ করা
iii. বিধিবিধান মানতে বাধ্য করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৭. রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক অপরিহার্য কাজ হলো –
i. শরণার্থীদের আশ্রয় দান
ii. আঞ্চলিক জোট গঠন
iii. বহির্বিশ্বে অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

১৮. আধুনিক রাষ্ট্রে আইনের প্রধান উৎস কী?
ক) বিচারকের রায়
খ) ধর্মীয় অনুশাসন
গ) আইনসভা
ঘ) ঐশ্বরিক আইন
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. আইনের সবচেয়ে প্রাচীনতম উৎস কী?
ক) ন্যায়বোধ
খ) আইন
গ) ধর্ম
ঘ) প্রথা
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২০. জনসমষ্টি নির্দিষ্ট ভূখন্ডের ওপর যেভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে –
i. জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে
ii. সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে
iii. সাংবিধানিকভাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২১. “আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের এমন কতকগুলো সাধারণ নিয়ম বা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রযুক্ত হয়।” – কে বলেছেন?
ক) হল্যান্ড
খ) উড্রো উইলসন
গ) অস্টিন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. কোনটি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ?
ক) প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন
খ) আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা
গ) জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা
ঘ) অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা
সঠিক উত্তর: (গ)

২৩. রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কতটি বিভাগ থাকে?
ক) চারটি
খ) তিনটি
গ) সাতটি
ঘ) ছয়টি
সঠিক উত্তর: (খ)

২৪. প্রত্যেক সমাজব্যবস্থায় চূড়ান্ত ক্ষমকা কার্যকরী করার জন্য কী থাকতে হয়?
ক) আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ
খ) স্থায়ী কর্তৃপক্ষ
গ) অস্থায়ী কর্তৃপক্ষ
ঘ) কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৫. সার্বভৌমের আদর্শকে কী বলা হয়?
ক) আইন
খ) নিয়ম
গ) নির্দেশ
ঘ) হুকুম
সঠিক উত্তর: (ক)

২৬. রাষ্ট্রকে মনে করা হতো ঈশ্বরের সৃষ্টি করা একটি প্রতিষ্ঠান –
i. প্রাচীন যুগে
ii. মধ্যযুগে
iii. লৌহযুগে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২৭. ১৯৭১ সালের পূর্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করতে পারেনি কোন কারণে?
ক) জনসংখ্যার অভাব ছিল
খ) নির্দিষ্ট ভূখন্ড ছিল না
গ) সার্বভৌমত্ব ছিল না
ঘ) প্রশাসনিক ক্ষমতা ছিল না বলে
সঠিক উত্তর: (গ)

২৮. বাংলাদেশের অনেক রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের জন্য নিম্নলিখিতগুলো অন্যতম। এর কোনটি বাংলাদেশের জন্য ঐচ্ছিক কাজ বলে তুমি মনে কর?
ক) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ
খ) আঞ্চলিক জোট গঠন
গ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন
ঘ) কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন
সঠিক উত্তর: (ক)

২৯. রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক কাজ কী?
ক) অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা
খ) অন্য রাষ্ট্রের সাথে চুক্তি সম্পাদন
গ) নাগরিকদের স্বাস্থ্যরক্ষা করা
ঘ) সরকারি কর্মচারীদের কাজ তদারক
সঠিক উত্তর: (খ)

৩০. রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় কোনটিকে?
ক) সুনির্দিষ্ট জনসংখ্যা নেই যার
খ) কখনো সার্বভৌমত্ব থাকে, কখনো থাকে না যার
গ) নির্দিষ্ট সরকার ব্যবস্থাপনা নেই যার
ঘ) নির্দিষ্ট আয়তনের ভূখন্ড থাকলেও কিছু অংশ অমীমাংসিত যার
সঠিক উত্তর: (ক)

৩১. সুশাসন থাকলে রাষ্ট্রে নাগরিকেরা কী পায়?
ক) আইনের বাধ্যবাধকতা
খ) পরাধীনতা আর গ্লানি
গ) স্বাধীনতা ও রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা
ঘ) অবাধ স্বাধীনতা
সঠিক উত্তর: (গ)

৩২. রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হল্যান্ড আইনের কয়টি উৎসের কথা বলেছেন?
ক) চারটি
খ) পাঁচটি
গ) ছয়টি
ঘ) সাতটি
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৩. মানুষের ওপর কীসের প্রভাব অপরিসীম?
ক) আেইনের
খ) প্রথার
গ) ধর্মের
ঘ) রীতিনীতির
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৪. ২১ বর্গ কি.মি. এলাকা এবং ৯৩০০ জনসংখ্যা নিয়ে নাউরো রাষ্ট্রটি গঠিত। এ রাষ্ট্রটির ক্ষেত্রে কোন দার্শনিকের সংজ্ঞার প্রতিফলন ঘটেছে?
ক) অধ্যাপক বার্জেস
খ) এরিস্টটল
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) গেটেল
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৫. ‘রাষ্ট্র হলো বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন একটি জনসমাজ, যারা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে স্থায়িভাবে বসবাস করে; যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের একটি সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।’ – কথাটি কে বলেছেন?
ক) এরিস্টটল
খ) সক্রেটিস
গ) অধ্যাপক গার্নার
ঘ) আর এম ম্যাকাইভার
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৬. সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের কোন ধরনের উপাদান?
ক) গৌণ
খ) ঐচ্ছিক
গ) মুখ্য
ঘ) অনৈচ্ছিক
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৭. নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ ক?
ক) বিচার বিভাগ
খ) আইনের সাম্য
গ) আইনের প্রাধান্য
ঘ) আইন মন্ত্রণালয়
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৮. আইনের সর্বোৎকৃষ্ট সংজ্ঞা কে দিয়েছেন?
ক) অস্টিন
খ) হল্যান্ড
গ) উড্রো উইলসন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৯. গ্রিক নগররাষ্ট্রে দাস এবং নারীদের কী করা হতো না?
ক) নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হতো না
খ) বিক্রি করা হতো না
গ) অন্য দেশে পাচার করা হতো না
ঘ) খাদ্য প্রদান করা হতো না
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. নাগরিকের দায়িত্ব হলো –
ক) রাস্তায় ট্রাফিক আইন মেনে চলা
খ) অধিক সংখ্যক লোককে শিল্পকারখানায় কাজে লাগানো
গ) দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা
ঘ) রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলা
সঠিক উত্তর: (ক)

৪১. ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে তাকেই নাগরিক বলা হয়’ – উক্তিটি কার?
ক) এরিস্টটলের
খ) লাস্কির
গ) গার্নারের
ঘ) ম্যাকাইভারের
সঠিক উত্তর: (খ)

৪২. ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।’ – কথাটি কে বলেছেন?
ক) এরিস্টটল
খ) প্লেটো
গ) সক্রেটিস
ঘ) ম্যাকিয়াভেলি
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৩. রাষ্ট্র মূলত কোন ধরনের সমাজ?
ক) জনসংখ্যাকেন্দ্রিক সমাজ
খ) প্রকৃতিকেন্দ্রিক সমাজ
গ) জীবনযাপনকেন্দ্রিক সমাজ
ঘ) ভূখন্ডভিত্তিক সমাজ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৪. রাষ্ট্র যদি জীবদেহ হয় তাহলে সরকার কী?
ক) চোখস্বরূপ
খ) মস্তিষ্কস্বরূপ
গ) হাতস্বরূপ
ঘ) কলিজাস্বরূপ
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৫. আইনের অনুশাসন বলতে প্রধান কয়টি ধারনাকে বুঝায়?
ক) দুইটি
খ) তিনটি
গ) চারটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৬. ‘আইন হচ্ছে মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের কতগুলো সাধারণ নিয়ম, যা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রণীত হয়’ – উক্তিটি কার?
ক) টি. এইচ. গ্রীন
খ) হল্যান্ড
গ) উড্রো উইলসন
ঘ) এরিস্টটল
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৭. একজন নাগরিকের কর্তব্য হলো –
i. রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন
ii. নিয়মিত কর প্রদান
iii. রাষ্ট্রের সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৮. আইন কী?
ক) মানুষের জীবনের কর্ম
খ) মানবজীবনের শৃঙ্খলিত কর্মকান্ড
গ) মানব রচিত বিধি
ঘ) মানুষের জীবনযাপনের জন্য অনুসরণকৃত লিখিত বিধান
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৯. এরিস্টটল তার ধারণায় কাদেরকে নাগরিক শ্রেণিভুক্ত করেননি?
ক) নারীদের
খ) অধিকাংশ জনগণকে
গ) দাসীদের
ঘ) শিশুদের
সঠিক উত্তর: (খ)

৫০. ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র’ – উক্তিটি কার?
ক) অধ্যাপক গার্নারের
খ) অধ্যাপক গেটেলের
গ) টি. এইচ. গ্রিনের
ঘ) এরিস্টটলের
সঠিক উত্তর: (ঘ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-285 KB

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৬:বাংলাদেশের নদ-নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ | সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

এস. এস. সি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৬:বাংলাদেশের নদ-নদী ওপ্রাকৃতিকসম্পদ

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

বাংলাদেশের নদ-নদী ও পানি সম্পদ

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ৭০০ টি নদ-নদী রয়েছে। এগুলোর আয়তন দৈর্ঘ্যে ২২১৫৫ কিমি। এ সব নদী আমাদের প্রধান সম্পদ। নদী ছাড়াও বাংলাদেশে ভূমি,বনভূমি, কৃষি জমি, খনিজ পদার্থ সহ বেশ কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদ আহরণ, ব্যবহার বর্ধন ও সংরক্ষণের উপর বাংলাদেশের জনগণের অস্তিত্ব অনেকাংশে নির্ভর করছে। 

 

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ৭০০ টি নদ-নদী রয়েছে। এগুলোর আয়তন দৈর্ঘ্যে ২২১৫৫ কিমি। এ সব নদী আমাদের প্রধান সম্পদ। নদী ছাড়াও বাংলাদেশে ভূমি,বনভূমি, কৃষি জমি, খনিজ পদার্থ সহ বেশ কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদ আহরণ, ব্যবহার বর্ধন ও সংরক্ষণের উপর বাংলাদেশের জনগণের অস্তিত্ব অনেকাংশে নির্ভর করছে। 

প্রাকৃতিক সম্পদ

প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলা হয়। যেমন, মাটি, পানি, বনভূমি, সৌরতাপ, মৎস্য, খনিজ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ।

 

প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলা হয়। যেমন, মাটি, পানি, বনভূমি, সৌরতাপ, মৎস্য, খনিজ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ।

বাংলাদেশের নদ-নদী ও পানি সম্পদ

বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলো হচ্ছে- পদ্মা, ব্রক্ষ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, কর্ণফুলী, তিস্তা, পশুর, সাঙ্গু ইত্যাদি।

পদ্মাঃ পদ্মা নদী ভারতে ও ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহে। উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। গোয়ালন্দের নিকট ব্রক্ষ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে পদ্মা নাম ধারণ করে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালি হয়ে এই নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪১৮৮ বর্গ কিমি। পশ্চিম থেকে পূর্বে নিম্নগঙ্গায় অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভাগীরথী, হুগলী, মাথাভাঙ্গা, ইছামতি, ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, চিত্রা, মধুমতী, আডিয়াল খাঁ। 

মেঘনাঃ মেঘনা নদী সৃষ্টি হয়েছে সিলেট জেলার সুরমা ও কুশিয়ারার মিলিতস্থলে। সুরমা ও কুশিয়ারার উৎপত্তি আসামের বরফ নদী নাগা-মনিপুর অঞ্চলে। সুরমা ও কুশিয়ারা বাংলাদেশের সিলেট জেলায় প্রবেশ করে। সুনামগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জের কাছে কালনী নামে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। এটি ভৈরব বাজার অতিক্রম করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের কাছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যার মিলিত জলধারা মেঘনায় যুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে চাঁদপুরের কাছে পদ্মার সাথে মিলিত হয়ে বিস্তৃত মোহনার সৃষ্টি হয়েছে। মুন, তিতাস, গোমতী, বাউলাই, মেঘনার শাখানদী। 

ক্রান্তীয় পাতাঝরা

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর ও রংপুর জেলা পাতাঝরা অরণ্যের অঞ্চল। এই বনভূমিতে বছরের শীতকালে একবার গাছের পাতা সম্পূর্ণ ঝরে যায়। শাল বা গজারি ছাড়াও কড়ই, বহেরা, হিজন, শিরিষ, হরিতকি, কাঠাঁল, নিম ইত্যাদি গাছ জন্মে। এ বনভূমিতে প্রধানত শালগাছ প্রধান বৃক্ষ তাই এ বনকে শালবন বলা হায়। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে এ বনভূমি মধুপুর ভাওয়াল নামে পরিচিত। দিনাজপুর অঞ্চলে একে বরেন্দ্র ভূমির অঞ্চলও বলা হয়। 

পানি ব্যবস্থাপনা

মানুষসহ জীব জগতের অস্তিত্বের জন্য পানির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ও শিল্পের বিকাশে পানির ব্যবহার অপরিহার্য। বৃষ্টি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও শীত এবং গ্রীষ্মকালে পানির অভাব হলে কৃষি, শিল্প ও জীবনযাপন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। সে কারণে সারা বছর পানির প্রাপ্তি, প্রবাহ ও বন্টন নিশ্চিত করতে এ সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হয়। পরিকল্পিত পাপ্যতা ও ব্যবহারকে পানির ব্যবস্থাপনা বলা হয়।  সাধারণত কঠিন, তরল ও বাষ্পকারে পানি থাকে। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে পানির নিশ্চিত করতে নদনদী, খাল, পুকুর হাওর ও বিলে ভূমিকা পরিকল্পিতভাবে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায়। 

সার

আমাদের দেশে দীর্ঘদিন থেকে কৃষি কাজে অপরিমিতভাবে সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পানি দূষণে মাছ ও কৃষি উৎপাদনের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অপ্রয়োজনে সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করা হলে পানি ও ভূমির গুণাগুণ অক্ষত থাকবে। 

পানি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা

বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এতে মানুষের খাদ্য, পানি ও অন্যান্য নিরাপত্তা বিধান করা বেশ কঠিন। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে চলা খুবই কঠিন হয়ে উঠেছে। দিন দিন এ দেশে ভুমি, পানি, খাদ্য ব্যবস্থাপনা সহ নানা সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও স্বাধীনতার ৪০ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে, খাদ্যোৎপাদন ৩ গুণ বেড়েছে, তাতে দেশে হয়ত বড় ধরণের খাদ্য সংকট নেই।

কৃষিজ সম্পদ

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং নেপাল বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে কৃষিপ্রধান। এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, মাটি, নদ নদী ইত্যাদির উপর নির্ভর করে কৃষকগণ এখানকার কৃষিজ সম্পদ উৎপাদন করে। এই কৃষি উৎপাদনে একটি সুনির্দিষ্ট মাত্রার তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের দরকার হয়। যার কারণে অঞ্চলেভেদে কৃষি উৎপাদনে তারতম্য ঘটে।

বাংলাদেশে করণ

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ও ইউরোপিয়ান প্লেটের সীমানার কাছে অবস্থিত। এ কারণে বাংলদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। ভূমিরূপ ও ভূ-অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত কারণে বাংলাদেশে ভূ-আলোড়নজনিত শক্তি কার্যকর এবং এর ফলে এখানে ভূমিকম্প হয়।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৬ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

 
১. ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভূমিতে বছরের কোন সময় গাছের পাতা সম্পূর্ণ ঝরে যায়?
ক) গ্রীষ্মকালে
খ) শীতকালে
গ) শরৎকালে
ঘ) বসন্তকালে
সঠিক উত্তর: (খ)

 

২. তিস্তা নদীর উৎপত্তি কোথায়?
ক) সিলেটে লুসাই পাহাড়ে
খ) সিলেটের জয়ন্তিয়া সরোবরে
গ) পার্বত্য চট্টগ্রামে
ঘ) সিকিমের পার্বত্য অঞ্চলে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩. কোন সংস্থা যাত্রীবাহী জলযানের ব্যবস্থা করে থাকে?
ক) আই ডব্লিউ টি এ
খ) বি আই ডব্লিউ টি এ
গ) বি আর টি সি
ঘ) বি আর টি এ
সঠিক উত্তর: (ক)

৪. কর্ণফুলী নদীর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
ক) ২৮০
খ) ৩২০
গ) ৩৪০
ঘ) ৩৯০
সঠিক উত্তর: (খ)

৫. পদ্মার উপনদী কোনটি?
ক) কুমার
খ) ভৈরব
গ) মহানন্দা
ঘ) মধুমতী
সঠিক উত্তর: (গ)

৬. বাংলাদেশের প্রথম জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
ক) বাকলিয়া
খ) কাপ্তাই
গ) তালিমাবাদ
ঘ) মহেশখালী
সঠিক উত্তর: (খ)

৭. তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণ কী?
ক) ১৯৯৮ সালের প্রবল বন্যা
খ) ১৯৮৮ সালের প্রবল বন্যা
গ) ১৯৮৭ সালের প্রবল বন্যা
ঘ) ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্প
সঠিক উত্তর: (গ)

৮. কোন নদীটির দুইটি নাম?
ক) মেঘনা
খ) কর্ণফুলী
গ) মাতামুহুরী
ঘ) পদ্মা
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৯. বাংলাদেশে ‘অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হয় কত সালে?
ক) ১৯৬০
খ) ১৯৫৮
গ) ১৯৭২
ঘ) ১৯৭৩
সঠিক উত্তর: (খ)

১০. কুশিয়ারা ও সুরমা নদী আজমিরিগঞ্জের কাছে কী নামে অগ্রসর হয়েছে?
ক) মেঘনা
খ) যমুনা
গ) কালনী
ঘ) আড়িয়াল খাঁ
সঠিক উত্তর: (গ)

১১. কোন শহরটি শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত?
ক) ঢাকা
খ) সিলেট
গ) গাজীপুর
ঘ) নারায়ণগঞ্জ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১২. বাংলাদেশের সকল নদ-নদীর গন্তব্য কোথায়?
ক) কৃষ্ণ সাগরে
খ) আরব সাগরে
গ) বঙ্গোপসাগরে
ঘ) ভারত মহাসাগরে
সঠিক উত্তর: (গ)

১৩. নদী প্রবাহ হারালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে –
i. মানুষ
ii. পশুপাখি
iii. গাছ-তরুলতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৪. কোন মহাদেশের দেশগুলো সহজে প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে?
ক) ইউরোপ
খ) আমেরিকা
গ) এশিয়া
ঘ) আফ্রিকা
সঠিক উত্তর: (গ)

১৫. কোনটি পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ?
ক) বাংলাদেশ
খ) ভারত
গ) চীন
ঘ) মিয়ানমার
সঠিক উত্তর: (ক)

১৬. উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অনুসারে বনাঞ্চলকে কতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
ক) ২
খ) ৩
গ) ৪
ঘ) ৫
সঠিক উত্তর: (খ)

১৭. গজারি বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য হলো –
i. ঋতুভেদে সকল পাতা ঝরে পড়ে
ii. এর পাতাগুলো চিরসবুজ থাকে
iii. এটি লবণাক্ত মাটিতে জন্মায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) i ও iii
ঘ) ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৮. তুলা, চা, ডাল, মরিচের উৎপাদন বেশ ভালো হয় –
i. ভারতে
ii. বাংলাদেশে
iii. মিয়ানমারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. বাংলাদেশে নদীপথের বাণিজ্যকে কত সালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়?
ক) ১৯৬৫
খ) ১৯৭০
গ) ১৯৭২
ঘ) ১৯৭৬
সঠিক উত্তর: (গ)

২০. কোনটির কারণে আমাদের দেশের মৎস্য সম্পদ নষ্ট হতে বাধ্য?
ক) ভূতাত্ত্বিক অবস্থার
খ) জলবায়ুগত অবস্থার
গ) বৃষ্টি শূন্যতার
ঘ) নদীর নাব্যতার
সঠিক উত্তর: (গ)

২১. কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী হচ্ছে – i. কাসালাং ii. হালদা iii. পশুর নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. বাংলাদেশের বেশিরভাগ নদীর উৎস কোন দেশ?
ক) মায়ানমার
খ) নেপাল
গ) ভারত
ঘ) ভুটান
সঠিক উত্তর: (গ)

২৩. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নদ-নদীর প্রভাব অপরিসীম হওয়ার কারণ –
i. নদী পরিবহন ও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম
ii. সেচে, শিল্পে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানির প্রয়োজন হয়
iii. কৃষি, শিল্প ও ব্যবসা নদীর ওপর নির্ভারশীল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৪. মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি স্থল কোথায়?
ক) সাইভার পর্বত
খ) লুসাই পাহাড়
গ) মানস সরোবর
ঘ) গঙ্গোত্রী হিমবাহ
সঠিক উত্তর: (ক)

২৫. তিস্তা নদী বাংলাদেশের কোন অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে?
ক) পঞ্চগড়
খ) ডিমলা
গ) কুমিল্লা
ঘ) বড়লেখা
সঠিক উত্তর: (খ)

২৬. কখন ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারাটি ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতো?
ক) ১৯৮৭ সালের আগে
খ) ১৭৮৭ সালের আগে
গ) ১৮১৭ সালের আগে
ঘ) ১৮৮৭ সালের আগে
সঠিক উত্তর: (খ)

২৭. বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা কতটি?
ক) ৭৩০টি
খ) ৬৫০টি
গ) ৭০০টি
ঘ) ৮০০টি
সঠিক উত্তর: (গ)

২৮. ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের কোন অঞ্চল ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে?
ক) উত্তর-পূর্বাঞ্চল
খ) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল
গ) উত্তর-দক্ষিণাঞ্চল
ঘ) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল
সঠিক উত্তর: (খ)

২৯. কখন মানুষ নদীতীরবর্তী সমতল ভূমিতে বসবাস শুরু করে?
ক) প্রাচীনযুগে
খ) মধ্যযুগে
গ) প্রস্তুর যুগে
ঘ) ব্রোঞ্জযুগে
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. পদ্মা নদীর জন্মস্থান কোথায়?
ক) তিব্বতের মানস সরোবরে
খ) সিলেটের লুসাই পাহাড়ে
গ) মধ্য হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহে
ঘ) আসামে
সঠিক উত্তর: (গ)

৩১. কুশিয়ারা কোথায় কালনীর সাথে মিলিত হয়েছে?
ক) চাঁদপুরে
খ) দৌলতদিয়ায়
গ) সুনামগঞ্জে
ঘ) আজমিরিগঞ্জের কাছে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩২. বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীর নাম কী?
ক) সুরমা
খ) কর্ণফুলী
গ) আত্রাই
ঘ) মাতামুহুরী
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৩. বাংলাদেশে যেসব অঞ্চলে রাবার চাষ শুরু হয়েছে সেগুলো হলো –
i. খাগড়াছড়ি অঞ্চলে
ii. পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে
iii. সিলেট অঞ্চলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৪. যমুনার উপনদী কোনটি?
ক) আত্রাই
খ) ধলেশ্বরী
গ) পুনর্ভবা
ঘ) শীতলক্ষ্যা
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. আসামের নাগা মণিপুর অঞ্চলে কোন নদী অবস্থিত?
ক) নাফ
খ) সাঙ্গু
গ) মাতামুহুরী
ঘ) বরাক
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৬. তিস্তা ব্যারেজটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে –
i. পানি সংরক্ষণে
ii. পানি নিষ্কাশনে
iii. বন্যা প্রতিরোধে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৭. কৃষি ও শিল্পের বিকাশে কোনটির ব্যবহার অপরিহার্য?
ক) গ্যাস
খ) তেল
গ) কীটনাশক
ঘ) পানি
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৮. ব্রহ্মপুত্র নদের জন্ম কোথায়?
ক) সিলেটের লুসাই পাহাড়ে
খ) তিব্বতের মানস সরোবরে
গ) মধ্য হিমবাহের গঙ্গোত্রী হিমবাহে
ঘ) ত্রিপুরায়
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৯. বিশ্বসভ্যতার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো –
i. সব সভ্যতাই নদীর তীরে বসবাস কেন্দ্রিক
ii. ঘন বনজঙ্গলের নিকট বসবাস
iii. মরুভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. মুন্সীগঞ্জের কাছে যে জলধারা মেঘনায় এসে যুক্ত হয়েছে –
i. বুড়িগঙ্গা
ii. ধলেশ্বরী
iii. গোমতী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৪১. বাংলাদেশের কোন জেলা দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে?
ক) পঞ্চগড়
খ) কুড়িগ্রাম
গ) রংপুর
ঘ) লালমনিরহাট
সঠিক উত্তর: (খ)

৪২. খুলনা-বরিশাল নৌপথে কোন নদীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ?
ক) পশুরের
খ) তিস্তার
গ) ব্রহ্মপুত্রের
ঘ) সাঙ্গুর
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৩. ব্রহ্মপুত্রের নতুন ধারাটি দক্ষিণ গোয়ালন্দ পর্যন্ত কী নামে পরিচিত?
ক) গঙ্গা
খ) যমুনা
গ) ধলেশ্বরী
ঘ) কর্ণফুলী
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৪. ‘বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন’ কত সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়?
ক) ১৯৭২
খ) ১৯৭৩
গ) ১৯৭৪
ঘ) ১৯৮০
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৫. মেঘনা নদীর জন্ম কোন জেলায়?
ক) সুনামগঞ্জ
খ) সিলেট
গ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ঘ) মৌলভীবাজার
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৬. পশুর নদীর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
ক) ২০৭
খ) ১৪২
গ) ২১৮
ঘ) ১৮০
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৭. বাংলাদেশে কোন অংশে গরান বনভূমি অবস্থিত?
ক) উত্তর-পূর্বাংশে
খ) উত্তর-পশ্চিমাংশে
গ) দক্ষিণ-পূর্বাংশে
ঘ) দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৮. নদীর পানি কমে গেলে অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে –
i. মাছ ও পশুপাখির
ii. মানুষ ও জীবজন্তুর
iii. গাছপালা ও তরুলতার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৯. কোন নদীর উৎপত্তিস্থল আসামের লুসাই পাহাড়ে?
ক) পদ্মা
খ) মেঘনা
গ) কর্ণফুলী
ঘ) যমুনা
সঠিক উত্তর: (গ)

৫০. মেঘনার উপনদী কোনটি?
ক) বুড়িগঙ্গা
খ) করতোয়া
গ) আত্রাই
ঘ) গোমতী
সঠিক উত্তর: (ঘ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-277 KB

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৫:বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু | সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৫:বাংলাদেশেরভূপ্রকৃতি ওজলবায়ু

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি

বাংলাদেশ পলল গঠিত একটি আর্দ্র অঞ্চল। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ- পূর্বের সামান্য পাহাড়ি অঞ্চল এবং উত্তর- পশ্চিমাংশের সীমিত উঁচুভূমি ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি।দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি বড় নদী গংগা, ব্রক্ষ্মপুত্র এবং মেঘনার অববাহিকায় বাংলাদেশ অবস্থিত। এ দেশের ভূ-প্রকৃতি নিচু ও সমতল।

বাংলাদেশে সামান্য পরিমাণ উচ্চভূমি রয়েছে। ভুপ্রকৃত্র ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ, প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ, সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি।

বাংলাদেশ পলল গঠিত একটি আর্দ্র অঞ্চল। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ- পূর্বের সামান্য পাহাড়ি অঞ্চল এবং উত্তর- পশ্চিমাংশের সীমিত উঁচুভূমি ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি।দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি বড় নদী গংগা, ব্রক্ষ্মপুত্র এবং মেঘনার অববাহিকায় বাংলাদেশ অবস্থিত। এ দেশের ভূ-প্রকৃতি নিচু ও সমতল।

বাংলাদেশে সামান্য পরিমাণ উচ্চভূমি রয়েছে। ভুপ্রকৃত্র ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ, প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ, সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি।

বাংলাদেশের জলবায়ু ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ

জলবায়ু বলতে একটি বৃহৎ অঞ্চলব্যাপী আবহাওয়ার উপাদানগুলোর দৈনন্দিন অবস্থার দীর্ঘ দিনের গড় অবস্থাকে বুঝায়। মানুষের জীবনে জলবায়ুর প্রভাব বহুমুখী ও গুরুত্বপূর্ণ। মৌসুমি জলবায়ুর কারণে এদেশে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছু তারতম্য ঘটে। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে অতিবৃষ্টই, অকালে বন্যা ইত্যাদি দেখা যায়। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে দেখা যায় নানা দূর্যোগ।

জলবায়ু বলতে একটি বৃহৎ অঞ্চলব্যাপী আবহাওয়ার উপাদানগুলোর দৈনন্দিন অবস্থার দীর্ঘ দিনের গড় অবস্থাকে বুঝায়। মানুষের জীবনে জলবায়ুর প্রভাব বহুমুখী ও গুরুত্বপূর্ণ। মৌসুমি জলবায়ুর কারণে এদেশে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছু তারতম্য ঘটে। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে অতিবৃষ্টই, অকালে বন্যা ইত্যাদি দেখা যায়। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে দেখা যায় নানা দূর্যোগ।

বর্ষাকাল

বাংলাদেশে বর্ষাকালে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এ ঋতুতে পর্বতের পাদদেশে  এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে  কোথাও ২০০ সে.মি. এর কম বৃষ্টিপাত হয় না।পাহাড়িয়া অঞ্চলে  ৩৪০  সে.মি. পটুয়াখালীতে ২০০ সে.মি. চট্টগ্রামে ২৫০ সে.মি. রাঙামাটি অঞ্চলে ২৮০ সে.মি. এবং কক্সবাজারে ৩২০ সে.মি. বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।

জনসংখ্যা

জনসংখ্যার দিক  থেকে পৃথিবীতে বাংলাদেশের স্থান নবম। ভূখন্ডের তুলনায় এদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশি । তাছাড়া  জনসংখ্যা  বৃদ্ধির হারও  বেশ।  ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১২৯৩  কোটি জনসংখ্যা  বৃদ্ধির হার ১.৪৮%  এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৮৭৬ জন। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪.৯৭ কোটি এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১০১৫ জন ।

নেপাল

নেপালের জলবায়ুতে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের তারতম্য বিবেচনায় দুটি ঋতু পরিলক্ষিত হয়। তার কারণ জুন হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত  এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এজন্য এ সময়কালকে বর্ষাকাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জুলাই মাসের কাঠমুন্ডুর তাপমাত্রা থাকে ২৪.৪ ডিগ্রি সে.। অন্যদিকে নেপালে নভেম্বর হতে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত  সময় অত্যন্ত শুষ্ক ও বৃষ্টিহীন থাকে ।  এসময়ে  তাপমাত্রা বেশ কম থাকে বলে একে শীতকাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  জানুয়ারিতে কাঠমুন্ডুর তাপমাত্রা থাকে পায় ১০ডিগ্রি সে.। উঁচু পার্বত্য এলাকা হওয়ায় নেপালের কোনো  অংশের তাপমাত্রা অতিরিক্ত  বৃদ্ধি পায় না এবং শীত গ্রীষ্মের তাপমাত্রার পার্থক্যও খুব বেশি হয় না।  নেপালের বার্ষিক গড় পৃষ্টিপাত ১৪৫ সে.মি. যার প্রায় পুরোটাই সংঘটিত হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে।

গ্রীষ্মকাল

বাংলাদেশের উষ্ণতম ঋতু  গ্রীষ্মকাল। মার্চ হতে মে মাস পর্যন্ত  বাংলাদেশে  গ্রীষ্মকাল । এ ঋতুতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি  সে. এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত  হয়ে থাকে । গড়  হিসেবে উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এ সময়  সামুদ্রিক বায়ুর  প্রভাবে  দেশের দক্ষিণ হতে উত্তরদিকে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বেশি থাকে । যেমন- এপ্রিল মাসের গড় তাপমাত্রা কক্সবাজারে ২৭.৬৪ ডিগ্রি সে. নারায়ণগঞ্জে ২৮.৬৬ ডিগ্রি সে. এবং রাজশাহীতে প্রায় ৩০ ডিগ্রি সে. থাকে । গ্রীষ্মকালে সূর্য উত্তর গোলার্ধের কর্কট ক্রান্তি রেখার নিকটবতী হওয়ায় বায়ুর চাপের পরিবর্তন হয় এবং বাংলাদেশের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে । একই সময়ে পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম দিক হতে শুষ্ক ও শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়। এ ঝড়কে কাল বৈশাখী বলা হয়। এছাড়া এপ্রিল ও মে মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ সমূহের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায়শ বিভিন্ন প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত  হয় । ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশ উপকূলে বিশেষত চট্টগ্রাম উপকূলে ব্যাপক সম্পদ ও জীবনহানি ঘটে।

ভূমিকম্প

বাংলাদেশের বড় ভূমিকম্পের বিপর্যয় মোকাবিলার ন্যূনতম প্রস্তুতি নেই। নাজুক তৎপরতার কারণে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেই ঢাকায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। অসহায়ভাবে মৃত্যুর শিকার হতে পারে লাখ লাখ মানুষ। আমরা একটু গুরুত্বের সাথে লক্ষ করলে দেখতে পাব যে, আমাদের দেশে যদি ৩০ থেকে ৩৫ সেকেন্ডের কোণে ভূমিকম্প হয় এবং ভূমিকম্পের যে প্রানহাণী ঘটবে তার চেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটবে উদ্ধার কাজের ব্যর্থতার জন্য।

ভূমিকম্প

বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প বলয়ে অবস্থিত। বাংলাদেশে ভূমিকম্প হয়ে থাকে টেকনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে। ভূস্তরের ভূমিকম্প প্রবণ ইণ্ডিয়ান প্লেট ও মায়ানমার সাব-প্লেটের মাঝখানে বাংলাদেশ অবস্থিত। ভূতাত্তিকদের মতে আসাম থেকে শুরু করে ঢাকার পাগলা পর্যন্ত রয়েছে লিনিয়ামোট। এই লিনিয়ামোট পূর্ব পশ্চিমে আসাম ভাউকি ডেঞ্জার ফল্টের সাথে যুক্ত। এই ডেঞ্জার ফল্ট লাইনে অবস্থান করছে বাংলাদেশের সিলেট জেলা।

মোদক্মুয়াল

রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজারও চট্টগ্রাম  জেলার পূর্বাংশ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তর্গত। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার । বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম তাজিওডং (বিজয়), যার উচ্চতা ১,২৩১ মিটার । একটি বান্দবান জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ  হচ্ছে কিওক্রাডং যার উচ্চতা ১,২৩০ মিটার । এছাড়াও অঞ্চলের আরও দুটি উচ্চতর পাহাড় চূড়া হচ্ছে মোদকমুয়াল (১০০০ মিটার) এবং পিরামিড (৯১৫ মিটার)। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলো বেলে পাহাড় কর্দম ও  শেল পাথর দ্বারা গঠিত।

্ভারত

 জুন হতে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত  ভারতে বর্ষাকাল থাকে। জুন মাসের শেষে (২১জুন) সূর্য কর্কটকান্তি রেখার উপর অবস্থান করায় উত্তর ভারতের উত্তাপের পরিমাণ অত্যন্ত  বৃদ্ধি পায় ।  দক্ষিণে ক্রমশ তাপমাত্রা  কমতে কমতে শেষপর্যন্ত ২৭ ডিগ্রি সে. এর নিচে নেমে যায়।  অতিরিক্ত তাপে উত্তর ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে একটি প্রবল শক্তি সম্পন্ন নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়।  এসময় দক্ষিণ গোলার্ধে বকরীয় উচ্চচাপবলয় হতে দক্ষিণ, পূর্ব আয়ন বায়ু  নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে প্রবেশ না করে পাঞ্জাবের অধিক শক্তিসম্পন্ন নিম্নচাপের টানে সরাসরি পাঞ্জাবের দিকে অগ্রসর হয়। এ বায় সমুদ্রের উত্তর দিয়ে দীর্ঘ অতিক্রম করে বলে প্রচুর জলীয় বাস্প থাকে। হিমালয় ও অন্যান্য উচ্চ পর্বত গাত্রে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় । ফলে ভারতে মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় ৭৫% বৃষ্টিপাত এ ঋতুতে হয়ে থাকে।

ভারত

 অক্টোবর – নভেম্বর দুই মাস ভারতে শরৎ  ও হেমন্তকাল । এ সময় দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দিক পরিবর্তন করে উত্তর – পূর্ব মৌসুমি বায়ুতে পরিণত হতে থাকে বলে ভারতের  কোনো  কোনো  স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত হয়। এসময় পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, উড়িষ্যা ও মেদিনীপুর উপকূলে বৃষ্টিপাত হয়। পশ্চিমবঙ্গে এ ঝড়কে আশ্বিনা ঝড় বলে।  হেমন্তকালের শেষদিকে ভারতের সর্বত্র তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে ।

সমভূমি

বাংলাদেশের প্রায় ৮০% নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। সমতল ভূমির নিচ দিয়ে অসংখ্য নদী প্রবাহিত হওয়ার কারণে বর্ষাকালে বন্যার সৃষ্টি হয়। বছরের পর বছর এভাবে বন্যার পানির সঙ্গে পরিবাহিত পলিমাটি সঞ্চিত হয়ে এ সমভূমি গঠিত হয়েছে। এ প্লাবন সমভূমির আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার। সমগ্র সমভূমির মাটির স্তর খুব গভীর এবং ভূমি খুবই উর্বর। সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমিকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। দেশের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অধিকাংশ জুড়ে এ সমভূমি বিস্তৃত। হিমালয় পর্বত থেকে আনীত পলল দ্বারাই এ অঞ্চল গঠিত। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, পাবনা ও রাজশাহী অঞ্চলের অংশবিশেষ নিয়ে এ অঞ্চল বিস্তৃত।সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার অধিকাংশ এবং কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার পূর্বদিকে সামান্য অংশ নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত। চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অধিকাংশ এবং লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও হবিগঞ্জ জেলার কিছু অংশ জুড়ে এ সমভূমি বিস্তৃত। ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ঢাকা অঞ্চলের অংশবিশেষ নিয়ে ব-দ্বীপ সমভূমি গঠিত। নোয়াখালী ও ফেনী নদীর নিম্নভাগ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীয় সমভূমি। খুলনা ও পটুয়াখালী অঞ্চল এবং বরগুনা জেলার কিয়দংশ নিয়ে স্রোতজ সমভূমি গঠিত। বাংলাদেশের এ অঞ্চলগুলোর মাটি খুব উর্বর বলে কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে তা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

ভূমিকম্পের ফলাফল

ভূমিকম্পের ফলে অসংখ্য চ্যুতি ও ফাটলের সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের ফলে কখনো সমুদ্রতলের অনেক স্থান উপরে ভেসে উঠে। আবার কখনো স্থল্ভাগের অনেক স্থান সমুদ্রতলে ডুবে যায়। অনেক সময় নদীর গতিপথ পরিবর্তিত বা বন্ধ হয়ে যায়। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে পর্বতগাত্র হতে বৃহৎ বরফখণ্ড হঠাৎ নিচে পতিত হয় এবং পর্বতের পাদদেশে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ভূমিকম্পের ধাক্কায় সমুদ্রের পানি তীর থেকে নিচে নেমে যায় এবং পরক্ষণেই ভীষণ গর্জন সহকারে ১৫-২০ মিটার উঁচু হয়ে ঢেউয়ের আকারে উপকূলে এসে আছড়ে পড়ে। এ ধরণের জলোচ্ছ্বাসকে সুনামি বলে। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভুকম্পনের ফলে সৃষ্ট সুনামির আঘাতে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভারত প্রভৃতি দেশে ব্যাপক জান মালের ক্ষতি হয়। ভূমিকম্পের ফলে কখনো উচ্চভূমি সমুদ্রের পানিতে নিমজ্জিত হয়।

্কারণ

বিজ্ঞানীদের মতে পর্বত্মালার ভিত্তিশিলার চ্যুতি বা ফাটল বরাবর আকস্মিক ভূ-আলোড়ণ হলে ভূমিকম্প হয় – এ কথা সত্য। কিন্তু বিজ্ঞানীগণ এটি ছাড়াও আরো বেশ কিছু কারণের ক্থা উল্লেখ করেছেন। যামন আগ্নেয়গিরির লাভা প্রচন্ড শক্তিতে ভূ-অভ্যন্তর থেকে বের হয়ে আশার সময়ও ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।এছাড়া পাশাপাশি অবস্থানরত দুটী প্লেটের একটি অপরটির সীমানা বরাবর তলদেশে ঢুকে পড়ে অথবা আনুভূমিকভাবে আগেপিছে সরে যায়। এ ধরণের সংগতিপূর্ণ পরিবেশে ভূমিকম্প সংগঠিত হয়। তাছাড়া বিজ্ঞানীগণ আরো বলেন, প্লেটসমূহের সংঘর্ষের ফলে ভূত্বকে যে ফাটলের সৃষ্টি হয় তা ভূমিকম্পন ঘটিয়ে থাকে।

লালমাই

কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত লালমাই পাহাড়টি বিস্তৃত। এর আয়তন ৩৪ বর্গকিলোমিটার। এই পাহাড়ের উচ্চতা ২১ মিটার। এ অঞ্চলের মাটির রঙ লালচে এবং মাটি নুড়ি বালি এবং কংকর মিশ্রিত।

শীতকাল

প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে শীতকাল। এ সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে থাকায় বাংলাদেশে  এর রশ্মি তীর্যকভাবে পড়ে এবং উত্তাপের পরিমাণ যথেষ্ট কমে যায়। শীতকালীন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পরিমাণ যথাক্রমে ২৯ ও ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। জানুয়ারি মাস বাংলাদেশের শীতলতম মাস। এ মাসের গড় তাপমাত্রা ১৭.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ সময়ে দক্ষিণে সমুদ্র উপকূল হতে উত্তর দিকে তাপমাত্রা ক্রমশ কম হয়ে থাকে। সমতাপ রেখাগুলো অনেকটা সোজা হয়ে পূর্ব-পশ্চিমে অবস্থান করে। জানুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা চট্টগ্রামে প্রায় ২০ ডিগ্রী, নোয়াখালিতে ১৯.৪, ঢাকায় ১৮.৩, বগুড়ায় ১৭.৭ এবং দিনাজপুরে ১৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

বাঙ্গালদেশে কারণ

ভৌগোলিক অবস্থাগত কারণে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ও ইউরোপিয়ান প্লেটের সীমানার কাছে অবস্থিত। এ কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল। ভূমিরূপ ও ভূ-অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত কারণে বাংলাদেশে ভূ-আলোড়নজনিত শক্তি কার্যকর এবং এর ফলে এখানে ভূমিকম্প হয়।

 মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক কারণে দেশের কিছু অংশ ডেবে যাচ্ছে আবার কিছু অংশ উঠে যাচ্ছে। এভাবে ভু-স্থিতির ফলে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে। পাহাড়িয়া অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণে ফাটলের সৃষ্টি হয়, সেই ফাটল থেকে আবার ফাটল বৃদ্ধি পেলে ভূমিকম্প হয়। ভূমিরূপজনিত কারণে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা দেখা দেয়। পাহাড়কাটাসহ মানবসৃষ্ট কারণে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

টারশিয়ারি

বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ গঠিত। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত থেকে উত্থিত হওয়ার সময় এ সকল পাহাড় গঠিত হয়েছে। এ অঞ্চলের পাহারগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহঃ রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ এ অঞ্চলের অন্তর্গত। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম তাজিওডং (বিজয়), যার উচ্চতা ১২৩১ মিটার। এটি বান্দরবান জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কিওক্রাডং, যার উচ্চতা ১২৩০ মিটার। এ ছাড়া এ অঞ্চলের আরও দুইটি উচ্চতর পাহাড় হচ্ছে মোদকমুয়াল (১০০০ মিটার) এবং পিরামিড (৯১৫ মিটার)। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলো বেলে পাথর, কর্দম ও শেল পাথর দ্বারা গঠিত।

উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহঃ ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উত্তরাংশ, সিলেট জেলার উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশ এবং মৌলভিবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণের পাহাড়গুলো নিয়ে এ অঞ্চলে গঠিত। পাহাড়গুলোর উচ্চতা ২৪৪ মিটারের বেশি নয়। উত্তরের পাহাড়গুলো স্থানীয়ভাবে টিলা নামে পরিচিত। এগুলোর উচ্চতা ৩০ থেকে ৯০ মিটার। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলোর মধ্যে চিকনাগুল, খাসিয়া ও জয়ন্তিয়া প্রধান।

প্লাইস্টোসিন

বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ৮% এলাকা নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত। আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিন কাল বলা হয়। এ সময়ের আন্তঃবরফগলা পানিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়ে এসব চত্ত্বরভূমি গঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহকী তিন ভাগে ভাগ করা যায়- বরেন্দ্রভূমি, মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবন লালমাই পাহাড়। নওগাঁ, রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে বরেন্দ্রভূমি গঠিত। এর আয়তন ৯৩২০ বর্গকিলোমিটার। প্লাবন সমভূমি থেকে এর উচ্চতা ৬ থেকে ১২ মিটার। এ স্থানের মাটি ধূসর ও লাল বর্ণের। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে মধুপুর ও ভাওয়ালের সোপানভূমি গঠিত। এর আয়তন প্রায় ৪,১০৩ বর্গকিলোমিটার। সমভূমি থেকে এর উচ্চতা ৬ থেকে ৩০ মিটার। মাটির রঙ লালচে এবং ধূসর। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত লালমাই পাহাড়টি বিস্তৃত। এর আয়তন ৩৪ বর্গকিলোমিটার। এই পাহাড়ের উচ্চতা ২১ মিটার। এ অঞ্চলের মাটির রঙ লালচে এবং মাটি নুড়ি বালি এবং কংকর মিশ্রিত।

ভারতের শীত

শীতকালে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করায় সমগ্র ভারতে উত্তাপের পরিমাণ যথেষ্ট কমে যায়। ডিসেম্বর হতে ফেরুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতে শীতকাল। এ সময় সমগ্র ভারতের উপর দিয়ে পুর্ব মৌসুমি বায়ু বইতে থাকে। হিমমণ্ডল থেকে নির্গত হওয়ায় এবং স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বায়ু শুষ্ক ও শীতল। হিমালয় পর্বতমালা উত্তর অঞ্চল জুড়ে প্রাচীরের ন্যায় দণ্ডায়মান থাকায় এ শুষ্ক ও শীতল বায়ু সরাসরি ভারতে প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য ভারত শীতের কবল থেকে রক্ষা পায়। শীত ঋতুতে সমগ্র ভারতে আবহাওয়া মোটামুটি শুষ্ক, শীতল ও আরামদায়ক থাকে।

ভারত শরৎ

অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাস ভারতে শরৎ ও হেমন্তকাল।  এ সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুতে পরিণত হতে থাকে বলে ভারতের কোন কোন স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, উড়িষ্যা ও মেদিনীপুর উপকূলে বৃষ্টিপাত হয়। পশ্চিমবঙ্গের এ ঝড়কে আশ্বিনা ঝড় বলে। হেমন্তকালের শেষদিকে ভারতের সর্বত্র তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে।

মায়ানমার

মায়ানমারের জলবায়ু উপমাহাদেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ক্রান্তীয় মৌসুমি ধরণের। এ অঞ্চলের জলবায়ুকে শীত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষা- এ তিনটি আলাদা ঋতুর উপস্থিতি স্পষ্ট।

গ্রীষ্মকালঃ মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত মায়ানমারে গ্রীষ্মকাল। এ সময়ের এ দেশের অধিকাংশ স্থান অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রী সে. এর কাছাকাছি। এ সময় সূর্য উত্তর গোলার্ধে অবস্থান বিধায় মধ্য এশিয়ায় বিরাট নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং এ অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু প্রবাহ শুরু হয়। এ সময় ভামোতে ১৯ ডিগ্রী সে. মান্দালয়ে ৩২ ডিগ্রী এবং ইয়াংগুনে প্রায় ২৭ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা বিরাজ করে।

বর্ষাকালঃ মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মায়ানমারে বর্ষাকাল। এ সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইয়াংগুনে বৃষ্টিপাত শুরু হয় এবং মাসের শেষদিকে এটি সারা দেশে বিস্তার লাভ করে এবং অক্টোবর মাস পর্যন্ত এ বৃষ্টিপাত চলতে থাকে। মায়ানমারেরর বিভিন্ন এলাকায় এ বৃষ্টিপাতের পরিমাণে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ করা যায়। আরাকান ও টেনাসেরিম উপকূলে প্রচুর পরিমাণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ২০০ সেমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, যখন দেশের সর্ব উত্তরের পাহাড়িয়া অঞ্চলেও মাত্র ৮০ সেমি পর্যন্ত বৃষ্টি হয়।

শীতকালঃ এ ঋতুতে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করায় উত্তর গোলার্ধে এশিয়ার মধ্যভাগে এক বিরাট উচ্চ চাপের সৃষ্টি হয়। সেখান হতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের সমুদ্রে অপেক্ষাকৃত অধিক তাপযুক্ত অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তরের এ শীতল বায়ুপ্রভাবের প্রভাবে মায়ানমারের তখন বেশ শীত হওয়ার কথা থাকলেও উত্তরাংশে পার্বত্য অঞ্চলের উপস্থিতির কারণে শৈত্য তত প্রকট আকার ধারণ করে না। এ বায়ুপ্রবাহ মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময়ে উত্তর মায়ানমারে উঁচু পার্বত্য এলাকায় তুষারপাত হয় এবং তাপামাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি চলে যায়।

জলবায়ু

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুজনিত কারণে এদেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থা অধিক মাত্রায় প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় নানা ধরণের পরিবর্তন ঘটেছে। জলবায়ুজনিত ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, নদ-নদীর ভাঙ্গন মানুষের জীবন যাত্রায় পরিবর্তন এনেছে।বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে বিভিন্ন রকম ফসল ও ফল জন্মে। আবার শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্বল্প পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। ফলে ধান, গম,তামাক এবং নানা জাতের ডাল, তৈলবীজ, গোলআলু, পিঁইয়াজ, রসুন, ধনিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের ধরণের শাকসবজি উৎপাদন করা হয়। জলবায়ুর কারণে সৃষ্ট বন্যার পানিবাহিত মাটি কৃষিক্ষেত্রের উর্বরতা বাড়ায়, এতে ফসল অনেক ভালো হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গড় তাপমাত্রা দেশের সর্বত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে আবার বর্ষাকাল দেরিতে আসছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। হিরণ পয়েন্ট, চর ডাঙ্গা ও কক্সবাজার এর উচ্চতা প্রতিবছর গড়ে ৪ মিমি হতে ৬ মিমি পর্যন্ত বেড়েছে।

নদীমাতৃক এদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী মানুষের জীবন-জীবিকা ও উৎপাদন বাঁচিয়ে রাখে।পলি জমে বহু নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদীর ভাঙ্গনে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস্তহারা হয়ে জীবন জীবিকার পথে শহরে পাড়ি জমাচ্ছে। এতে পারিবারিক ভাঙ্গন এবং শিশু, বৃদ্ধ ও নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন এবং পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে অনেক প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে জেলেদের জীবিকা বদলে যাচ্ছে। জীবিকার টানে শহরে পাড়ি জমাচ্ছে।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৫ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. কোন ধরনের মাটি দ্বারা সমতল নদী অববাহিকা অঞ্চল সৃষ্ট?
ক) বালি
খ) কংকর মিশ্রিত
গ) পলি
ঘ) দোআঁশ
সঠিক উত্তর: (গ)

২. লালমাই অঞ্চলের মাটি কেমন?
ক) লালচে
খ) লাল
গ) ধূসর
ঘ) নীলাভ
সঠিক উত্তর: (ক)

৩. নেপালে মূলত কয়টি ঋতু পরিলক্ষিত হয়?
ক) তিনটি
খ) দুটি
গ) চারটি
ঘ) ছয়টি
সঠিক উত্তর: (খ)

৪. বাংলাদেশের মোট বৃষ্টিপাতের কতভাগ বর্ষাকালে হয়ে থাকে?
ক) পাঁচ ভাগের দুই ভাগ
খ) পাঁচ ভাগের তিন ভাগ
গ) পাঁচ ভাগের চার ভাগ
ঘ) পাঁচ ভাগের পাঁচ ভাগ
সঠিক উত্তর: (গ)

৫. মধুপুর ও ভাওয়ারের সোপানভূমির মাটি কেমন?
ক) কালো, ছাই রঙের
খ) সাদা রঙের
গ) নীলাভ রঙের
ঘ) লালচে ও ধূসর
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৬. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহকে কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
ক) দুই
খ) তিন
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)

৭. সিলেটের পাহাড়িয়া অঞ্চলে কী পরিমাণ মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়?
ক) ৩৩৮ সে.মি.
খ) ৩৪০ সে.মি.
গ) ৩৪২ সে.মি.
ঘ) ৩৪৪ সে.মি.
সঠিক উত্তর: (খ)

৮. সাম্প্রতিককারের প্লাবন সমভূমির অন্তর্ভুক্ত –
i. স্রোতজ সমভূমি
ii. চত্বরভূমি
iii. উপকূলীয় সমভূমি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৯. লিনিয়ামোট আসাম থেকে ডাকার কোন স্থাপ পর্যন্ত বিস্তৃত?
ক) নারায়ণগঞ্জ
খ) টঙ্গী
গ) পাগলা
ঘ) ডেমরা
সঠিক উত্তর: (গ)

১০. খুলনা বাংলাদেশের কোন ভূমিকম্প বলয়ে অবস্থিত?
ক) প্রথমটিতে
খ) দ্বিতীয়টিতে
গ) তৃতীয়টিতে
ঘ) চতুর্থটিতে
সঠিক উত্তর: (গ)

১১. বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ মোট ভূমির কত এলাকা নিয়ে গঠিত?
ক) ৫%
খ) ৬%
গ) ৭%
ঘ) ৮%
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১২. ভাওয়ালের সোপানভূমির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো –
i. মাটির রং লালচে
ii. মাটির রং অনেকটা ধূসর
iii. মাটির রং বাদামি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহের গড় উচ্চতা কত?
ক) ৪০০ মিটার
খ) ৬১০ মিটার
গ) ৫৫০ মিটার
ঘ) ৬০০ মিটার
সঠিক উত্তর: (খ)

১৪. নেপালে নভেম্বর হতে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত –
i. অত্যন্ত শুষ্ক থাকে
ii. আর্দ্র থাকে
iii. বৃষ্টিহীন থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

১৫. বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ যেসব এলাকায় অবস্থিত –
i. রাঙ্গামাটি
ii. বান্দরবান
iii. খাগড়াছড়ি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৬. জানুয়ারি মাসে নেপালের কাঠমুন্ডুতে তাপমাত্রা কত থাকে?
ক) ৯ ডিগ্রি সে.
খ) ১০ ডিগ্রি সে.
গ) ১১ ডিগ্রি সে.
ঘ) ১২ ডিগ্রি সে.
সঠিক উত্তর: (খ)

১৭. নেপালে কয়টি ঋতু পরিলক্ষিত হয়?
ক) দুইটি
খ) তিনটি
গ) চারটি
ঘ) ছয়টি
সঠিক উত্তর: (ক)

১৮. আন্তঃবরফগলা পানিতে প্লাবনের সৃষ্টি হলে কোন ধরনের ভূমিরূপ গঠিত হয়?
ক) চত্বরভূমি
খ) প্লাবন সমভূমি
গ) স্রোতজ সমভূমি
ঘ) ব-দ্বীপ সমভূমি
সঠিক উত্তর: (ক)

১৯. বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়?
ক) পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার অববাহিকায়
খ) পদ্মার অববাহিকায়
গ) ঝিলাম ও গঙ্গার অববাহিকায়
ঘ) ইরাবতির অববাহিকায়
সঠিক উত্তর: (ক)

২০. ভূমিকম্প কিরূপ দুর্যোগ?
ক) সাধারণ
খ) স্বাভাবিক
গ) প্রাকৃতিক
ঘ) কৃত্রিম
সঠিক উত্তর: (গ)

২১. বঙ্গোপসাগরে সাধারণত নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় –
i. এপ্রিল মাসে
ii. জানুয়ারি মাসে
iii. মে মাসে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২২. জুলাই মাসে কাঠমুন্ডুর তাপমাত্রা কত?
ক) ১০ ডিগ্রি সে.
খ) ২৪.৪ ডিগ্রি সে.
গ) ২৭.৪ ডিগ্রি সে.
ঘ) ২৮.৪ ডিগ্রি সে.
সঠিক উত্তর: (খ)

২৩. ভারতের মরু অঞ্চলের উত্তাপ কত ডিগ্রি সে. পর্যন্ত দেখা যায়?
ক) ২৩
খ) ২৭
গ) ৪৩
ঘ) ৪৮
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৪. মধুপুর ও ভাওয়ালের সোপান ভূমির অন্তর্ভুক্ত কোন জেলাগুলো?
ক) ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ি
খ) ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ
গ) নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী
ঘ) বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা
সঠিক উত্তর: (খ)

২৫. স্রোতজ সমভূমি বিস্তৃত –
i. খুলনা জেলায়
ii. ফরিদপুর জেলায়
iii. পটুয়াখালী জেলায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২৬. মায়ানমারে বর্ষাকালের ব্যাপ্তি কোন কোন মাসে?
ক) মে-সেপ্টেম্বর
খ) মে-অক্টোবর
গ) জুন-সেপ্টেম্বর
ঘ) জুন-অক্টোবর
সঠিক উত্তর: (খ)

২৭. মায়ানমারের গড় তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে কত ডিগ্রি সে. এ পৌঁছায়?
ক) ১৯
খ) ২৭
Οগ) ২৯
ঘ) ৩২
সঠিক উত্তর: (গ)

২৮. কোন পাহাড়টি উচ্চতায় সবচেয়ে নিচু?
ক) লালমাই
খ) চিকনাগুল
গ) খাসিয়া
ঘ) জয়ন্তিয়া
সঠিক উত্তর: (ক)

২৯. আকস্মিক পদ্ধতিতে ভূপরিবর্তনকারী শক্তির মধ্যে প্রধান –
i. ভূমিধস
ii. আগ্নেয়গিরি
iii. ভূমিকম্প
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৩০. কত সালে বাংলাদেশের ভূমিকম্প বলয় সংবলিত মানচিত্র তৈরি করা হযেছে?
ক) ১৯৮০
খ) ১৯৮৫
গ) ১৯৮৯
ঘ) ১৯৯৫
সঠিক উত্তর: (গ)

৩১. কোনগুলো দক্ষিণ এশিয়ার নদী?
ক) মারে ডার্লিং, ইয়াংসিকিয়াং
খ) টেমস, হোয়াংহো
গ) পদ্মা, ইরাবতি
ঘ) পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩২. বাংলাদেশে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক সময় কী সৃষ্টি হয়?
ক) অতিবৃষ্টি ও ঝড়
খ) অতিবৃষ্টি ও অকাল বন্যা
গ) অনাবৃষ্টি ও দুর্যোগ
ঘ) বন্যা ও সুনামি
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৩. মায়ানমারে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু শীতকালে কোন দিকে প্রবাহিত হয়?
ক) দক্ষিণ-পূর্ব
খ) দক্ষিণ-পশ্চিম
গ) উত্তর-পূর্ব
ঘ) উত্তর-পশ্চিম
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৪. গ্রীষ্মকালে মায়ানমারে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় কেন?
ক) এ সময় সূর্য উত্তর গোলার্ধে অবস্থান করে
খ) এ সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে
গ) এ সময় মায়ানমারে সূর্যের উত্তাপ কমে যায়
ঘ) এ সময় মায়ানমারের প্রাকৃতিক পরিবর্তন হয়
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. ভারতের ওপর দিয়ে শীতকালে কোন মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়?
ক) পূর্ব মৌসুমি
খ) পশ্চিম মৌসুমি
গ) উত্তর মৌসুমি
ঘ) দক্ষিণ মৌসুমি
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৬. বাংলাদেশের কোন জেলা ভূমিকম্পের ডেঞ্জার ফন্ট লাইনে অবস্থান করছে?
ক) ঢাকা
খ) চট্টগ্রাম
গ) রংপুর
ঘ) সিলেট
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৭. বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত এবং বর্ষাকাল দেরিতে আসার কারণ কী?
ক) আবহাওয়ার পরিবর্তন
খ) পরিবেশের পরিবর্তন
গ) বনভূমি ধ্বংস
ঘ) জলবায়ু পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৮. জুন মাসের শেষে অতিরিক্ত তাপ ভারতের কোন এলাকায় প্রবল শক্তিসম্পন্ন নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি করে?
ক) পশ্চিমবঙ্গে
খ) উড়িষ্যায়
গ) মেদিনীপুরে
ঘ) পাঞ্জাবে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৯. ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত?
ক) ১.৩৭
খ) ১.৩৮
গ) ১.৪২
ঘ) ১.৪৮
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?
ক) লালমাই
খ) মোদকমুয়াল
গ) তাজিনডং
ঘ) কিওক্রাডং
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪১. বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত ভূমিকম্পের কয়টি কারণ চিহ্নিত করেছেন?
ক) একটি
খ) দুইটি
গ) তিনটি
ঘ) চারটি
সঠিক উত্তর: (খ)

৪২. গ্রীষ্মকালে মায়ানমারের কোথায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়?
ক) ইয়াঙ্গুনে
খ) মান্দালয়ে
গ) ভামোতে
ঘ) টেনাসেরিমে
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৩. বাংলাদেশে কোন ভূমিকম্প বলয়কে লঘু বলে বর্ণনা করা হয়েছে?
ক) প্রথম
খ) দ্বিতীয়
গ) তৃতীয়
ঘ) চতুর্থ
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৪. বর্ষাকালের সময় কোন কোন মাসে খুব বেশি গরম পড়ে?
ক) মে ও জুলাই
খ) এপ্রিল ও আগস্ট
গ) জুন ও সেপ্টেম্বর
ঘ) মে ও অক্টোবর
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৫. বাংলাদেশে শীতকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত হয়?
ক) ২৮ ডিগ্রি সে.
খ) ২৯ ডিগ্রি সে.
গ) ৩০ ডিগ্রি সে.
ঘ) ৩১ ডিগ্রি সে.
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৬. ভারতের জলবায়ুকে কয়টি ঋতুতে ভাগ করা হয়েছে?
ক) দুইটি
খ) তিনটি
গ) চারটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৭. আসাদ কলকাতা যেতে চাইল। বাংলাদেশের কোন সীমান্ত এলাকা এর জন্য সুবিধাজনক?
ক) পশ্চিম দিক দিয়ে
খ) দক্ষিণ দিক দিয়ে
গ) পূর্ব দিক দিয়ে
ঘ) উত্তর দিক দিযে
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৮. বাংলাদেশের কত ভাগ ভূমি নদীবিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি?
ক) ৭০%
খ) ৭৫%
গ) ৮০%
ঘ) ৮৫%
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৯. জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে –
i. মানুষের পেশাগত পরিবর্তন ঘটছে
ii. সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে
iii. বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বিপন্ন হচ্ছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫০. বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশের কোন দিকে অবস্থিত?
ক) দক্ষিণ
খ) পূর্ব
গ) দক্ষিণ-পশ্চিম
ঘ) দক্ষিণ-পূর্ব
সঠিক উত্তর: (ক)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-305 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৪: সৌরজগৎ ও ভূমন্ডল | সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৪: সৌরজগৎ ও ভূমন্ডল

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

সৌরজগৎ

সূর্য এবং এর গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহানুপুঞ্জ, ধূমকেতু, উল্কা নিয়ে সূর্যের যে পরিবার তাকে বলে সৌরজগৎ। সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র হল সূর্য। সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ, ৪৯ টি উপগ্রহ, হাজার হাজার গ্রহাণুপুঞ্জ এবং লক্ষ লক্ষ ধূমকেতু রয়েছে।

সৌরজগতের সকল গ্রহ ও উপগ্রহের নিয়ামক হল সূর্য। গ্রহ ও উপগ্রহসমূহ সূর্য এবং নিজেদের পারস্পরিক মহাকর্ষণ শক্তির দ্বারা আকৃষ্ট হোয়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে।

 

সূর্য এবং এর গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহানুপুঞ্জ, ধূমকেতু, উল্কা নিয়ে সূর্যের যে পরিবার তাকে বলে সৌরজগৎ। সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র হল সূর্য। সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ, ৪৯ টি উপগ্রহ, হাজার হাজার গ্রহাণুপুঞ্জ এবং লক্ষ লক্ষ ধূমকেতু রয়েছে।

সৌরজগতের সকল গ্রহ ও উপগ্রহের নিয়ামক হল সূর্য। গ্রহ ও উপগ্রহসমূহ সূর্য এবং নিজেদের পারস্পরিক মহাকর্ষণ শক্তির দ্বারা আকৃষ্ট হোয়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সময় নির্ণয় পদ্ধতি

পৃথিবীর মানচিত্রে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য পূর্ব-পশ্চিমে এবং উত্তর-দক্ষিণে কতকগুলো কাল্পনিক রেখা অঙ্কন করা হয়। এগুলোকে যথাক্রমে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখা বলে। কোনো স্থানের অবস্থান অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে জানা যায়। দ্রাঘিমার অবস্থান থেকে কোনো স্থানের সময় জানা যায়। অক্ষরেখার সাহায্যে যেমন নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থান জানা যায়, তেমনি মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে অবস্থান জানার জন্য মধ্যরেখা বা দ্রাঘিমারেখা ব্যবহার করা হয়। ভূপৃষ্ঠকে সমতল মনে হলেও পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে অভিগত গোলক। তাই পৃথিবী গোলাকার বলে মূল মধ্যরেখা থেকে দূরত্ব কৌণিক মাপে প্রকাশ করা সুবিধাজনক।

 

পৃথিবীর মানচিত্রে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য পূর্ব-পশ্চিমে এবং উত্তর-দক্ষিণে কতকগুলো কাল্পনিক রেখা অঙ্কন করা হয়। এগুলোকে যথাক্রমে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখা বলে। কোনো স্থানের অবস্থান অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে জানা যায়। দ্রাঘিমার অবস্থান থেকে কোনো স্থানের সময় জানা যায়। অক্ষরেখার সাহায্যে যেমন নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থান জানা যায়, তেমনি মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে অবস্থান জানার জন্য মধ্যরেখা বা দ্রাঘিমারেখা ব্যবহার করা হয়। ভূপৃষ্ঠকে সমতল মনে হলেও পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে অভিগত গোলক। তাই পৃথিবী গোলাকার বলে মূল মধ্যরেখা থেকে দূরত্ব কৌণিক মাপে প্রকাশ করা সুবিধাজনক।

পৃথিবীর গতি

আমরা লক্ষ করেছি যে, প্রতিদিন সূর্য পূর্বদিকে উঠে এবং পশ্চিমে অস্ত যায়। কিন্তু আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি কেন এমনটা হয়? এর কারণ পৃথিবী গতিশীল। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সূর্যকে সম্মুখে রেখে পৃথিবী নিজ অক্ষে আবর্তন ও নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে। এটিই পৃথিবীর গতি। পৃথিবীর গতি দুই প্রকার- আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি।

 

আমরা লক্ষ করেছি যে, প্রতিদিন সূর্য পূর্বদিকে উঠে এবং পশ্চিমে অস্ত যায়। কিন্তু আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি কেন এমনটা হয়? এর কারণ পৃথিবী গতিশীল। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সূর্যকে সম্মুখে রেখে পৃথিবী নিজ অক্ষে আবর্তন ও নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে। এটিই পৃথিবীর গতি। পৃথিবীর গতি দুই প্রকার- আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি।

জোয়ার-ভাটা

পৃথিবীর বিভিন্ন সাগর মহাসাগরে সমুদ্রস্রোত ছাড়াও পানিরাশির নিজস্ব গতি আছে। এর ফলে প্রতিদিনই কিছু সময় সমুদ্রের পানি ফুলে উঠে, (উচ্চতা বৃদ্ধি পায়) আবার কিছু সময়ের জন্য তা থেমে যায়। সমুদ্রের পানি এভাবে নিয়মিতভাবে ফুলে উঠাকে জোয়ার এবং নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। পৃথিবীর নিজের গতি এবং তার উপর চন্দ্র ও সূর্যের প্রভাবেই মূলত জোয়ার ভাটা সংগঠিত হয়। জোয়ার ভাটার নানা শ্রেণি রয়েছে, তাছাড়া পৃথিবীর উপরও জোয়ার ভাটা নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

পৃথিবীর বিভিন্ন সাগর মহাসাগরে সমুদ্রস্রোত ছাড়াও পানিরাশির নিজস্ব গতি আছে। এর ফলে প্রতিদিনই কিছু সময় সমুদ্রের পানি ফুলে উঠে, (উচ্চতা বৃদ্ধি পায়) আবার কিছু সময়ের জন্য তা থেমে যায়। সমুদ্রের পানি এভাবে নিয়মিতভাবে ফুলে উঠাকে জোয়ার এবং নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। পৃথিবীর নিজের গতি এবং তার উপর চন্দ্র ও সূর্যের প্রভাবেই মূলত জোয়ার ভাটা সংগঠিত হয়। জোয়ার ভাটার নানা শ্রেণি রয়েছে, তাছাড়া পৃথিবীর উপরও জোয়ার ভাটা নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

বুধ

বুধ সৌরজগতের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ। এর ব্যাস ৪৮৫০ কিলোমিটার এবং ওজন পৃথিবীর ৫০ ভাগের ৩ ভাগের সমান। সূর্যের চারদিক পরিক্রমণ করতে এর ৮৮ দিন সময় লাগে। সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব ৫.৮ কিলোমিটার । বুধের কোনো  উপগ্রহ নেই । সূর্যের নিকটতম গ্রহ বলে এর তাপমাত্রা অত্যাধিক ।

কেন্দ্রমন্ডল

গুরুমন্ডলের নিম্নভাগ থেকে পৃথিবীর  কেন্দ্র  পর্যন্ত  বিস্তৃত স্তরকে কেন্দ্রমন্ডল বলে।  এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমন্ডল পৃথিবীর মোট আয়তনের পায় ১৬ ভাগ এবং এর ওজনের পায় এক তৃতীয়াংশ । এ স্তরের চাপ পৃথিবীপৃষ্ঠের বায়ুচাপের চেয়ে কয়েক লক্ষ গুণ বেশি এবং তাপমাত্রা প্রায় ৩০০০ থেকে ৫০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভূকম্পন তরঙ্গের সাহায্যে জানা যায় যে, কেন্দ্রমন্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ আছে যা ১,২১৬ কিলোমিটার  পুরু।  বৈজ্ঞানিকদের মতে, এ স্তরটি  লৌহ,  নিকেল, পারদ, সিসা প্রভৃতি পদার্থ দিয়ে গঠিত। তবে প্রধান দুটি উপাদান নিকেল (Ni) এবং লোহা (Fe) বেশি থাকায় এ স্তরটি নিফে (NiFe) নামে পরিচিত। ধারণা করা হয় যে,  প্রচন্ড তাপ ও চাপে এ স্তরটি  স্থিতিস্থাপক ও চটচটে অবস্থায় রয়েছে।

ভূত্বক

পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার সময় বাষ্পীয় অবস্থায় ছিল।  কোটি কোটি বছরের ঘূর্ণনের মধ্যদিয়ে তাপ বিকিরণ করতে করতে পৃথিবীর শীতল ও ঘনীভূত হতে বহু বছর লেগেছে। এভাবে পৃথিবীর উপরিভাগে কঠিন আবরণের সৃষ্টি হয় । আর এ কঠিন আবরণই ভূত্বক। পৃথিবীর উপরিভাগ কঠিন হলেও অভ্যন্তরভাগ উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায়  রয়েছে । উত্তপ্ত  পদার্থ শীতল হলে সংকুচিত হয়ে যায়। ক্রমাগত সংকুচিত হওয়ার ফলে পাতলা আবরণের উপরিভাগ কুচকে উুঁচ -নিচু  বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়েছে । ভূপৃষ্ঠের অবনমিত অংশে সাগর ও মহাসাগরের সৃষ্টি হয়েছে।  আর পানির উপরের অংশ হয় মহাদেশ।

সূর্য

সৌরজগতের সকল গ্রহ ও উপগ্রহের নিয়ামক হল সূর্য। সূর্য একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। পৃথিবীর সঙ্গে সূর্যের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সূর্য পৃথিবী অপেক্ষা প্রায় ১৩ লক্ষ গুণ বড়। পৃথিবী থেকে সূর্য প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর ব্যাস প্রায় ১৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। সূর্যের উপরিভাগের উষ্ণতা ৫৭০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বিরাট দূরত্বের জন্য সূর্যের অতি সামান্য তাপ পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। সূর্যের কোন কঠিন বা তরল পদার্থ নেই। শতকরা ৫৫ ভাগ হাইড্রোজেন, শতকরা ৪৪ ভাগ হিলিয়াম এবং ১ ভাগ অন্যান্য গ্যাসে সূর্য গঠিত। সূর্যের মধ্যে মাঝে মাঝে যে কালো দাগ দেখা যায় তাকে সৌরকলঙ্ক বলে।সূর্যের অন্যান্য অংশের চেয়ে সৌরকলঙ্কের উত্তাপ কিছুটা কম। আণবিক শক্তি সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় সূর্যে অনবরত হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম এবং হিলিয়াম থেকে শক্তি তৈরি হচ্ছে। সূর্য প্রায় ২৫ দিনে নিজ অক্ষের উপর একবার আবর্তন করে এবং বৃহৎ বৃত্তাকার পথে প্রায় ২০ কোটি বছরের ব্যবধানে আপন গ্যালাক্সির চারদিকে পরিক্রমণ করে।

শুক্র

সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে শুক্রের অবস্থান দ্বিতীয় এবং এটি পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ। সূর্য থেকে শুক্র গ্রহের দূরত্ব ১০.৮ কোটি কিলোমিটার এবং পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪.৩ কোটি কিলোমিটার। শুক্র গ্রহটিকে সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে আমরা সন্ধ্যাতারা রূপে এবং ভোরে পূর্ব আকাশে শুকতারা রূপে দেখতে পাই। সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে এর সময় লাগে ২২৫ দিন। শুক্রের কোন উপগ্রহ নেই। পৃথিবীর মত শুক্রের একটি বায়ুমণ্ডল রয়েছে কিন্তু এতে অক্সিজেন নেই। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ প্রায় শতকরা ৯৬ ভাগ। শুক্র নিজ অক্ষে খুবই ধীর গতিতে আবর্তন করে। ফলে শুক্রের আকাশে বছরে দুইবার সূর্য উদিত হয় এবং অস্ত যায়। গ্রহটিতে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘন মেঘের কারণে এসিড বৃষ্টি হয়ে থাকে। শুক্রের পৃষ্ঠে পৃথিবীর তুলনায় ৯০ গুণ বেশি বাতাসের চাপ রয়েছে।

পৃথিবী

পৃথিবী সূর্যের তৃতীয় নিকটতম গ্রহ। পৃথিবীর আয়তন ৫১০,১০০,৪২২ বর্গ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে এর ব্যাস ১২,৭৫২ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে ১২,৭০৯ কিলোমিটার। সূর্য থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্ব ১৫ কোটি কিমি। পৃথিবী ৩৬৫ দিন ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেণ্ডে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এ গ্রহে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন রয়েছে। পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ১৩.৯০° সেলসিয়াস। ভূ ত্বকে প্রয়োজনীয় পানি রয়েছে। গ্রহগুলোর মধ্যে একমাত্র পৃথিবীই বসবাসের জন্য উপযোগী। চন্দ্র পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। পৃথিবী থেকে চন্দ্রের দূরত্ব ৩৮১৫০০ কিলোমিটার। এটি ২৯ দিন ১২ ঘণ্টায় পৃথিবীকে একবার পরিক্রমণ করে।

মঙ্গল

সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে পৃথিবীর পরই মঙ্গলের অবস্থান। সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব ২২.৮ কোটি কিলোমিটার এবং পৃথিবী থেকে ৭.৮ কোটি কিলোমিটার। মঙ্গল গ্রহের ব্যাস ৬৭৮৭ কিমি এবং ওজন পৃথিবীর প্রায় ১০ ভাগের ১ ভাগ। সূর্যকে পরিক্রমণ করতে মঙ্গলে গ্রহের লাগে ৬৮৭ দিন এবং নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। মঙ্গলের ২ টি উপগ্রহ আছে। ডিমোস ও ফেবোস। এখানে জীবন ধারণ অসম্ভব। বায়ুমণ্ডলের শতকরা ৩ ভাগ নাইট্রোজেন ও ২ ভাগ আরগন গ্যাস আছে। পানির পরিমাণ খুবই কম। পৃথিবীর তুলনায় অনেক ঠাণ্ডা, গড় উত্তাপ হিমাঙ্কের অনেক নিচে। মঙ্গল গ্রহের উপরিভাগে গিরিখাত ও আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এ গ্রহের পাথরগুলোতে মরচে ধরেছে, ফলে গ্রহটি লালচে বর্ণ ধারণ করেছে।

বৃহস্পতি

সৌরজগতের সর্ব্বৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতি। সূর্য থেকে দূরত্বের ভিত্তিতে এটি পঞ্চম স্থানে। এর আয়তন পৃথিবী প্রায় ১৩০০ গুণ। এর ব্যাস ১৪২৮০০ কিলোমিটার। এটি সূর্য থেকে ৭৭.৮ কোটি কিমি দূরে অবস্থিত। বৃহস্পতি ১২ বছরে একবার সূর্যকে এবং ৯ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটে নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করে। এই গ্রহটিতে পৃথিবীর একদিনে দুইবার সূর্য উঠে এবং দুইবার সূর্য অস্ত যায়। এ গ্রহে গভীর বায়ুমণ্ডল রয়েছে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগের তাপমাত্রা খুবই কম এবং অভ্যন্তরের তাপমাত্রা অধিক। এর ১৬ টি উপগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে লো, ইউরোপা, গ্যানিমেড ও ক্যালিস্টো প্রধান।

শনি

শনি সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে শনির দূরত্ব ১৪৩ কোটি কিলোমিটার। শনি ২৯ বছর ৫ মাসে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে এবং ১০ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করে। শনি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ গুণ বড় এবং খালি চোখে এটি দেখা যায়। শনির বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মিশ্রণ, মিথেন ও অ্যামোনিয়া গ্যাস রয়েছে। তিনটি উজ্জ্বল বলয় শনিকে বেষ্টন করে আছে। শনির ২২ টি উপগ্রহের মধ্যে ক্যাপিটাস, টেথিস, হুয়া, টাইটান ইত্যাদি প্রধান।

ইউরেনাস

ইউরেনাস তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে এর দূরত্ব ২৮৭ কোটি কিমি। ৮৪ বছরে এটি সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এর গড় ব্যাস প্রায় ৪৯,০০০ কিলোমিটার। এর আয়তন পৃথিবীর প্রায় ৬৪ গুণ এবং ওজন পৃথিবীর মাত্র ১৫ গুণ। গ্রহটির আবহমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ অত্যধিক। এর ৫টি উপগ্রহ রয়েছে। ইউরেনাসের মত শনিরও বলয় আবিষ্কৃত হয়েছে। মিরিণ্ডা, এরিয়েল, ওবেরন, আম্ব্রিয়েল, টাইটানিয়া প্রভৃতি ইউরেনাসের উপগ্রহ।

নেপচুন

নেপচুনের গড় ব্যাস ৪৮৪০০ কিমি এবং সূর্য থেকে দূরত্ব ৪৫০ কোটি কিমি। সূর্য হতে অধিক দূরত্বের কারণে গ্রহটি শীতল। গ্রহটি অনেকটা নীলাভ বর্ণের। নেপচুন ১৬৫ বছরে সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করে। এর উপগ্রহ ২টি- ট্রাইটন ও নেরাইড।

ট্রপোমন্ডল

ট্রপোমন্ডল ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন স্তর বা বায়ুমণ্ডলের নিম্ন স্তর। এ স্তরটির গড় গভীরতা প্রায় ১৩ কিমি। ট্রপোমন্ডলের উর্ধ্বসীমাকে ট্রপোপস বলে। ট্রপোপসের গভীরতা সরু, এখানে বায়ু স্থির এবং ঝড় বৃষ্টির প্রাদুর্ভাব না থাকায় বিমান এ স্তর দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করে।

ওজোনস্তর

বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের একটি স্তর আছে যা ওজোন স্তর নামে পরিচিত। এর গড় গভীরতা প্রায় ১২-১৬ কিমি।সূর্যরশ্মির অতিবেগুণি রশ্মি শোষণ করায় এর তাপমাত্রা প্রায় ৭৬°​ সেলসিয়াস।

শিলামণ্ডল

গুরুমণ্ডলের উর্ধ্বাংশের শিলা কঠিন ও ভঙ্গুর, যা প্রায় ১০০ কিমি গভীর। ভূত্বক ও গুরুমণ্ডলের উর্ধ্বাংশ ১০০ কিমি পর্যন্ত পুরু এ স্তরকে একত্রে শিলামণ্ডল বা অশ্বমণ্ডল বলে।ভূ-ত্বকের উপরিভাগ থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত অশ্বমন্ডল।

দ্রাঘিমা রেখা

নিরক্ষরেখাকে ডিগ্রী, মিনিট, সেকেণ্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগ বিন্দুর উপর দিয়ে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে রেখাগুলো কল্পনা করা হয়েছে তাকে দ্রাঘিমা রেখা বলে। প্রত্যেকটি দ্রাঘিমা রেখার দৈর্ঘ্য সমান। সর্বোচ্চ দ্রাঘিমা ১৮০° হয়।১ ডিগ্রী দ্রাঘিমান্তরে ৪ মিনিট সময়ের ব্যবধান হয়।

কারণ

বর্তমানে বিজ্ঞানীগণ মনে করেন যে, পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তি এবং পৃথিবীর উপর চন্দ্র সূর্যের আকর্ষণের জোয়ার ভাটা হয়।

২৩ সেপ্টেম্বর

২৩ সেপ্টেম্বর সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে পড়ে এবং সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয়। সেজন্য এ তারিখের দেড়মাস পূর্ব থেকে দেড়মাস পর পর্যন্ত মোট তিন মাস উত্তাপ মধ্যম ধরণের হয়।

.২২ ডিসেম্বর

২২ ডিসেম্বর সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন অর্থাৎ এই দিন সূর্য মকরক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়।ফলে সেখানে দিন বড় ও রাত ছোট হয়।

২১ মার্চ

২১ মার্চ তারিখে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সমান দূরত্বে থাকে। এই দিন সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং সর্বত্র দিন রাত্রি সমান হয়।

ঋতু পরিবর্তন

সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবী সবসময় ৬৬.৫ ডিগ্রী কোণে হেলে ঘুরে। ফলে বিভিন্ন স্থানে সূর্যরশ্মি পতনে কৌণিক তারতম্য ঘটে এবং ঋতু পরিবর্তিত হয়। পৃথিবীর কক্ষপথের দৈর্ঘ্য ৯৩৮০৫১৮২৭ কিমি। পৃথিবীর এ কক্ষপথ উপবৃত্তাকার বলে পরিক্রমণকালে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সমান থাকে না। জানুয়ারির ১ থেকে ৩ তারিখ সূর্য পৃথিবীর নিকটতম অবস্থানে থাকে। একে পৃথিবীর অনুসূর (Perihelion) বলে। আবার জুলাই এর ১ থেকে ৪ তারিখে সূর্য পৃথিবীর নিকটতম অবস্থানে থাকে। একে পৃথিবীর অপসূর (Aphelion) বলে।

জোয়ার ভাটার ব্যবধান

পৃথিবী যেমন নিজ মেরুদণ্ডের উপরে পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে চন্দ্র্রও পৃর্থিবীর চারদিকে পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে পরিক্রমণ করে। চন্দ্র নিজ কক্ষপথে ২৭ দিনে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে। ফলে পৃথিবীর আবর্তনকালে অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় চন্দ্র (৩৬০*২৭) বা ১৩° পথ অতিক্রম করে। পৃথিবী ও চন্দ্র উভয়ই যেহেতু পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে তাই পৃথিবী উক্ত ১৩° পথ আরও (১৩*৪)=৫২ মিনিটে অগ্রসর হয়।

সিউল

সিউল ঢাকার পূর্বে অবস্থিত বলে এর দ্রাঘিমা বেশি হবে।

ঢাকা ও সিউলের সময়ের ব্যবধান ২ ঘণ্টা ৩২ মিনিট= ১৫২ মিনিট

৪’ সময় ব্যবধানে দ্রাঘিমার ব্যবধান হয় ১°

১’ সময়ের ব্যবধানে দ্রাঘিমার ব্যবধান হয় (১/৪)°

১৫২’ সম্ য় ব্যবধানে দ্রাঘিমার ব্যবধান হয় (১x১৫২/৪)°= ৩৮°

অতএব সিউলের দ্রাঘিমা= (৯০+৩৮)=১২৮°

সিউলের দ্রাঘিমা ১২৮° পূর্ব।

তারিখ রেখা

কোন নির্দিষ্ট স্থান থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে ভ্রমণ করার সময় স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের সাথে সাথেস্পতাহের শেষদিন বা বার নিয়েও গরমিল হয়। কোন নির্দিষ্ট স্থান থেকে পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখা অতিক্রম করলে সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমা রেখাকে অতিক্রম করলে সমস্যা দেখা যাবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমা রেখাকে অবলম্বন করে সম্পূর্ণভাবে জলভাগের উপর দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত একটি রেখা কল্পনা করা হয়। এ কল্পিত রেখাকে ‘আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা’ বলে।

প্রমাণ সময়

দ্রাঘিমারেখার উপর মধ্যাহ্নের সূর্যের অবস্থানের সময়কালকে দুপুর ১২ ধরে স্থানীয় সময় নির্ধারণ করলে একই দেশের মধ্যে সময় গণনার বিভ্রাট হয়। সেজন্য প্রত্যেক দেশের একটি প্রমাণ সময় নির্ণয় করা হয়। প্রত্যেক দেশেই সেই দেশের মধ্যভাগের কোন স্থানের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ণয় করা হয় সে সময়কে ঐ দেশের প্রমাণ সময় বলে। অনেক বড় দেশ হলে কয়েকটি প্রমাণ সময় থাকে। যেমন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের চারটি এবং কানাডাতে পাঁচটি প্রমাণ সময় র‍্য়েছে। গ্রিনিচের স্থানীয় সময়কে সমগ্র পৃথিবীর প্রমাণ সময় হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রমাণ সময় গ্রিনিচ অপেক্ষা ৬ ঘণ্টা অগ্রবর্তী।

ব্যবধান

পৃথিবী যেমন নিজ মেরুদণ্ডের উপর পশ্চিম হতে পূর্বদিকে আবর্তন করছে চন্দ্রও তেমনি পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে পৃথিবীর চারদিকে পরিক্রমণ করে। চন্দ্র নিজ কক্ষপথে ২৭ দিনে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। ফলে পৃথিবীর একবার আবর্তনকালে অর্থাৎ প্রায় ২৪ ঘণ্টায় চন্দ্র (৩৬০x২৭) বা ১৩° পথ অতিক্রম করে। পৃথিবী ও চন্দ্র উভয়ই যেহেতু পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে তাই পৃথিবী উক্ত ১৩° পথ আরো ৫২ মিনিট অগ্রসর হয়। তাই কোন নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট একটি সময়ে মুখ্য জোয়ার হওয়ার ১২ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট পর সেখানে গৌণ জোয়ার এবং মুখ্য জোয়ারের ২৪ ঘণ্টা ৫২ মিনিট পর সেখানে আবার মুখ্য জোয়ার হয়। তাই প্রত্যেক স্থানে জোয়ারের ৬ ঘণ্টা ১৩ মিনিট পর ভাটা হয়ে থাকে।

সপ্তমী

অমাবস্যা তিথিতে সূর্য এবং চন্দ্র পৃথিবীর এক পাশে অবস্থান করে এবং পূর্নিমা তিথিতে পৃথিবীর এক পাশে চাঁদ এবং এক পাশে সূর্য অবস্থান করে। তাই এ দুই তিথিতে উভয়ের মিলিত আকর্ষণে যে জোয়ার সৃষ্টি হয় তাকে ভরা কটাল বা তেজ কটাল বলে।

সপ্তমী এবং অষ্টমী তিথিতে পৃথিবী এবং চন্দ্র সমকোণে অবস্থান করে। তাই চন্দ্রের আকর্ষণে চন্দ্রের দিকে জোয়ার হলেও সূর্যের আকর্ষণে এ জোয়ারের বেগ প্রবল হয় না। একে মরা কটাল বলে। এক মাসে দুইবার ভরা কটাল এবং দুইবার মরা কটাল হয়।

ছায়াবৃত্ত

পৃথিবীর আলোকিত এবং অন্ধকার অংশের মধ্যবর্তী বৃত্তাকার অংশকে ছায়াবৃত্ত বলে। আবর্তনের ফলে পৃথিবীর যে অংশ অন্ধকার থেকে ছায়াবৃত্ত পার হয়ে সবেমাত্র আলোকিত অংশ পৌঁছায় সেখানে প্রভাত হয়। প্রভাতের কিছু পূর্বে যে সময় ক্ষীণ আলো থাকে সেখানে ঊষা এবং সন্ধ্যার কিছু পূর্বে যে সময় ক্ষীণ আলো থাকে সে সময়কে গোধূলি বলে।

প্রতিপাদ

ভূ পৃষ্ঠের উপর অবস্থিত কোন বিন্দুর বিপরীত বিন্দুকে সেই বিন্দুর প্রতিপাদ বিন্দু বলে। প্রতিপাদ স্থান সম্পূর্ণরূপে একে অন্যের বিপরীতে থাকে। প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করার জন্য ভূ পৃষ্ঠের কোন বিন্দু থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে একটি কল্পিত রেখা পৃথিবীর ঠিক বিপরীত দিকে টানা হয়। ঐ কল্পিত রেখা যে বিন্দুতে ভূ পৃষ্ঠের বিপরীতে এসে পৌঁছায় সেই বিন্দুই পূর্ব বিন্দুর প্রতিপাদ বিন্দু।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৪ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. সূর্যকে নিয়ন্ত্রক বলা হয় –
i. গ্রহের
ii. উপগ্রহের
iii. নক্ষত্রের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২. গুরুমন্ডলের ঊর্ধ্বাংশের শিলা –
i. কঠিন ও ভঙ্গুর
ii. প্রায় ১০০ কিলোমিটার গভীর
iii. উত্তপ্ত ও গলিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৩. অক্ষাংশ পরিমাপের একককে কী বলে?
ক) রেডিয়ান
খ) মিনিট
গ) ডিগ্রি
ঘ) মিটার
সঠিক উত্তর: (গ)

৪. সূর্য পৃথিবী থেকে দূরে অবস্থান করলে সেই অবস্থাকে কী বলে?
ক) অপসূর
খ) অনসূর
গ) দক্ষিণায়ন
ঘ) উত্তরায়ণ
সঠিক উত্তর: (ক)

৫. সমু্দ্রের পানিরাশি অনেক উঁচু নিচু হয় কোন অংশে?
ক) উপরিভাগে
খ) মধ্যভাগে
গ) অভ্যন্তরভাগে
ঘ) উপকূলের নিকটে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৬. কোন যন্ত্রের সাহায্যে মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থান থেকে পৃথিবীর যেকোনো স্থানের অক্ষাংশ নিরূপণ করা যায়?
ক) সেক্সট্যান্ট যন্ত্র
খ) ক্রনোমিটার ঘড়ি
গ) দিগন্ত রেখা
ঘ) সূর্যের ছায়া
সঠিক উত্তর: (ক)

৭. দ্রাঘিমারেখার বিকল্প নামটি কী?
ক) সমাক্ষরেখা
খ) মধ্যরেখা
গ) নিম্নরেখা
ঘ) অক্ষরেখা
সঠিক উত্তর: (খ)

৮. মহাকাশের অসংখ্য জ্যোতিষ্কের সমন্বয়ে কী সৃষ্টি হয়েছে?
ক) সৌরজগৎ
খ) বিশ্বজগৎ
গ) পৃথিবী
ঘ) জ্যোতিষ্কমন্ডল
সঠিক উত্তর: (খ)

৯. মূলমধ্যরেখার মান কত?
ক) ০ ডিগ্রি
খ) ২৩.৫ ডিগ্রি
গ) ৬৬.৫ ডিগ্রি
ঘ) ৯০ ডিগ্রি
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. কোন রেখার সাহায্যে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্ব স্থির করা হয়?
ক) নিরক্ষরেখা
খ) মেরুরেখা
গ) মূলমধ্যরেখা
ঘ) সমাক্ষরেখা
সঠিক উত্তর: (খ)

১১. পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে এর কেন্দ্র পর্যন্ত কয়টি স্তরে ভাগ করা যায়?
ক) দুইটি
খ) তিনটি
গ) চারটি
ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (খ)

১২. দৈনিক কয়বার জোয়ার-ভাটা হয়?
ক) একবার
খ) দুইবার
গ) তিনবার
ঘ) চারবার
সঠিক উত্তর: (খ)

১৩. পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণে কল্পিত রেখার উত্তর প্রান্তবিন্দুকে কী বলে?
ক) সুমেরু
খ) মেরুবিন্দু
গ) কুরিবিন্দু
ঘ) কুমেরু
সঠিক উত্তর: (ক)

১৪. ‘টাইটানিয়া’ কোন গ্রহের একটি উপগ্রহ?
ক) ইউরেনাস
খ) শনি
গ) মঙ্গল
ঘ) বৃহস্পতি
সঠিক উত্তর: (ক)

১৫. নিচের কোনটি সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম গ্রহ?
ক) মঙ্গল
খ) নেপচুন
গ) পৃথিবী
ঘ) বুধ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৬. মঙ্গল গ্রহের মোট কয়টি উপগ্রহ রয়েছে?
ক) একটি
খ) দুইটি
গ) পাঁচটি
ঘ) ষোলটি
সঠিক উত্তর: (খ)

১৭. সময়ের হিসাব করতে হলে দ্রাঘিমা জানা বিশেষ জরুরি। এর মাধ্যমেই আমরা বিভিন্ন স্থানীয় এবং প্রমাণ সময় জানতে এবং তুলনা করতে পারি। যেমন –
i. গ্রিনিচের দ্রাঘিমা শূন্য (০) ডিগ্রি
ii. পৃথিবীর পরিধি দ্বারা উৎপন্ন কোণ ৩৬০ ডিগ্রি
iii. ১ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পার্থক্যে সময়ের ব্যবধান হয় ৪ মিনিট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৮. চন্দ্র নিজ কক্ষপথে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে চন্দ্রের কতদিন সময় লাগে?
ক) ১৫ দিন
খ) ২৫ দিন
গ) ২৭ দিন
ঘ) ৩০ দিন
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. নেপচুন গ্রহটি কেমন?
ক) গরম
খ) শীতল
গ) সামান্য গরম
ঘ) নাতিশীতোষ্ণ
সঠিক উত্তর: (খ)

২০. ট্রপোমন্ডলে কিসের উপস্থিতি দেখা যায়?
ক) আর্দ্রতা, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন
খ) কুয়াশা, মেঘ, বৃষ্টি
গ) হিলিয়াম, কার্বন ডাইঅক্সাইড
ঘ) আরগন, হিলিয়াম, নাইট্রোজেন
সঠিক উত্তর: (খ)

২১. শনির বায়ুমন্ডলে রয়েছে –
i. হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মিশ্রণ
ii. অ্যামোনিয়া ও মিথেন
iii. কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. বাংলাদেশের প্রমাণ সময় ও গ্রিনিচের সময়ের পার্থক্য কত?
ক) ১২ ঘন্টা আগে
খ) ৬ ঘন্টা পরে
গ) ৬ ঘন্টা আগে
ঘ) ৮ ঘন্টা পরে
সঠিক উত্তর: (ক)

২৩. শনি গ্রহটি পৃথিবী অপেক্ষা কত গুণ বড়?
ক) প্রায় ৮ গুণ
খ) প্রায় ৯ গুণ
গ) প্রায় ১০ গুণ
ঘ) প্রায় ১১ গুণ
সঠিক উত্তর: (খ)

২৪. পৃথিবীর কক্ষপথটি দেখতে কেমন?
ক) বৃত্তাকার
খ) ত্রিভুজাকৃতির
গ) উপবৃত্তাকৃতির
ঘ) চতুর্ভুজাকৃতির
সঠিক উত্তর: (গ)

২৫. সৌরবছর গণনা করা হয় কত দিনে?
ক) ৩৬৪ দিনে
খ) ৩৬৫ দিনে
গ) ৩৬৬ দিনে
ঘ) ৩৬৭ দিনে
সঠিক উত্তর: (খ)

২৬. পৃথিবীর দিন-রাত্রি সমান হওয়াকে কী বলে?
ক) শারদ বিষুব
খ) বাসন্ত বিষুব
গ) উত্তর অয়নান্ত
ঘ) দক্ষিণ অয়নান্ত
সঠিক উত্তর: (ক)

২৭. উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট রাত কোনটি?
ক) ২১ মার্চ
খ) ২১ জুন
গ) ২৩ সেপ্টেম্বর
ঘ) ২২ ডিসেম্বর
সঠিক উত্তর: (খ)

২৮. যে গ্রহগুলোর বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন রয়েছে সেগুলো হলো –
i. মঙ্গল
ii. শনি
iii. পৃথিবী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২৯. পৃথিবীর গতিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক) দুই
খ) তিন
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. পৃথিবী তার অক্ষ থেকে চারদিকে দ্রুতবেগে ঘোরায় তার পৃষ্ঠ থেকে পানিরাশির চতুর্দিকে ছিটকে যাওয়ার প্রবণতাকে কী বলে?
ক) জোয়ার
Οখ) অভিকর্ষ শক্তি
গ) মহাকর্ষণ শক্তি
ঘ) কেন্দ্রাতিগ শক্তি
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩১. বুধ গ্রহের ভূত্বকে কী দেখা যায়?
ক) অসংখ্য গর্ত ও পাহাড়
খ) অসংখ্য কালো দাগ
গ) বহমান নদীর ধারা
ঘ) মানব বসতির চিহ্ন
সঠিক উত্তর: (ক)

৩২. ইউরেনাসের ওজন পৃথিবী থেকে কত গুণ বেশি?
ক) ১২
খ) ১৩
গ) ১৪
ঘ) ১৫
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৩. কোন তারিখের দেড় মাস পূর্ব থেকে দেড় মাস পর পর্যন্ত উত্তাপ মধ্যম হয়ে থাকে?
ক) ২১ জুন
খ) ২৩ সেপ্টেম্বর
গ) ২২ ডিসেম্বর
ঘ) ৩০ জুলাই
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৪. কোনো স্থানের সময় বেলা ২ টা বাজলে তার ১ ডিগ্রি পূর্বের স্থানের সময় কী হবে?
ক) ২ টা ৪ মিনিট
খ) ১২ টা ৫২ মিনিট
গ) ১ টা ৫৬ মিনিট
ঘ) ২ টা ৫৬ মিনিট
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. পৃথিবী উপবৃত্তাকার পথে পরিক্রমণ করার কারণে –
i. বিভিন্ন ঋতুর আবির্ভাব হয়
ii. মাধ্যাকর্ষণ শক্তির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে
iii. দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের তারতম্য ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৬. নেপচুন গ্রহটি কোন বর্ণের?
ক) কালো
খ) গোলাপি
গ) লালচে
ঘ) নীলাভ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৭. কোনটি বৃহস্পতির উপগ্রহ?
ক) গ্যানিমেড
খ) ডিমোস
গ) টাইটান
ঘ) ফেবোস
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৮. বায়ুর যেসকল উপাদান মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকে সেগুলো হলো –
i. অক্সিজেন
ii. হাইড্রোজেন
iii. নাইট্রোজেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৯. শুক্রকে কখন আমরা শুকতারা রূপে দেখতে পাই?
ক) সন্ধ্যায়
খ) রাতে
গ) ভোরে
ঘ) বিকেলে
সঠিক উত্তর: (গ)

৪০. নিরক্ষরেখা পৃথিবীকে কোন দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে?
ক) সুমেরু ও কুমেরুবৃত্ত
খ) কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি
গ) উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ
ঘ) মহাসাগর ও মহাদেশ
সঠিক উত্তর: (গ)

৪১. সূর্যসহ সকল জ্যোতিষ্ক ঘূর্ণায়মান অথচ পৃথিবীর এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে তা বোঝা যায় না, কারণ –
i. পৃথিবীর তুলনায় আমরা একটি বিন্দুর মতো
ii. পৃথিবীর সাথে সাথে আমরাও ঘুরি
iii. পৃথিবী বড় আর আমরা ছোট বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৪২. ইউরেনাসের উপগ্রহ কোনটি?
ক) ক্যাপিটাস
খ) এরিয়েল
গ) নেরাইড
ঘ) গ্যানিমেড
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৩. পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে –
i. দিন ও রাতের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে
ii. সূর্যরশ্মি কোথাও লম্ব আবার কোথাও তির্যকভাবে পতিত হয়
iii. পৃথিবীতে তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৪. নিরক্ষরেখার অপর নাম কী?
ক) বিষুবরেখা
খ) মেরুরেখা
গ) সমাক্ষরেখা
ঘ) মূল মধ্যরেখা
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৫. সৌরজগতের নিকটতম গ্রহের ব্যাস কত?
ক) ৪,৮৫০ কিলোমিটার
খ) ১২,৬৬৭ কিলোমিটার
গ) ৬,৭৮৭ কিলোমিটার
ঘ) ১,৪২,৮০০ কিলোমিটার
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৬. পৃথিবীর দিন-রাত্রি সমান হয় কোন তারিখে?
ক) ২৫ জুলাই
খ) ২৯ ফেব্রুয়ারি
গ) ২৩ সেপ্টেম্বর
ঘ) ২৫ মার্চ
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৭. পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় কোন তারিখে?
ক) ২২ মার্চ
খ) ২২ ডিসেম্বর
গ) ২৩ সেপ্টেম্বর
ঘ) ১২ নভেম্বর
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৮. কীভাবে পতিত সূর্যরশ্মি অধিক স্থানব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে?
ক) তির্যকভাবে
খ) লম্বভাবে
গ) সরাসরি
ঘ) কোণাকুনিভাবে
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৯. কোন সময়ে সমুদ্রের পানিকে আবদ্ধ করে শুকিয়ে লবণ তৈরি করা হয়?
ক) বর্ষার সময়
খ) শীতের সময়
গ) ভাটার সময়
ঘ) জোয়ারের সময়
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫০. কোনটির প্রভাবে জলরাশি সর্বদা বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়?
ক) মহাকর্ষণ শক্তির
খ) অভিকর্ষ শক্তির
গ) কেন্দ্রাতিগ শক্তির
ঘ) আণবিক শক্তির
সঠিক উত্তর: (গ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-303 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৩:বাংলাদেশের পরিবার কাঠামো ও সামাজিকী করণ| সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

এস. এস.সি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

অধ্যায় – ৩: বাংলাদেশের পরিবার কাঠামো ও সামাজিকীকরণ

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

পরিবারের ধারণা

পরিবার হলো সমাজকাঠমোর মৌল সংগঠন। গোষ্ঠী জীবনের প্রথম ধাপ হচ্ছে পরিবার। পরিবার হচ্ছে মোটামুটিভাবে স্বামী-স্ত্রীর একটি স্থায়ী সংঘ বা প্রতিষ্ঠান, যেখানে সন্তান-সন্ততি থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে।

পরিবার হলো সমাজকাঠমোর মৌল সংগঠন। গোষ্ঠী জীবনের প্রথম ধাপ হচ্ছে পরিবার। পরিবার হচ্ছে মোটামুটিভাবে স্বামী-স্ত্রীর একটি স্থায়ী সংঘ বা প্রতিষ্ঠান, যেখানে সন্তান-সন্ততি থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে।

সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া

সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। শিশুর জন্মের পর হতে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন ও খাপখাওয়ানোর প্রক্রিয়াই সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তি যখন একপর্যায় হতে আরেক পর্যায়ে প্রবেশ করে তখন তাকে নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাইয়ে চলতে হয়। এই খাপ-খাওয়ানো প্রক্রিয়ার ফলে তার আচরণে পরিবর্তন আসে। নতুন নিয়মকানুন রীতিনীতি এবং নতুন পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ-খাইয়ে চলার প্রক্রিয়ার নাম সামাজীকিকরণ।

সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। শিশুর জন্মের পর হতে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন ও খাপখাওয়ানোর প্রক্রিয়াই সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তি যখন একপর্যায় হতে আরেক পর্যায়ে প্রবেশ করে তখন তাকে নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাইয়ে চলতে হয়। এই খাপ-খাওয়ানো প্রক্রিয়ার ফলে তার আচরণে পরিবর্তন আসে। নতুন নিয়মকানুন রীতিনীতি এবং নতুন পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ-খাইয়ে চলার প্রক্রিয়ার নাম সামাজীকিকরণ।

পরিবারের প্রকারভেদ

সমাজভেদে বা দেশ-ভেদে বিভিন্ন প্রকারের পরিবার রয়েছে। বিভিন্ন মাপকাঠির ভিত্তিতে পরিবারকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যা, কর্তৃত্ব, পরিবারের আকার, বংশ মর্যাদা, বসবাস এবং পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের মাপকাঠির ভিত্তিতে পরিবার বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে।

পরিবারের সাধারণ কার্যাবলি

মানব সমাজে পরিবারের ভূমিকার পরিধি ব্যাপক এবং এর কার্যাবলি বহুমাত্রিক। সন্তান প্রজনন থেকে শুরু করের লালন পালন এবং তার সুষ্ঠু বিকাশে পরিবারের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পৃথিবীর সকল দেশের পরিবার কাঠামোতেই এ ধরণের ভূমিকা পালন দেখা যায়। সামাজিক পরিবর্তনের সাথে পরিবারের ভূমিকারও পরবর্তন ঘটেছে। তবে পরিবারের কতোগুলো মূল কাজ রয়েছে, যা বিশ্বের সব সমাজের পরিবার পালন করে থাকে।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ৩ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. পরিবারের সাথে মানুষের সম্পর্ক কেমন?
ক) স্বাভাবিক
খ) গতানুগতিক
গ) অকৃত্রিম ও নিবিড়
ঘ) অপ্রয়োজনীয়
সঠিক উত্তর: (গ)

২. একক পরিবার কয় পুরুষে আবদ্ধ?
ক) এক
খ) দুই
গ) তিন
ঘ) চার
সঠিক উত্তর: (খ)

৩. ধর্ম থেকে শিশুরা লাভ করে –
i. মূল্যবোধ
ii. নৈতিকতা
iii. প্রার্থনা পদ্ধতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৪. একটি পরিবার গঠিত হয় –
i. পিতৃ মাতৃহীন ভাইবোন নিয়ে
ii. মা ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে
iii. বাবা ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫. সাধারণ সাংস্কৃতিক আদর্শ বলা হয় কোন মূল্যবোধকে?
ক) পারিবারিক
খ) রাজনৈতিক
গ) সামাজিক
ঘ) জাতীয়তাবাদী
সঠিক উত্তর: (গ)

৬. আধুনিক সভ্য সমাজে কোন পরিবার কাঠামো অনুপস্থিত?
ক) একক
খ) বহুপত্নী
গ) বহুপতি
ঘ) দ্বিপত্নী
সঠিক উত্তর: (গ)

৭. সমাজের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান কী?
ক) ব্যক্তি
খ) গোষ্ঠী
গ) দল
ঘ) পরিবার
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৮. বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু বলতে –
i. অটিস্টিক শিশুদের
ii. বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের
iii. শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৯. মাতৃবাস পরিবার দেখা যায় –
i. গারোদের মধ্যে
ii. মুসলমানদের মধ্যে
iii. হিন্দুদের মধ্যে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. যৌথ পরিবার ভেঙে যাবার কারণ –
i. শিল্পায়ন, দরিদ্রতা
ii. নগরায়ণ, ভোগবাদী মানসিকতা
iii. জনসংখ্যা বৃদ্ধি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১১. সামাজিক অনুষ্ঠান কোনটি?
ক) বিতর্ক
খ) মৃতের সৎকার
গ) বিবাহ
ঘ) শোক পালন
সঠিক উত্তর: (গ)

১২. এস্কিমো উপজাতিদের মাঝে দেখা যায় –
i. বহুপত্নীক পরিবার
ii. একজনের একাধিক স্ত্রী
iii. বহুপতি পরিবার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. কোন ধরনের বিয়ের মূল কারণ অনাচার প্রথা বন্ধ করা?
ক) অসম বিবাহ
খ) অনুলোম বিবাহ
গ) প্রতিলোম বিবাহ
ঘ) অন্তর্গোত্র বিবাহ
সঠিক উত্তর: (গ)

১৪. বিবাহ বহির্ভূত পরিবার গঠিত হয় কোন সমাজে?
ক) আদিম সমাজে
খ) আফ্রিকার বাহিমা উপজাতিতে
গ) রেড ইন্ডিয়ান সমাজে
ঘ) আধুনিক সমাজে
সঠিক উত্তর: (ক)

১৫. মানসিক নিরাপত্তাবোধ না থাকলে শিশুর মনে সৃষ্টি হয় –
i. হতাশা
ii. হীনম্মন্যতা
iii. আশংকা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৬. যান্ত্রিক সভ্যতা বিকাশের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে কী পরিবেশ বলা হয়?
ক) বৈজ্ঞানিক পরিবেশ
খ) প্রযুক্তিগত পরিবেশ
গ) আধুনিক পরিবেশ
ঘ) সভ্যতার পরিবেশ
সঠিক উত্তর: (খ)

১৭. মানুষের সামাজিকীকরণের মূল বিষয় কী?
ক) পরিবার গঠন
খ) সম্প্রদায় গঠন
গ) ঐক্যবদ্ধতা
ঘ) মিথস্ক্রিয়া
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৮. পরিবার কেমন সংগঠন?
ক) সমাজ কাঠামোর মৌল সংগঠন
খ) সমাজ কাঠামোর সর্বশেষ সংগঠন
গ) সমাজ কাঠামোর আধুনিক সংগঠন
ঘ) সমাজ কাঠামোর অপ্রয়োজনীয় সংগঠন
সঠিক উত্তর: (ক)

১৯. কোনটির মাধ্যমে শিশু জীবজগৎ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণায় অনুপ্রাণিত হয়?
ক) সংবাদপত্রের
খ) খেলার সাথী
গ) গণমাধ্যম
ঘ) প্রতিবেশী
সঠিক উত্তর: (ক)

২০. শিশু কোনটির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ পিতা এবং মাতার যাবতীয় দায়িত্ব কর্তব্যের গুণাবলি অর্জন করে থাকে?
ক) পরিবার
খ) খেলার সাথী
গ) বিদ্যালয়
ঘ) প্রতিবেশী
সঠিক উত্তর: (ক)

২১. কোন ধরনের পরিবারের সামগ্রিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ভার পুরুষ সদস্যের ওপর ন্যাস্ত থাকে?
ক) বহুপত্নী
খ) একপত্নী
গ) পিতৃতান্ত্রিক
ঘ) মাতৃতান্ত্রিক
সঠিক উত্তর: (গ)

২২. সব সমাজে এবং সমাজ বিকাশের প্রত্যেক স্তরে কিসের অস্তিত্ব রয়েছে?
ক) দলের
খ) গোষ্ঠীর
গ) পরিবারের
ঘ) সংঘের
সঠিক উত্তর: (গ)

২৩. কোন পরিবারে এক পুরুষের সাথে একাধিক স্ত্রী বর্তমান থাকে?
ক) বহুপত্নী পরিবারে
খ) বহুপতি পরিবারে
গ) একপত্নী পরিবারে
ঘ) একপতি পরিবারে
সঠিক উত্তর: (ক)

২৪. বাংলাদেশে যৌথ পরিবার ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ হলো –
i. দারিদ্র‌্য ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি
ii. শিল্পায়ন ও নগরায়ণ
iii. নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২৫. বংশমর্যাদা এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার ভিত্তিতে পরিবার কয় ধরনের হয়ে থাকে?
ক) দুই
খ) তিন
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)

২৬. আদিম সমাজ হতে শুরু করে আজ পর্যন্ত পরিবারের কিসে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে?
ক) চিন্তা, চেতনা ও ভাবাদর্শ
খ) গঠন, চেতনা ও আধুনিকতা
গ) গঠন, বৈশিষ্ট্য ও গতানুগতিক ধারা
ঘ) গঠন, কার্যাবলি ও কাঠামো
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৭. কোন শিক্ষা মনের সংকীর্ণতা দূরীভূত করে?
ক) চেতনার
খ) সভ্যতার
গ) সম্প্রীতির
ঘ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
সঠিক উত্তর: (গ)

২৮. একজন পুরুষের সঙ্গে একাধিক নারীর বিবাহের ভিত্তিতে কোন ধরনের পরিবার গড়ে ওঠে?
ক) যৌথ
খ) একপত্নী
গ) বহুপতি
ঘ) বহুপত্নী
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৯. কোন ধরনের পরিবারে বিবাহের পর নবদম্পতি স্বামীর পিতৃ গৃহে বসবাস করে?
ক) মাতৃতান্ত্রিক
খ) নয়াবাস
গ) মাতৃবাস
ঘ) পিতৃবাস
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩০. অন্তর্গোত্র বিবাহভিত্তিক পরিবার কোন ধর্মে দেখা গেছে?
ক) মুসলমান
খ) হিন্দু
গ) বৌদ্ধ
ঘ) খ্রিষ্টান
সঠিক উত্তর: (খ)

৩১. সামাজিকীকরণ বলতে আমরা বুঝি –
i. পারস্পরিক নির্ভরশীলতা
ii. নতুন পরিবেশে নিজেকে অভিযোজনের কৌশল
iii. একজন পরিপূর্ণ সামাজিক মানুষ হওয়ার প্রক্রিয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৩২. পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত হলো – i. আয়-উপার্জন ii. দল গঠন iii. বিবাহ নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৩. বর্ধিত পরিবারের লক্ষণ কী?
ক) দুই পুরুষের বন্ধন
খ) এক পুরুষের বন্ধন
গ) তিন পুরুষের বন্ধন
ঘ) পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনেক
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৪. কোন পরিবারটিকে আধুনিক সভ্য সমাজে দেখা যায় না?
ক) বহুপতি
খ) একপত্নী
গ) নয়াবাস
ঘ) একপত্নী
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, আচার-আচরণ, জ্ঞান-বিজ্ঞান কোন পরিবেশের শ্রেণিভুক্ত?
ক) অর্থনৈতিক
খ) সাংস্কৃতিক
গ) সামাজিক
ঘ) মনস্তাত্ত্বিক
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৬. যে প্রক্রিয়ায় শিশু ক্রমশ সামাজিক মানুষে পরিণত হয় তাকে কী বলে?
ক) সামাজিক বিন্যাস
খ) সামাজিকীকরণ
গ) সামাজিক স্তর
ঘ) সমাজবদ্ধতা
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৭. পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতে পরিবার কয় ধরনের হয়?
ক) দুই
খ) তিন
গ) চার
ঘ) পাঁচ
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৮. মাতৃবাস পরিবার বাংলাদেশের কোন নৃগোষ্ঠীর মাঝে দেখা যায়?
ক) চাকমা
খ) মারমা
গ) লুসাই
ঘ) গারো
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৯. কোনটি স্থানীয় গোষ্ঠী?
ক) শ্রমিক সংঘ
খ) পরিবার
গ) প্রতিবেশী
ঘ) সমাজ
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. এস্কিমো কী?
ক) একটি দেশের নাম
খ) একটি উপজাতির নাম
গ) একটি পরিবারের নাম
ঘ) একটি পাহাড়ের নাম
সঠিক উত্তর: (খ)

৪১. আমাদের সমাজবদ্ধ জীবনের বৈশিষ্ট্য কী?
ক) মূল্যবোধ
খ) আদর্শ
গ) আচার-ব্যবহার
ঘ) শৃঙ্খলাবোধ
সঠিক উত্তর: (ক)

৪২. সামাজিকীকরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহায়ক ভূমিকা রাখে –
i. ব্যক্তির মনে দায়িত্ববোধ সৃষ্টির মাধ্যমে
ii. মানুষকে শিক্ষাদান করার মাধ্যমে
iii. শিশুর মনে মূল্যবোধ সৃষ্টির মাধ্যমে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৩. মানুষ পরিবার গঠন করে কেন?
ক) সমাজ স্বীকৃতভাবে জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য
খ) বৈষয়িক সমস্যা সমাধানের জন্য
গ) আত্মরক্ষা ও মিলেমিশে থাকার জন্য
ঘ) নিজেকে শক্তিশালী করার জন্য
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৪. একসময়ে ধর্ম শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র ছিল কোনটি?
ক) মসজিদ
খ) গোষ্ঠী
গ) বিদ্যালয়
ঘ) পরিবার
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৫. দুই স্ত্রী ও আট সন্তান নিয়ে শ্যামলের সংসার। তার পরিবারের ধরন কোনটি?
ক) একপত্নী
খ) বহুপতি
গ) একপতি
ঘ) বহুপত্নী
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৬. পিতা-মাতা এবং তাদের সন্তান-সন্তুতি ও স্ত্রী-পরিজন নিয়ে কোন ধরনের পরিবার গঠিত হয়?
ক) বর্ধিত
খ) মাতৃবাস
গ) একক
ঘ) পিতৃবাস
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৭. গ্রাম ও শহর উভয় সমাজেই শিশু লালিত-পালিত হয় কোথায়?
ক) গোত্রে
খ) প্রতিষ্ঠানে
গ) সম্প্রদায়ে
ঘ) পরিবারে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৮. ম্যাকাইভারের মতে সম্প্রদায়ের ভিত্তি কয়টি?
ক) ২
খ) ৩
গ) ৪
ঘ) ৫
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৯. কোন পরিবারে বিবাহিত পুত্র ও তার সন্তানাদিসহ পিতামাতার কর্তৃত্বাধীনে এক সংসারে বাস করে?
ক) একক পরিবারে
খ) যৌথ পরিবারে
গ) পিতৃপ্রধান পরিবারে
ঘ) বহুপত্নীক পরিবারে
সঠিক উত্তর: (খ)

৫০. প্রতিবেশী দল থেকে শিশু অর্জন করে –
i. সহমর্মিতা
ii. সম্প্রীতি
iii. সহযোগিতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-279 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ২: স্বাধীন বাংলাদেশ | সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ২: স্বাধীন বাংলাদেশ

এই নোট টির ডাউনলোড লিংক পোস্টের নিচে পাবেন

মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পাকিস্তানি সামরিক শাসকচক্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা চক্রান্ত শুরু করে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহবান করেন। ভুট্টো ঢাকায় অধিবেশনে যোগদান করতে অস্বীকার করেন, অন্যান্য সদস্যদেরও তিনি হুমকি দেন। এসবই ছিল ভুট্টো- ইয়াহিয়ার ষড়যন্ত্রের ফল। ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ ভুট্টোর ঘোষণাকে অজুহাত দেখিয়ে ৩ মার্চের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কোনো প্রকার আলোচনা না করে অধিবেশন স্থগিত করায় পূর্ববাংলার জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালিত হয়। ফলে সকল সরকারি কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। হরতাল চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে বহুলোক হতাহত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ তারিখে বিশাল এক জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণ দান করেন। এ ভাষণে তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা করেন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে আহবান জানান। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পাকিস্তানি সামরিক শাসকচক্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা চক্রান্ত শুরু করে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহবান করেন। ভুট্টো ঢাকায় অধিবেশনে যোগদান করতে অস্বীকার করেন, অন্যান্য সদস্যদেরও তিনি হুমকি দেন। এসবই ছিল ভুট্টো- ইয়াহিয়ার ষড়যন্ত্রের ফল। ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ ভুট্টোর ঘোষণাকে অজুহাত দেখিয়ে ৩ মার্চের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কোনো প্রকার আলোচনা না করে অধিবেশন স্থগিত করায় পূর্ববাংলার জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালিত হয়। ফলে সকল সরকারি কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। হরতাল চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে বহুলোক হতাহত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ তারিখে বিশাল এক জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণ দান করেন। এ ভাষণে তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা করেন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে আহবান জানান। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

স্বাধীন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর শাসন আমল ও পরবর্তী ঘটনাবলি

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ২২ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ঢাকায় আসে এবং শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং সরকার প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সামগ্রিক পুনর্গঠন, ভারতে অবস্থান এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, সংবিধান প্রণয়ন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান, ভারতের মিত্রবাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠানো, বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায় ইত্যাদি তাঁর শাসন আমলের উল্লেখযোগ্য অর্জন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্তে কতিপয় বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তার অভ্যুত্থানে বিদেশে অবস্থান্রত দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ব্যতীত পরিবারের সকল সদস্যসহ স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ২২ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ঢাকায় আসে এবং শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং সরকার প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সামগ্রিক পুনর্গঠন, ভারতে অবস্থান এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, সংবিধান প্রণয়ন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান, ভারতের মিত্রবাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠানো, বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায় ইত্যাদি তাঁর শাসন আমলের উল্লেখযোগ্য অর্জন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্তে কতিপয় বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তার অভ্যুত্থানে বিদেশে অবস্থান্রত দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ব্যতীত পরিবারের সকল সদস্যসহ স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

সেনা শাসন আমল (১৯৭৫-১৯৯০)

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সেনা শাসন বহাল ছিল। দেশের সংবিধানকে উপেক্ষা করে খন্দকার মোশতাক, বিচারপতি সায়েম, জেনারেল জিয়াউর রহমান, বিচারপতি আহসান উদ্দিন এবং জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। দেশে সেনা শাসন বহাল রেখে সুবিধামতো সময়ে জেনারেল জিয়াউর রহমান (১৯৭৫-১৯৮১) এবং জেনারেল এরশাদ (১৯৮২-১৯৯০) নির্বাচন সম্পন্ন করে বেসামরিক শাসন চালু করেন। তাদের অগণতান্ত্রিক শাসন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী কার্যকলাপ দেশের জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রামের পর অবশেষে ১৯৯১ সালে পুনরায় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সেনা শাসন বহাল ছিল। দেশের সংবিধানকে উপেক্ষা করে খন্দকার মোশতাক, বিচারপতি সায়েম, জেনারেল জিয়াউর রহমান, বিচারপতি আহসান উদ্দিন এবং জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। দেশে সেনা শাসন বহাল রেখে সুবিধামতো সময়ে জেনারেল জিয়াউর রহমান (১৯৭৫-১৯৮১) এবং জেনারেল এরশাদ (১৯৮২-১৯৯০) নির্বাচন সম্পন্ন করে বেসামরিক শাসন চালু করেন। তাদের অগণতান্ত্রিক শাসন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী কার্যকলাপ দেশের জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রামের পর অবশেষে ১৯৯১ সালে পুনরায় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।

গনতন্ত্রের পুনঃযাত্রা

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক, বেসামরিক আদলে সেনা শাসন অব্যাহত ছিল।

১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পুনঃযাত্রা শুরু হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকল দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক ধারা চালু হয়। জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে জনগণ দেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হয়। এ অগ্রযাত্রায় সকল শ্রেণির মানুষ এক বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখে। একটি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ জেল-জুলুম-নির্যাতন এমনকি মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে অকাতরে প্রাণ দেয়। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কর্তৃক শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি দেশে পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক, বেসামরিক আদলে সেনা শাসন অব্যাহত ছিল।

১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পুনঃযাত্রা শুরু হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকল দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক ধারা চালু হয়। জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে জনগণ দেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হয়। এ অগ্রযাত্রায় সকল শ্রেণির মানুষ এক বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখে। একটি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ জেল-জুলুম-নির্যাতন এমনকি মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে অকাতরে প্রাণ দেয়। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কর্তৃক শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি দেশে পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্ত হয়।

গণমাধ্যম

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সংবাদপত্র ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতারের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা স্বাধীন বেতার কেন্দ্র চালু করেন। পরে একটি মুজিবনগর সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সংবাদ, দেশাত্মবোধক গান, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা রণাঙ্গনের নানা ঘটনা ইত্যাদি দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের প্রতি অনুপ্রাণিত করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যুগিয়ে বিজয়ের পথ সুগম করে। এছাড়া মুজিবনগর সরকারের প্রচার সেলের তত্ত্ববধানে প্রকাশিত পত্রিকা মুক্তিযুদ্ধে বিশিষ্ট ভুমিকা পালন করে।

মুক্তিযুদ্ধে নারী

মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। ১৯৭১ সালের মার্চের প্রথম থেকেই দেশের প্রতিটি অঞ্চলে যে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়, তাতে নারীদের বিশেষ করে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। মুক্তিযোদ্ধা শিবিরে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা অস্ত্রচালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অপরদিকে সহযোদ্ধা হিসেবে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান ও তথ্য সরবরাহ করে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এদেশের অগণিত নারী মুক্তিসেনা।

পাকসেনা বাহিনী কর্তৃক ধর্ষিত হয় প্রায় তিনলক্ষ নারী। তারাও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযাত্রী এবং তাদের ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারিভাবে তাদের ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

মুজিবনগর সরকার

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুজিবনগর সরকার গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুক্তিযুদ্ধ সঠিকভাবে পরিচালনা, সুসংহত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘মুজিবনগর সরকার’ গঠন করা হয়। ঐ দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আদেশ। মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়াদী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এ ভাষণে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-শাসন, বঞ্চনার ইতিহাস, নির্বাচনে জয়ের পর বাঙালির সাথে প্রতারণা ও বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের পটভ’মি তুলে ধরেন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এ ভাষণ এক স্মরণীয় দলিল। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব ঐতিহাসিক ভাষণের নজির আছে ৭ মার্চের ভাষণ তার অন্যতম। পৃথিবীর স্বাধীনতাকামী মানুষের নিকট এ ভাষণ অমর হয়ে থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ ও পেশাজীরীদের ভূমিকা

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরন্ত্র জনগণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আক্রমণ চালালে বাঙালি ছাত্র, জনতা, পুলিশ, ইপিআর, সাহসিকতার সাথে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁডায়। বিনা প্রতিরোধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বাঙ্গালিরা ছাড় দেয়নি। দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে বহু মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহিদ হন, আবার অনেকে গুলি খেয়ে পঙ্গু হন। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের এ ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না। জাতি চিরকাল মুক্তিযোদ্ধাদের সূর্য সন্তান হিসাবে মনে করবে। তারা ছিল দেশপ্রেমিক, অসীম সাহসী এবং আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক, ইপিআর, পূলিশ, আনসার, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালি অংশগ্রহণ করে। তাই এ যুদ্ধকে ‘গণযুদ্ধ’ বা জনযুদ্ধ বলা যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল নিয়ামক শক্তি ছিল জনগণ। তাই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র, পেশাজীবী, নারী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশকে শত্র“মুক্ত করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।

শিল্প-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীর ভুমিকা

মুক্তিযুদ্ধের মূল নিয়ামক শক্তি ছিল জনগণ। তথাপি যুদ্ধে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীর অবদান ছিল খুবই প্রশংসনীয়। পত্রপত্রিকার লেখা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে খবর পাঠ, দেশাত্মবোধক গান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান, কবিতা পাঠ, নাটক কবিতা, এম. আর আক্তার মুকুলের অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠান এবং ‘জল্লাদের দরবার’ ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। এসব রণক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক ও নৈতিক বল ধরে রাখতে সহায়তা করছে, সাহস জুগিয়েছে, জনগণকে শত্রুর বিরুদ্ধে দুর্দমনীয় করেছে।

স্বাধীনতার ঘোষণা

গ্রেফতার হওয়ার পুর্ব মুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে ২৫ মার্চ রাত ১২ টার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।ঘোষণাটি ছিল ইংরেজিতে, যাতে বিশ্ববাসী ঘোষনাটি বুঝতে পারেন। স্বাধীনতা ঘোষণার বাংলা অনুবাদ- “ ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ হতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহবান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও। সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ কর। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চুড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।” (বাংলাদেশ গেজেট, সংবিধানের পঞ্চদেশ সংশোধনী, ৩ জুলাই ২০১১)। স্বাধীনতার  এ ঘোষণা বাংলাদেশের সকল স্থানে তদানীন্তন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটার, টেলিগ্রাম ও টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান চট্টগ্রামের মাধ্যমে বেতার কেন্দ্র থেকে একবার এবং সন্ধ্যায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বার প্রচার করেন। ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় একই বেতার কেন্দ্র হতে সামরিক অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার সমর্থনে বক্তব্য প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং এর প্রতি বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর সমর্থন ও অংশগ্রহণের খবরে স্বাধীনতাকামী জনগণ উজ্জীবিত হয়।

প্রবাসী বাঙালি

প্রবাসী বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। বিভিন্ন দেশে তারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ে পার্লামেন্ট সদস্যদের নিকট ছুটে গিয়েছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় প্রতিনিধি দল প্রেরণ করেছে, পাকিস্তানকে অস্ত্র গোলাবারুদ সরবরাহ না করতে সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। এ ক্ষেত্রে বৃটেনের প্রবাসী বাঙ্গালিদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে তারা নিরলস কাজ করেছেন।

স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক যাত্রা

৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত কর্মসূচি এবং আহ্বানের প্রতি সকল স্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়। পূর্ব বাংলার সকল অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা বেগতিক দেখে ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করতে। এসময় ভুট্টোও ঢাকায় আসেন। অপরদিকে, গোপন আলোচনার নামে কালক্ষেপণ, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য. গোলাবারুদ এনে পূর্ব বাংলায় সামরিক প্রস্তুুতি গ্রহণ কনে। ১৭ মার্চ টিক্কা খান, রাও ফরমান আলী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ বা বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাকান্ড পরিচালনার নীলনকশা তৈরী কেরে। ২৫ মার্চ রাতে পৃথিবীর ইতিহাসে বর্বরতম গণহত্যা, ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ শুরু হয়। ইয়াহিয়া ও ভুট্টো ২৫ মার্চ গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। ইয়হিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির উপর ঝাঁতিয়ে পড়ে। হত্যা করে বহু মানুষকে। পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প, পিলখানা বিডিআর ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আক্রমণ চালায় এবং নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত করে, যা ইতিহাসের ২৫ মার্চের কালো রাত্রি নামে পরিচিত। ২৫ মার্চের কালো রাত্রিতেই অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং তা ওয়ারল্যাসে পাঠানো হয়।  ঐদিন রাত ১টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে গোপনে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের উপ-রাস্ট্রপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে বেগমান ও সফল করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান। সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ও পরিচালক ছিলেন

রাজনৈতিক দল

বাংদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী প্রধান রাজনৈতিক দলটি হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। রাজনৈতিক নেতৃত্বই মুক্তিযুদ্ধের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করে। আওয়ামী লীগ প্রথমে পূর্ব বাংলার জনগণকে স্বাধিকার আন্দোলনে সংগঠিত করে, এরপর ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর জনগণকে স্বাধীনতা আনয়নে উদ্বুদ্ধ করে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাংলাদেশ সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধুর সাধীনতার ঘোষণাকে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। ২৫ মার্চের পর রাজনৈতিক নেতৃত্ব সংগঠিত হয়ে সরকার গঠন, মুক্তিবাহিনী গঠন, বিদেশে জনমত সৃষ্টিও সমর্থন আদায়, যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ এবং জনগণের মনোবল অটুট রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধকে সফল করার ক্ষেত্রে শক্তি, মেধা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে সক্ষম হন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান, ভারতে ১ কোটি শরণার্থীর ত্রাণ ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা, মুক্তিযোদ্ধা ও গেরিলা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, স্বাধীন বাংলাবেতার কেন্দ্র পরিচালনা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ ছাড়াও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাপ (মোজাফ্ফর), কমিউনিষ্ট পার্টি, জাতীয় কংগ্রেস ইত্যাদি। এসব দলের নেতা ও কর্মীরা অনেকেই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

জর্জ হ্যারিসন

১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের দিঙ্গুলোতে বৃটেনের প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে বিবিসি এবং লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা বাঙালিদের উপর পাক বাহিনীর নির্মম হত্যা এবং বাঙ্গালিদের সংগ্রাম ও প্রতিরোধ, ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের করুণ অবস্থা, পাক বাহিনীর গণহত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি সম্বন্ধে জাগ্রত করে তোলে। লন্ডন ছিল বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারের প্রধান কেন্দ্র। লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী জর্জ হ্যারিসন মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি ও দানসহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে ৪০০০০ লোকের সমাগমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী গান পরিবেশন করেন। বৃটেন ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, পশ্চিম জার্মানী, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান ও কানাডার প্রচারমাধ্যমগুলো পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে সাহায্য করে। ইরাক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ, প্রচার মাধ্যম, কংগ্রেসের অনেক সদস্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সোচ্চার ছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়ন

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের পর সর্বাধিক অবদান রাখে সোভিয়েত ইউনিয়ন। পাকবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ,নারী-নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে আহবান জানান। তিনি ইয়াহিয়াকে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্যও বলেন। সোভিয়েত পত্র পত্রিকা, প্রচার মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে পাক বাহিনীর নির্যাতন প্রচার করে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধবন্ধের প্রস্তাব সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘ভেটো’ দিয়ে বাতিল করে দেয়।বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেমন- সোভিয়েত ইউনিয়ন, কিউবা, যুগোশ্লাভিয়া,পোল্যাণ্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া, পূর্ব-জার্মানি প্রভৃতি সমর্থন জানায়।

ভারত

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি সমর্থন জানায় প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রির বীভৎস হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী ন’মাস ধরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী যে নারকীয় গণহত্যা, লুন্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, ভারত তা বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরে। লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয়, মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, অস্ত্র সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তান ভারতে বিমান হামলা চালায়। ভারত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী ‘যৌথ কমান্ড’ গড়ে তোলে। যৌথ বাহিনীর তীব্র আক্রমণের ফলে ৯৩ হাজার পাক সেনা নিঃশর্তে যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ভারতের বহু সৈন্য এতে প্রাণ হারায়।

মুজিবনগরের কার্যক্রম

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুজিবনগর সরকার গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের নামে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকানঙ্কে নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘মুজিবনগর সরকার’ গঠন করা হয়। ঐ দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আদেশ’। মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল।

মুজিবনগর স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের কাঠামো নিম্নরূপঃ

১।রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

২।উপ-রাষ্ট্রপতি- সৈয়দ নজরুল ইসলাম

৩।প্রধানমন্ত্রী- তাজউদ্দিন আহমদ

৪।অর্থমন্ত্রী- এম মনসুর আলী

৫।স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী- এ এইচ এম কামরুজ্জামান

৬।পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী- খন্দকার মোশতাক আহমেদ

স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে উপদেশ ও পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়।ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী,ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, কমিউনিস্ট পার্টির কমরেড মনিসিং, জাতীয় কংগ্রেসের শ্রী মনোরঞ্জন ধর, তাজউদ্দিন আহমেদ ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ এই ৬ জন ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য

১৯৭০-৭১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য দ্বারা মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি করা ছিল এ সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য।

বাঙালি কর্মকর্তাদের নিয়ে সরকার প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করে। এতে মোট ১২ টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ছিল। এগুলো হচ্ছে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ-শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়, সাধারণ প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিভাগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন, যুব ও অভ্যর্থনা শিবিরের নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ইত্যাদি। মুজিবনগর সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরে (কলকাতা,দিল্লি, লন্ডন, ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক,স্টকহোম) বাংলাদেশ সরকারের মিশন স্থাপন করে।সরকার বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দান করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব নেতৃত্ব এবং জনমতের সমর্থন আদায়ের জন্য কাজ করেন। ১০ এপ্রিল সরকার ৪ টি সামরিক জোনে বাংলাদেশকে ভাগ করে ৪ জন সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করে। ১১ এপ্রিল তা পুনঃনির্ধারিত করে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু সাব-সেক্টর এবং তিনটি ব্রিগেড ফোর্স গঠিত হয়। এ সব বাহিনীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা, সেনা সদস্য, পুলিশ, ইপি আর, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যগণ যোগদান করেন। প্রতিটি সেক্টরেই নিয়মিত সেনা, গেরিলা ও সাধারণ যোদ্ধা ছিল। এরা মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিফৌজ নামে পরিচিত ছিল। এ সব বাহিনীতে দেশের ছাত্র, যুবক, নারী, কৃষক, রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নিয়েছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাগণ মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে দেশকে পাকিস্তানিদের দখলমুক্ত করার জন্য রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করেছেন, অনেকেই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন।

ছাত্র সমাজ

পাকিস্তানের চব্বিশ বছরে বাঙালি জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে এদেশের ছাত্র সমাজ। ১৯৪৮ ও ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ ও ৬৪ সালের শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ছয়দফার আন্দোলন, ১৯৬৮ সালে ১১ দফার আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বিরাট অংশ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়। মুক্তিযুদ্ধে একক গোষ্ঠী হিসেবে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা বেশি ছিল।মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে মুজিব বাহিনী গঠিত হয়েছিল মূলতঃ ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র সমাজের মহান আত্মত্যাগ ব্যতীত স্বাধীনতা অর্জন কঠিন হত।

১৯৭৩

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সর্বপ্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠিত হয়।

পাচশালা

বঙ্গবন্ধু সরকার দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করার জন্য একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা কমিশন গঠন করে। কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক বঙ্গবন্ধুর সরকার যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বকেয়া সুদসহ কৃষি জমির খাজনা মওকুফ করে দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র

পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পদার্পণ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে, কারও প্রতি বৈরী আচরণ সমর্থন করবে না। তিনি ঘোষণা করেন, সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।- এ নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হবে। তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান এবং পুনর্গঠন সহোযোগিতা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করেন। ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যে ১৪০ টি দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বন্দরকে মাইনমুক্ত করার জন্য নানাভাবে সহযোগিতা প্রদান করে। অন্যান্য বন্ধুভাবাপন্ন দেশগূলোও এগিয়ে আসে।

আন্তর্জাতিক

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্য হয়। ১৯৭৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। বঙ্গবন্ধু সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় প্রথম ভাষণ প্রদান করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষ সংস্থার সদস্য পদ লাভ করে। বিশ্বশান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করে।বাংলাদেশ তখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক সম্মানের মর্যাদা লাভ করে।

সংবিধান

১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১০ এপ্রিল গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি ‘খসড়া সংবিধান প্রণয়ন’ কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি ১২ অক্টোবর খসড়া সংবিধান বিল আকারে গণপরিষদে পেশ করে। ৪ নভেম্বর উক্ত সংবিধান গণপরিষদে গৃহীত হয়। ১৬ ডিসেম্বর থেকে তা বলবৎ করা হয়। এ সংবিধানের মূলনীতি হচ্ছে- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। সংবিধানে সার্বজনীন ভোটাধিকার, মৌলিক অধিকার, ন্যায় বিচারসহ জনগণের সকল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার স্বীকৃত হয়।

জেল হত্যা

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর খুনিচক্র সেনাসদস্যগণ দেশত্যাগের পূর্বে খন্দকার মোশতাকের অনুমতি নিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে সেখানে বন্দি থাকা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী আইচ ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান কে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সংঘটিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে এর এক কলঙ্কময় অধ্যায়। এ ঘটনা মোশতাকের পতন ত্বরান্বিত করে। খুনিরা দেশত্যাগে বাধ্য হয়। এ হত্যাকাণ্ড ছিল ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত স্বাধীনতা বিরোধী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সম্মিলিত ষড়যন্ত্র ও নীলনক্সার বাস্তবায়ন। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর একই গোষ্টী হত্যাকান্ড পরিচালনা করে।

জিয়া

১৯৭১ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীর মেজর ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে পাঠ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক সংবিধান লঙ্ঘন করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করে। ২৪ আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নিযুক্ত করেন। ৩ নভেম্বরের সেনা অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাকের পতন ঘটে এবং জেনারেল জিয়া গৃহবন্দি হন। ৭ নভেম্বর পাল্টা সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ এস এম সায়েম প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। কিন্ত ১৯৭৬ সালের ৩ নভেম্বর জিয়া নিজেকে প্রধান সামরিক আইন শাসক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত করেন। জেনারেল জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭২ এর সংবিধানে প্রণীত যেসব মৌলিক নীতি ও চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পরিচালিত হয়ে আসছিল তার বেশির ভাগই বাতিল করে দেওয়া হয়। ৭ নভেম্বর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন্ সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহেরকে ১৯৭৬ সালে সামরিক আদালতের প্রহসনের বিচার শেষে তারই আদেশে ফাঁসি দেওয়া হয়। ১৫ আগস্ট সহ বর্বরোচিত হত্যাকণ্ডের বিচার করা যাবে না মর্মে কুখ্যাত ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশের মূল হোতাও তিনি ছিলেন।

সংবিধান

১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল লিখিত। পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ছিল দুষ্পরিবর্তনীয়। সংবিধানে বাংলাদেশকে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জাতীয় সংসদ সার্বভৌম আইন প্রণয়নকারী সংস্থা। এ সংবিধানে বাংলাদেশকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র’ হিসেবে বলা হয়। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস- সংবিধানের এ ঘোষণা দ্বারা জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সংবিধানকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইনের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এ সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। সংবিধানের ৭৭ নং অনুচ্ছেদে ন্যায়পাল সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ১৮ বছর বয়স্ক যে কোন নাগরিক ‘এক ব্যক্তি এক ভোট’ এ নীতির ভিত্তিতে সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের আইনসভা এক কক্ষ বিশিষ্ট হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সময়ে এ পর্যন্ত ১৫ বার সংশোধন করেছে। তন্মধ্যে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনী, জেনারেল এরশাদের সপ্তম সংশোধনী এবং ত্রয়োদশ সংশোধনী সুপ্রীম কোর্ট কতৃক বাতিল হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা

পাকিস্তান আমলে বাঙ্গালাদেশ ভূখণ্ডে প্রায় ৩৮ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। এগুলোতে কর্মরত শিক্ষকগণ সরকারের কাছ থেকে যৎসামান্য বেতন-ভাতা পেতেন। বঙ্গবন্ধু সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে।

বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরত এ খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই কমিটি ১৯৭৪ সালে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির রূপরেখা প্রণয়ন করে।

দ্বিতীয় বিপ্লব

মুক্তিযুদ্ধের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ যখন ব্যস্ত তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মুল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সংকট, ১৯৭৩-৭৪ সালে বন্যায় দেশে খাদ্যোৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়। ফলে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়। দেশের অভ্যন্তরে মওজুদদার, দুর্নীতিবাজ এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্টী তৎপর হতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর সরকার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন দল নিয়ে কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করে। এটিকে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেন।

জাতিসংঘ

বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা জাতিসংঘের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান যখন বাঙালি নিধনে তৎপর  তখন জাতিসংঘ বলতে গেলে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, মৌলিক মানব অধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে ‘ভেটো’ ক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের বাইরে জাতিসংঘের নিজস্ব উদ্যোগে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা ছিল সীমিত।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ২ এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ইয়াহিয়া খানকে গণহত্যা বন্ধ ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানিয়েছিলেন?
ক) সোভিয়েত ইউনিয়ন
খ) চীন
গ) আমেরিকা
ঘ) কিউবা
সঠিক উত্তর: (ক)

২. সার্ক গঠন ও সার্ক-এর যাত্রা শুরুর সাথে বাংলাদেশের কোন সরকার জড়িত ছিল?
ক) জিয়া সরকার
খ) আওয়ামী সরকার
গ) অস্থায়ী সরকার
ঘ) সমাজতান্ত্রিক সরকার
সঠিক উত্তর: (ক)

৩. ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কী নামে পরিচিত?
ক) কালরাত
খ) অপারেশন নাইট
গ) শেষরাত
ঘ) হত্যা রজনী
সঠিক উত্তর: (ক)

৪. মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র ‘স্বাধীন বাংলা’ বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রে পরিণত হয়। বেতার কেন্দ্রটির নাম কী?
ক) ঢাকা সম্প্রচার কেন্দ্র
খ) রংপুর সম্প্রচার কেন্দ্র
গ) আকাশবানী সম্প্রচার কেন্দ্র
ঘ) কালুরঘাট সম্প্রচর কেন্দ্র
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫. খন্দকার মোশতাক আহমদ মুজিবনগর সরকারের কোন দায়িত্ব পালন করেন?
ক) অর্থমন্ত্রী
খ) পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী
গ) রাষ্ট্রপতি
ঘ) উপ-রাষ্ট্রপতি
সঠিক উত্তর: (খ)

৬. কোন সরকার মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সুসম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থানে ভূমিকা রেখেছিল?
ক) মোশতাক সরকার
খ) আওয়ামী লীগ সরকার
গ) ছাত্তার সরকার
ঘ) জিয়া সরকার
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৭. মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া শরনার্থীদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহের দায়িত্বে কোন নেতা নিয়োজিত ছিলেন?
ক) এ এইচ এম কামরুজ্জামান
খ) খন্দকার মোশতাক আহমেদ
গ) কমরেড মনি সিং
ঘ) মওলানা ভাসানী
সঠিক উত্তর: (ক)

৮. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন?
ক) কে এম শফিউল্লাহ
খ) এ কে খন্দকার
গ) এম এ জি ওসমানী
ঘ) মেজর জিয়াউর রহমান
সঠিক উত্তর: (গ)

৯. পাকিস্তানের কোন নেতা ইয়াহিয়া খান আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদানে অস্বীকৃতি জানায়?
ক) জুলফিকার আলী ভুট্টো
খ) জিয়াউল হক
গ) আইআই চূন্দ্রীগড়
ঘ) মওলানা ভাসানী
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ এগুলো বাংলাদেশের কী?
ক) প্রশাসনিক দলিল
খ) মূলনীতি
গ) মানদন্ড
ঘ) দর্পণ
সঠিক উত্তর: (খ)

১১. স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে উপদেশ ও পরামর্শ দেন –
i. একটি উপদেষ্টা পরিষদ
ii. একটি মনোনয়ন বোর্ড
iii. একটি বিশেষ কমিটি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১২. কততম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংবিধানে পুনরায় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত হয়?
ক) ৫ম
খ) ৬ষ্ঠ
গ) ৭ম
ঘ) ৮ম
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক আইন জারির প্রায় কত মাস পরে রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হয়েছিলেন?
ক) প্রায় ৫ মাস
খ) প্রায় ৮ মাস
গ) প্রায় ৯ মাস
ঘ) প্রায় ১০ মাস
সঠিক উত্তর: (গ)

১৪. জাতি মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা করবে, কেননা –
i. তাঁরা আমাদের সূর্যসন্তান
ii. মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে তাঁরা যুদ্ধ করেছেন
iii. দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৫. জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলো হলো –
i. ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীর হার কমেছে
ii. শ্রেণিতে মেয়ে শিক্ষার্থীর হার বেড়েছে
iii. বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

১৬. পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতি প্রদান করা হয় কত সালে?
ক) ১৯৫৪
খ) ১৯৫৫
গ) ১৯৫৬
ঘ) ১৯৬৮
সঠিক উত্তর: (গ)

১৭. দেশের বাইরে কোন শহরে মুজিবনগর সরকারের মিশন স্থাপিত হয়েছিল?
ক) আমস্টার্ডাম
খ) জেনেভা
গ) স্টকহোম
ঘ) মস্কো
সঠিক উত্তর: (গ)

১৮. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে চরমপত্র পাঠ করতেন কে?
ক) বেলাল আহমেদ
খ) এম. আর. আখতার মুকুল
গ) আবদুল জব্বার
ঘ) আপেল মাহমুদ
সঠিক উত্তর: (খ)

১৯. ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ পরিচালিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর পরিকল্পনার সাথে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিরা হলো –
i. টিক্কা খান
ii. রাও ফরমান আলী
iii. জুলফিকার আলী ভুট্টো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২০. ১৯৭১ সালে গঠিত সংগ্রাম পরিষদে কোন শ্রেণির নারীর অংশগ্রহণ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল?
ক) কিশোরীদের
খ) যুবতীদের
গ) বিধবাদের
ঘ) ছাত্রীদের
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২১. মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনী গঠিত হয়েছিল কাদের নিযে?
ক) সৈনিকদের
খ) শিল্পীদের
গ) ছাত্র-ছাত্রীদের
ঘ) শিক্ষকদের
সঠিক উত্তর: (গ)

২২. বাংলাদেশে সংবিধানের কোন সংশোধনীর মাধ্যমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বৈধতা লাভ করেছিল?
ক) ৪র্থ সংশোধনী
খ) ৫ম সংশোধনী
গ) ৬ষ্ঠ সংশোধনী
ঘ) ৭ম সংশোধনী
সঠিক উত্তর: (খ)

২৩. বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আমলের ২৪ বছরের মধ্যে কত বছর কারাগারে কাটান?
ক) ১২
খ) ১৩
গ) ১৪
ঘ) ১৫
সঠিক উত্তর: (ক)

২৪. বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালের সংবিধানে নাগরিকদের যে সকল অধিকার প্রদান করে সেগুলো হলো –
i. মৌলিক অধিকার
ii. অর্থনৈতিক সাম্যের অধিকার
iii. ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২৫. ১৯৭১ সালের কত তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়?
ক) ২৩ মার্চ প্রথম প্রহরে
খ) ২৫ মার্চ প্রথম প্রহরে
গ) ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে
ঘ) ২৭ মার্চ প্রথম প্রহরে
সঠিক উত্তর: (গ)

২৬. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে কে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন?
ক) এম এ হান্নান শাহ
খ) সৈয়দ নজরুল ইসলাম
গ) মেজর জিয়াউর রহমান
ঘ) তাজউদ্দিন আহমদ
সঠিক উত্তর: (ক)

২৭. বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে গঠিত গণপরিষদের মূল লক্ষ্য কী ছিল?
ক) যুদ্ধপরাধীর বিচার করা
খ) সংবিধান প্রণয়ন করা
গ) নির্বাচন পরিচালনা করা
ঘ) দেশের শাসন কাজ পরিচালনা
সঠিক উত্তর: (খ)

২৮. জিয়াউর রহমানের শাসনামলে –
i. পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়
ii. সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়
iii. সামরিক বাহিনীর মধ্যে বেশ কিছু অভ্যুত্থান হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২৯. বাংলাদেশের সংবিধান সংরক্ষণ করা হয়েছে –
i. মালিকানা নীতি
ii. সর্বজনীন ভোটাধিকার
iii. মৌলিক অধিকার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩০. ৭ মার্চের ভাষণ থেকে বাঙালিরা পায় –
i. সান্ত্বনা ও সহনশীল হওয়ার উপদেশ
ii. ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা
iii. মুক্তিযুদ্ধের নির্দেশনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৩১. রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর কে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন?
ক) বিচারপতি আবদুস সাত্তার
খ) বিচারপতি এ এস এম সায়েম
গ) জেনারেল এরশাদ
ঘ) মেজর মঞ্জুর
সঠিক উত্তর: (ক)

৩২. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুক্ত ছিলেন –
i. ১৯৬৬-এর ছয় দফার সাথে
ii. ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সাথে
iii. ১৯৭০-এর নির্বাচনের সাথে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৩. বঙ্গবন্ধুর সরকারের পররাষ্ট্রনীতি ক্ষেত্রে সাফল্য হলো –
i. মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাহায্য দান
ii. ১৪০টি দেশের স্বীকৃতি আদায়
iii. পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৪. ইয়াহিয়া খান ঢাকা আসেন কেন?
ক) বঙ্গবন্ধুর সাথে আলোচনা করতে
খ) ক্ষমতা হস্তান্তর করতে
গ) বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেতে
ঘ) অধিবেশনে যোগদান করতে
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু করেছিলেন কারা?
ক) ঢাকা বেতারের কর্মীরা
খ) রাজশাহী বেতারের কর্মীরা
গ) চট্টগ্রাম বেতারের কর্মীরা
ঘ) খুলনা বেতারের কর্মীরা
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৬. মোজাম্বিকের সামরিক বাহিনীর অধস্তন অফিসাররা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সেনাপ্রধানকে গৃহবন্দি করে। পরবর্তীতে অপর অভ্যুত্থানে সেনাপ্রধান মুক্ত হন। মোজাম্বিকের সেনাপ্রধানের সাথে কার সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়?
ক) জেনারেল এরশাদের
খ) জেনারেল জিয়াউর রহমানের
গ) জেনারেল শফিউল্লাহর
ঘ) জেনারেল মঈন উ আহমেদের
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৭. কোন শহরে ইয়াহিয়া খান আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল?
ক) ইসলামাবাদে
খ) করাচিতে
গ) ঢাকায়
ঘ) লাহোরে
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৮. মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী লিপ্ত ছিল –
i. লুটতরাজ
ii. অগ্নিসংযোগ
iii. মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৯. বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য কী?
ক) শিল্পায়ন
খ) ব্যবসা-বাণিজ্য করা
গ) দারিদ্র্য বিমোচন
ঘ) আমদানি বৃদ্ধিকরণ
সঠিক উত্তর: (গ)

৪০. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে কোন বিদেশি সংগীত শিল্পী ভূমিকা রেখেছিলেন?
ক) জেমস ব্রাউন
খ) জর্জ হ্যারিসন
গ) আলবার্ট কিং
ঘ) মাইকেল জ্যাকসন
সঠিক উত্তর: (খ)

৪১. কততম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল?
ক) ১ম
খ) ২য়
গ) ৩য়
ঘ) ৪র্থ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪২. মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি সেক্টরেই ছিল –
i. সেনা
ii. গেরিলা
iii. সাধারণ যোদ্ধা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৩. লিবিয়ার বর্তমান সরকার একটি নির্দেশ জারি করেছে যে, লিবিয়াতে যে গণহত্যা হয়েছে সেগুলোর বিচার করা যাবে না। এ নির্দেশ বাংলাদেশের কোন অধ্যাদেশের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক) মোবাইল কোর্ট অধ্যাদেশ
খ) ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ
গ) সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ
ঘ) বার কাউন্সিল অধ্যাদেশ
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৪. ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় কাদেরিয়া বাহিনী ছিল –
i. ২ সেক্টরের অধীনে
ii. কে ফোর্সের অধীনে
iii. স্থানীয় স্বতন্ত্র বাহিনী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৫. মুক্তিযুদ্ধে নারীরা অসমান্য অবদান রাখে –
i. অস্ত্রচালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে
ii. যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা-শুশ্রূষা করে
iii. মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান ও সেবা-শুশ্রূষা করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii ও iii
গ) i ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৬. বিএনপি ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতটি আসন লাভ করে?
ক) ১৮০টি
খ) ১৯৭টি
গ) ২০৭টি
ঘ) ২২০টি
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৭. ছয় দফা দাবি কে উত্থাপন করেন?
ক) মওলানা ভাসানী
খ) শামসুল হক
গ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ঘ) এ কে ফজলুল হক
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৮. বঙ্গবন্ধু দেশের উন্নয়নে কী শুরু করেছিলেন?
ক) দ্বিতীয় বিপ্লব
খ) ভিশন-২০০০
গ) ভিশন বাংলাদেশ
ঘ) বাংলাদেশ-৭১
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৯. যুগোশ্লাভিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হতো?
ক) ধনতান্ত্রিক
খ) সমাজতান্ত্রিক
গ) রাজতান্ত্রিক
ঘ) গণতান্ত্রিক
সঠিক উত্তর: (খ)

৫০. মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে মুজিববাহিনী গঠিত হয়েছিল –
i. সাধারণ জনগণ নিয়ে
ii. ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে
iii. পেশাজীবীদের নিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-291 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম -দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – ১: পূর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উত্থান

এস. এস. সি. বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বহুনির্বাচনী সাজেশন

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

 অধ্যায় – ১

বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন

পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই এই রাষ্ট্রের ভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ১৯৩৭ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করলে বাঙ্গালিদের নেতা শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হক এর বিরোধিতা করেন। ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা যখন প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়, তখনই বিতর্কটি পুনরায় শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের ১৭ মে তারিখ চৌধুরী খলীকুজ্জামান এবং জুলাই মাসে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন। তাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার ভাষা বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এবং ড.মুহাম্মদ এনামুল হকসহ বেশ ক’জন বুদ্ধিজীবী এ প্রসঙ্গে প্রবন্ধ লিখে প্রতিবাদ জানান। ১৯৪৭ সালে কামরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত গণ আজাদী লীগ মাতৃভাষায় ‘শিক্ষা দান’ এর দাবি জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিশ নামক একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ৬-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত উক্ত সংগঠনের যুবকর্মী সম্মেলনে ‘বাংলাকে শিক্ষা ও আইন আদালতের বাহন’ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর এ সংগঠন ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। এ সময়ে তমদ্দুন মজলিশ ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে.১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে করাচীতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।  ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের ভাষা হিসেবে ইংরেজি এবং উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান। তার দাবি অগ্রাহ্য হলে ২৬ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়। ১১ মার্চ ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ঐ দিন সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সাথে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত সভায় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।  ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনেও তিনি অনুরূপ ঘোষণা দিলে ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে এবং ‘না,না’ বলে তার উক্তির প্রতিবাদ জানায়। পাকিস্তান সরকার আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগ নিলে প্রতিবাদ আরো তীব্র হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পূর্ব বাংলায় ভাষাকেন্দ্রিক যে আন্দোলন শুরু হয় তা ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।

১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন জিন্নাহকে অনুসরণ করে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। আবদুল মতিনকে আহবায়ক করে নতুন সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। 

ভাষার দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প করা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ সভা সমাবেশ, মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হ্য়। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১০ জন করে মিছিল শুরু করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে। পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি বর্ষণ করলে আবুল বরকত, জব্বার,রফিক, সালামসহ অনেকে শহিদ হন.২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশাল শোক র‍্যালি বের হয়। এখানেও পুলিশের হামলায় শফিউর নামে একজনের মৃত্যু হয়।

শহিদদের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য ঢাকায় ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি শহিদ মিনার স্থাপন করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি শফিউরের পিতাকে দিয়ে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ উক্ত শহিদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শীর্ষক প্রথম কবিতা এবং তরুণ কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি রচনা করেন। এ সব হত্যাকাণ্ড পূর্ব বাংলার জনগণের মনের উপর বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আবদুল গাফফার চৌধুরী ড়োচোণা করেন, ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’, সঙ্গীতশিল্পী আবদুল লতিফ রচনা ও সুর করেন,’ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’, এছাড়া ‘তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি’র মত সঙ্গীত। ড.মুনীর চৌধূরী জেলে বসে রচনা করেন ‘কবর’ নাটক, জহির রায়হান রচনা করেন ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসটি।  ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ লাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাশাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নিজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠী মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস ও আত্মপ্রত্য্য খুঁজে পায়।

পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই এই রাষ্ট্রের ভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ১৯৩৭ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করলে বাঙ্গালিদের নেতা শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হক এর বিরোধিতা করেন। ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা যখন প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়, তখনই বিতর্কটি পুনরায় শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের ১৭ মে তারিখ চৌধুরী খলীকুজ্জামান এবং জুলাই মাসে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন। তাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার ভাষা বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এবং ড.মুহাম্মদ এনামুল হকসহ বেশ ক’জন বুদ্ধিজীবী এ প্রসঙ্গে প্রবন্ধ লিখে প্রতিবাদ জানান। ১৯৪৭ সালে কামরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত গণ আজাদী লীগ মাতৃভাষায় ‘শিক্ষা দান’ এর দাবি জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিশ নামক একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ৬-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত উক্ত সংগঠনের যুবকর্মী সম্মেলনে ‘বাংলাকে শিক্ষা ও আইন আদালতের বাহন’ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর এ সংগঠন ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। এ সময়ে তমদ্দুন মজলিশ ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে.১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে করাচীতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।  ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের ভাষা হিসেবে ইংরেজি এবং উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান। তার দাবি অগ্রাহ্য হলে ২৬ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়। ১১ মার্চ ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ঐ দিন সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সাথে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত সভায় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।  ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনেও তিনি অনুরূপ ঘোষণা দিলে ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে এবং ‘না,না’ বলে তার উক্তির প্রতিবাদ জানায়। পাকিস্তান সরকার আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগ নিলে প্রতিবাদ আরো তীব্র হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পূর্ব বাংলায় ভাষাকেন্দ্রিক যে আন্দোলন শুরু হয় তা ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।

১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন জিন্নাহকে অনুসরণ করে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। আবদুল মতিনকে আহবায়ক করে নতুন সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। 

ভাষার দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প করা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ সভা সমাবেশ, মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হ্য়। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১০ জন করে মিছিল শুরু করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে। পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি বর্ষণ করলে আবুল বরকত, জব্বার,রফিক, সালামসহ অনেকে শহিদ হন.২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশাল শোক র‍্যালি বের হয়। এখানেও পুলিশের হামলায় শফিউর নামে একজনের মৃত্যু হয়।

শহিদদের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য ঢাকায় ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি শহিদ মিনার স্থাপন করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি শফিউরের পিতাকে দিয়ে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ উক্ত শহিদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শীর্ষক প্রথম কবিতা এবং তরুণ কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি রচনা করেন। এ সব হত্যাকাণ্ড পূর্ব বাংলার জনগণের মনের উপর বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আবদুল গাফফার চৌধুরী ড়োচোণা করেন, ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’, সঙ্গীতশিল্পী আবদুল লতিফ রচনা ও সুর করেন,’ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’, এছাড়া ‘তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি’র মত সঙ্গীত। ড.মুনীর চৌধূরী জেলে বসে রচনা করেন ‘কবর’ নাটক, জহির রায়হান রচনা করেন ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসটি।  ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ লাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাশাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নিজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠী মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস ও আত্মপ্রত্য্য খুঁজে পায়।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভূমিকা

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলার জনগণ পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র এবং একই সঙ্গে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো বুঝতে পারে। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ বাঙ্গালি হওয়ার পরও রাষ্ট্র পরিচালনা, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগসহ সর্বক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃত্ব শুরু করে। বাঙ্গালি তথা পূর্ব বাংলার মানুষ মানুষ সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে থাকে। তখন রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের মধ্যে তিনটি ধারা লক্ষ করা যায়। এগুলো হচ্ছে ১। পাকিস্তানের প্রতি অনুগত রাজনৈতিক দল যেমন, মুসলিম লীগ ও ইসলাম নামধারী দলসমূহ জামাতে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম। ২। পূর্ব বাংলার স্বার্থ রক্ষার জন্য সোচ্চার রাজনৈতিক দল। যেমন, আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, ৩। সাম্যবাদী আদর্শের রাজনৈতিক ধারা।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলার জনগণ পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র এবং একই সঙ্গে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো বুঝতে পারে। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ বাঙ্গালি হওয়ার পরও রাষ্ট্র পরিচালনা, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগসহ সর্বক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃত্ব শুরু করে। বাঙ্গালি তথা পূর্ব বাংলার মানুষ মানুষ সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে থাকে। তখন রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের মধ্যে তিনটি ধারা লক্ষ করা যায়। এগুলো হচ্ছে ১। পাকিস্তানের প্রতি অনুগত রাজনৈতিক দল যেমন, মুসলিম লীগ ও ইসলাম নামধারী দলসমূহ জামাতে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম। ২। পূর্ব বাংলার স্বার্থ রক্ষার জন্য সোচ্চার রাজনৈতিক দল। যেমন, আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, ৩। সাম্যবাদী আদর্শের রাজনৈতিক ধারা।

সামরিক শাসন ও পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ

পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক সামরিক-বেসামরিক শাসক গোষ্ঠী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকারের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের পরস্পর বিরোধী এমএলএদের মধ্যে মারামারির মতো এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীকালে হাসপাতালে মারা যান। এরই সুযোগ নিয়ে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা হচ্ছেঃ ১। ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল, ২। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙ্গে দেওয়া, ৩। রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা, ৪। শেখ মুজিবসহ বেশ ক’জন নেতাকে জেলে প্রেরণ ও ৫। সকল মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া।

পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক সামরিক-বেসামরিক শাসক গোষ্ঠী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকারের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের পরস্পর বিরোধী এমএলএদের মধ্যে মারামারির মতো এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীকালে হাসপাতালে মারা যান। এরই সুযোগ নিয়ে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা হচ্ছেঃ ১। ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল, ২। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙ্গে দেওয়া, ৩। রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা, ৪। শেখ মুজিবসহ বেশ ক’জন নেতাকে জেলে প্রেরণ ও ৫। সকল মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া।

ছয় দফার গুরুত্ব

৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে। আইয়ুব সরকার একে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি’ উল্লেখ করে। এ কর্মসূচি বাঙ্গালি জাতির চেতনা-মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা না বললেও বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তাই এটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। পাকিস্তান সরকার এটি গ্রহণ না করে দমন পীড়া শুরু করলে আন্দোলন অনিবার্য হয়ে উঠে।

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙ্গালিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করত। মোট অফিসারের মাত্র ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, নৌবাহিনীর উচ্চ পদে ১৯%, নিম্নপদে ৯%, বিমান বাহিনীর পাইলটের ১১% ও টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙ্গালি। 

অর্থনৈতিক বৈষম্য

পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ব বাংলার চাইতে পশ্চিম পাকিস্তান অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। যেমন, ১৯৫৫-১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও বেড়ে যায়। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬৪৮০ মিলিয়ন টাকা, আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা।ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তান কয়েকগুণ পিছিয়ে পড়ে।

যুক্তফ্রন্ট গঠন নির্বাচন ও সরকার

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর শাসক দল মুসলিম লীগ দীর্ঘদিন নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার গঠনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এছাড়া প্রাদেশিক সরকার নিয়ে কেন্দীয় সরকারের টালবাহানা পূর্ব বাংলার জনগনের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠে। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম মীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটানোর লক্ষ্যে ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২১ দফা প্রণয়ন শেষে ৪ টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।দল ৪ টি হলঃ আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম এবং গণতন্ত্রী দল। ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জনগণ যুক্তফ্রন্টের ২১ দফাকে তাদের স্বার্থ রক্ষার সনদ বিবেচনা করে। 

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী শহিদ দিবস হিসাবে দেশব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী শহিদ মিনারে নগ্ন পায়ে হেঁটে ফুল অর্পণ করে আমরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বাঙ্গালি জাতির কাছে এটি একটি শোকের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। কানাডা প্রবাসী কয়েকজন বাঙ্গালির উদ্যোগ ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকারের কুটনৈতিক তৎপরতার ফলে ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী জাতিসংঘের শিক্ষা,বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো  ২১ ফেব্রুয়ারী্র শহিদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। পৃথিবীতে ৬০০০ এর বেশি ভাষা রয়েছে। এ সব ভাষার মানুষ সেই থেকে বাংলাদেশের শহিদ দিবসের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নিজেদের ভাষার মর্ম নতুনভাবে বুঝতে শিখেছে। আমাদের দেশেও বাংলা ভাষার পাশাপাশি বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। আমরা ঐসব ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে সচেষ্ট হব।

সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন

আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬১ সালেই পূর্ব বাংলায় আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬২ সালের জানুয়ারী মাসে বাঙ্গালিদের প্রিয় নেতা ও পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করা হলে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুবের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে। ঐ সময় ছাত্র সমাজ ১৫ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করে। শিক্ষানীতি বিষয়ক আন্দোলনে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও অংশগ্রহণ করে। এই সঙ্গে সাংবিধানিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠিত হয়। এই সংগঠন আইয়ুব খানের শাসন বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলে। ১৯৬৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক শাসন বিরোধী বক্তব্য নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ পায়। 

৬ দফা

পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যোগদান করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ৬ দফা তুলে ধরেন। দফাগুলো হচ্ছে-

১)যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাধীনে সংসদীয় পদ্ধতিতে সরকার হবে। সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠান। 

২)কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে মাত্র দুটি থাকবে; প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।অন্যান্য সকল বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।

৩)সারাদেশে হয় অবাধে বিনিময়যোগ্য দুধরনের মুদ্রা,না হয় বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে একই ধরনের মুদ্রা করা যাবে।

৪)সকল প্রকার কর ধার্‍য্য করার ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। আঞ্চলিক সরকারের আদায়কৃত রাজস্বের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।  

৫)অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মালিক হবে, এর নির্ধারিত অংশ তারা কেন্দ্রে দিবে।

৬)অঙ্গরাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধা সামরিক বাহিনী করার ক্ষমতা দেওয়া।

যুক্তফ্রন্ট সরকার

১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল যুক্তফ্রন্টভুক্ত কৃষক শ্রমিক-পার্টির নেতা এ কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। আদমজি পাটকল ও কর্ণফুলী কাগজের কলে বাঙ্গালি-অবাঙ্গালি দাঙ্গাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। উল্লেখ্য পাকিস্তান সরকারের ইন্ধনে ঐ দাঙ্গা হয়েছিল। শেরে বাংলাকে গৃহবন্দী করা হয়, শেখ মুজিবসহ তিন হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। এর মাধ্যমে পূর্ব বাংলার প্রতি পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর চরম বৈরী মনোভাব প্রকাশ পায়। পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের অরাজক শাসনের পর্ব শুরু হয়। কেন্দ্র এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন হতে থাকে। অবশেষে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করে সংকট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গণতন্ত্র থেকে বিচ্যুত হয়ে সামরিক শাসন জারি করে পাকিস্তান রক্ষার শেষ চেষ্টা করা হয়। 

উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণের স্বতঃসফূর্ত অংশগ্রহণে ১৯৬৯ সালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংঘটিত হয়। ইতিহাসে এটি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। এটি বিপ্লবাত্মক রূপ সংগ্রহ করে। সকল গণতান্ত্রিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও মানুষ যার যার অবস্থান থেকে এ আন্দোলনে যুক্ত হয়। এ আন্দোলনে যুক্ত হতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা শহিদ হন। প্রদেশব্যাপী ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক সহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষ রাস্তায় নামে। সর্ব স্তরের মানুষের আন্দোলনের ফলে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান শেখ মুজিবুর রহমান কে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। অন্য নেতৃবৃন্দকেও মুক্তি দেওয়া হয়।  আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ফলে সামরিক শাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

২১ দফা

১।বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।

২।বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ, সকল প্রকার মধ্যস্বত্ব ও সার্টিফিকেট প্রথা বাতিল করা  হবে।

৩। পাট ব্যবসাকে বাণিজ্যকরণ, পাটের ন্যায্যমূল্য প্রদান এবং পাট কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা।

৪। সমবায় কৃষি ব্যবস্থার প্রবর্তন,কুটির ও হস্তশিল্পের উন্নতি সাধন

৫।পূর্ব বাংলার লবণ শিল্পের সম্প্রসারণ ও লবণ কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা

৬। বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন

৭। সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বন্যানিয়ন্ত্রণ ও দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধের ব্যবস্থা।

৮। পূর্ব বাংলাকে শিল্পায়িত ও শ্রনিকদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার রক্ষা

৯। অবৈতনিক বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন,শিক্ষকদের ন্যায়সঙ্গত বেতন ও ভাতার ব্যবস্থা

১০। বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দান

১১। ঢাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও কালাকানুন বাতিল

১২। প্রশাসনিক ব্যয় সংকোচন, উচ্চ ও নিম্নবেতনভুক্ত কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য হ্রাস

১৩। সকল প্রকার দুর্নীতি নির্মূল

১৪। রাজবন্দিদের মুক্তিদান, বাকস্বাধীনতা, সভাসমিতি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত

১৫। শাসন বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথক করা

১৬। বর্ধমান হাউসকে ছাত্রাবাস ও বাংলা ভাষা সাহিত্যের গবেষণাগার করা

১৭। বাংলা ভাষা শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ

১৮। একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস ও সরকারি ছুটি ঘোষণা

১৯। ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ব বাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান

২০। নিয়মিত ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা

২১। পরপর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হলে মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে।

আইয়ুব খানের ক্ষমতা দখল

১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মীর্জাকে উৎখাত ও দেশত্যাগে বাধ্য করে ক্ষুমতা দখল এবং নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত করেন। সামরিক শাসন দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে তিনি মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মোট ৮০ হাজার  নির্বাচিত ইউ্নিয়ন কাউন্সিল সদস্য নিয়ে নির্বাচকমন্ডলী গঠন হবে। তাদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রাখা হয়। এটি ছিল পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি। ১৯৬৫ সাল ৮০ হাজার মেম্বারের ভোটে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সামরিক শাসনের ফলে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের হাতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য চরম আকারে ধারণ করতে থাকে।

1970

১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন।ইয়াহিয়া খান উক্ত পদে আসীন হন।তিনি ২৮ মার্চ এক ঘোষণায় পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর ‘এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, মুসলিম লীগ, পাকিস্তান পিপলস পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জামাত-ই-ইসলামি প্রভৃতি দল অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ৬ দফার পক্ষে গণভোট হিসেবে অভিহিত করে। নির্বাচনে ৫ কোটি  ৬৪ লাখ ভোটারের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের নির্ধারিত ১৬৯ টি আসনের ১৬৭ টি আসন লাভ করে। ১৭ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৩০০ টির মধ্যে ২৮৮ টি আসন আওয়ামী লীগ লাভ করে। 

যুদ্ধ

১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধ ১৭ দিন অব্যাহত ছিল। তখন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণরূপে অরক্ষিত ছিল। বিষয়টি পূর্ব পাকিস্তানের কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং বৈষম্যমূলক মনে হয়েছিল। এ সময় ‘ইসলাম বিপন্ন হওয়া’ রবীন্দ্র সঙ্গীতকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’, নজরুল ইসলামের গানে ‘হিন্দুয়ানি’র অভিযোগ তুলে এসবের চর্চা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। 

১৫ দফা

আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬১ সালেই পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাসে বাঙালিদের প্রিয় নেতা ও পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে শেখ মুজিবকে প্রেপ্তার করা হলে আন্দোলন রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আরো বেগবান হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুবের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। ঐ সময় ছাত্র সমাজ ১৫ দফা দাবি কর্মসূচি ঘোষণা করে। 

আওয়ামী লীগ

মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতাত্ত্বিক ধ্যান ধারণা থেকে বের হয়ে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাঙ্গালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজগার্ডেনে এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠন করে। সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ। শুরুতেই দলটি বাঙালিদের স্বার্থে একটি বিস্তৃত কর্মসুচি গ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, জনগণের সার্বভৌমত্ব, বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান, পাট ও চা শিল্প জাতীয়করণ, বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ, কৃষকদের মধ্যে জমি বণ্টন, সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ দলটি পাকিস্তানের সরকারের রোষানলে পড়ে। শেখ মুজিব ১৯৪৯ সালে কারাগারে প্রেরিত হন। ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্দী জীবন কাটান। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করে দলের নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। ফলে ধর্ম পরিচয় নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অধ্যায় – 1 এর বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পিডিএফ ডাউনলোড

১. কোন প্রতিষ্ঠান ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়?
 ক) ইউনিসেফ
 খ) ইউনেস্কো
 গ) ফাও
 ঘ) ইউএসএইড
সঠিক উত্তর: (খ)

২. পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয় কোন ক্ষেত্রে?
 ক) অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে
 খ) প্রশাসনিক ক্ষেত্রে
 গ) সামাজিক ক্ষেত্রে
 ঘ) সর্বক্ষেত্রে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩. ব্রিটিশরা ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। এ বিভক্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ছিল কোন তত্ত্বের?
 ক) বিকেন্দ্রীকরণ তত্ত্ব
 খ) কেন্দ্রীকরণ তত্ত্ব
 গ) দ্বিজাতি তত্ত্ব
 ঘ) বহুজাতিক তত্ত্ব
সঠিক উত্তর: (গ)

৪. ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী কী পালিত হয়?
 ক) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
 খ) আন্তর্জাতিক জন্মভূমি দিবস
 গ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
 ঘ) বিশ্ব ভাষা ও সংস্কৃতি দিবস
সঠিক উত্তর: (গ)

৫. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সকলকে কী করে বলে তুমি মনে কর?
 ক) জাগ্রত
 খ) ঐক্যবদ্ধ
 গ) চেতনাহীন
ঘ) উগ্র
সঠিক উত্তর: (খ)

৬. ‘আরেক ফাল্গুন’ কী?
 ক) নাটক
 খ) প্রবন্ধ
 গ) উপন্যাস
 ঘ) ছোটগল্প
সঠিক উত্তর: (গ)

৭. ভাষা আন্দোলন থেকে শিক্ষালাভ করা যায়-
i. অধিকার আদায়ের
ii. জাতীয়তাবোধ সৃষ্টির
iii. দেশপ্রেমের
নিচের কোনটি সঠিক?
 ক) i
 খ) i ও ii
 গ) i ও iii
 ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৮. কে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে উর্দুকে গ্রহণের প্রস্তাব করেছিলেন?
 ক) ইয়াহিয়া খান
 খ) স্যার সলিমুল্লাহ
 গ) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
 ঘ) শহীদ সোহরাওয়ার্দী
সঠিক উত্তর: (গ)

৯. ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে কী ঘটেছিল?
 ক) উর্দুকে পাকিস্তাতনের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়
 খ) ভরতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান
 গ) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিলুপ্তি
Ο ঘ) ব্রিটিশ ভাইসরয়ের পদত্যাগ
সঠিক উত্তর: (খ)

১০. কত সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে দেশব্যাপী পালিত হচ্চে?
 ক) ১৯৫২

 খ) ১৯৫৩
 গ) ১৯৫৪
 ঘ) ১৯৫৫
সঠিক উত্তর: (খ)

১১. ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্দেশ্য কী?
ক) ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
 খ) মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
 গ) রাজনীতিবিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
 ঘ) মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
সঠিক উত্তর: (ক)

১২. ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ কবে?
 ক) ২১ ফেব্রুয়ারি
 খ) ২৬ মার্চ
 গ) ১৯ জুন
 ঘ) ২১ আগস্ট
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. কাকে আহবায়ক করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নুতনভাবে গঠিত হয়?
 ক) শেখ মুজিব
 খ) শামসুল হক
 গ) আব্দুল মতিন
 ঘ) মহিউদ্দিন আহমেদ
সঠিক উত্তর: (গ)

১৪. ২১ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছিল-
i. আওয়ামী লীগ, কৃষক-শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও গণতন্ত্রী দলের সমন্বয়ে
ii. কৃষক-শ্রমিক পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও ন্যাপের সমন্বয়ে
iii. নজামে ইসলাম, গণতন্ত্রীদল ও আওয়ামী মুসলিম লীগের সমন্বয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
 ক) i
 খ) i ও ii
 গ) i ও iii
 ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৫. পূর্ব বাংলার জনগণ জাতীয়ভাবে নিজেদের বিকাশের জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল?
 ক) শাসকদের সঙ্গে আঁতাত
খ) মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা
 গ) সামরিক শক্তি অর্জন
ঘ) বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন
সঠিক উত্তর: (খ)

১৬. ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে গঠিত হয়েছিল কী নামে?
 ক) রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদ
 খ) বাংলা সংগ্রাম পরিষদ
 গ) বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন পরিষদ
 ঘ) পূর্ব বাংলা সংগ্রাম পরিষদ
সঠিক উত্তর: (ক)

১৭. পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার শতকরা কত ভাগ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা?
 ক) ৫২%
 খ) ৫৫%
 গ) ৫৬%
 ঘ) ৪৫%
সঠিক উত্তর: (গ)

১৮. ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুনের’ রচয়িতা কে?
 ক) জহির রায়হান
 খ) হুমায়ুন আহমেদ
 গ) আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
 ঘ) শহীদুল্লাহ কায়সার
সঠিক উত্তর: (ক)

১৯. পাকিস্তান সৃষ্টির কয়েক বছর আগে থেকেই রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’ নাকি ‘উর্দু’ হবে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী ছিল?
 ক) এ অঞ্চলে কেবল বাঙালিদের বসবাস তাই
 খ) পাকিস্তানের অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা বাঙালি
 গ) বাঙলা একটি অতি পুরাতন ভাষা তাই
 ঘ) বাংলা তুলনামুলক সহজ ভাষা তাই
সঠিক উত্তর: (খ)

২০. পাকিস্তানের স্বধীনতার পূর্বে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেছিলেন-
i. ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
ii. চৌধুরী খালিকুজ্জামান
iii. ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ
নিচের কোনটি সঠিক?
 ক) i
 খ) ii ও iii
 গ) i ও iii
 ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

২১. ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে কে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল ছিলেন?
 ক) নাজিমুদ্দিন খান
 খ) লিয়াকত আলী খান
 গ) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
 ঘ) ইস্কান্দার মীর্জা
সঠিক উত্তর: (গ)

২২. কত সালে ‘গণ আজাদী লীগ’ গঠিত হয়েছিল?
 ক) ১৯৪৭ সালে
 খ) ১৯৪৮ সালে
 গ) ১৯৪৯ সালে
 ঘ) ১৯৫০ সালে
সঠিক উত্তর: (ক)

২৩. পাকিস্তান সরকার কোন অক্ষরে বাংলা লেখার প্রচলন করতে চেয়েছিল?
 ক) ইংরেজি
 খ) উর্দু
 গ) ফারসি
 ঘ) আরবি
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৪. ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ বা চূড়ান্ত ফলাফল হলো-
i. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান
ii. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ
iii. ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ
নিচের কোনটি সঠিক?
 ক) i
 খ) i ও ii
 গ) iii
 ঘ) i,ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২৫. পাকিস্তান সরকার ১৯৫২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ করে কোন পত্রিকাটি?
 ক) ইত্তেফাক
 খ) অবজারভার
 গ) আজাদী
 ঘ) সমকাল
সঠিক উত্তর: (খ)

২৬. একুশের গান কে রচনা করেন?
 ক) আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল
 খ) আব্দুল জব্বার
 গ) আব্দুল গাফ্ফার চোধুরী
 ঘ) আব্দুল লতিফ
সঠিক উত্তর: (গ)

২৭. কখন পাকিস্তান সরকার অবজারভার পত্রিকা নিষিদ্ধ করে?
 ক) ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি
 খ) ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি
 গ) ১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি
 ঘ) ১৯৫২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৮. ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের হামলায় কে শহিদ হন?
 ক) শফিউর
 খ) বরকত
 গ) জব্বার
 ঘ) রফিক
সঠিক উত্তর: (ক)

২৯. ১৯৪৭ সালে প্রথমে কোনটি ঘটেছিল?
 ক) পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হওয়া
 খ) গণ আজাদী লীগ প্রতিষ্ঠা
 গ) তমদ্দুন মজলিশ প্রতিষ্ঠা
 ঘ) করাচির শিক্ষা সম্মেলন
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. পূর্ব পাকিস্তানকালীন সময়ে সৃষ্ট বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি ছিল কী?
 ক) ধর্ম
 খ) ভৌগোলিক নৈকট্য
 গ) ভাষা
 ঘ) পেশা
সঠিক উত্তর: (গ)

৩১. গণপরিষদে বাংলা ব্যবহারের দাবি অগ্রাহ্য হলে ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয় কোন মাসে?
 ক) ফেব্রুয়ারি
 খ) জানুয়ারি
 গ) মার্চ
 ঘ) মে
সঠিক উত্তর: (ক)

৩২. “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা” কে ঘোষণা করেন?
 ক) খাজা নাজিমউদ্দীন
 খ) নূরুল আমিন
 গ) আইয়ুব খান
 ঘ) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৩. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে-
i. ভাষা আন্দোলন
ii. স্বদেশি আন্দোলন
iii. ফরায়েজি আন্দোলন
নিচের কোনটি সঠিক?
 ক) i
 খ) i ও ii
 গ) i ও iii
 ঘ) i,ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৪. ভাষা আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কখন ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা’ সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়?
 ক) ৩ মার্চ, ১৯৫২
 খ) ২ মার্চ, ১৯৫১
 গ) ২ মার্চ, ১৯৪৭
 ঘ) ২মার্চ, ১৯৪৮
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৫. ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির মধ্যে কী জাগিয়ে তোলে?
 ক) গণসচেতনতা
 খ) ভয়ভীতি
গ) ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা
 ঘ) ভাষা ও তার মূল্যায়ন
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৬. কোন সংগঠন ১৯৪৭ সালে মাতৃভাষায় ‘শিক্ষা দান’ এর দাবি জানায়?
 ক) গণ আজাদী লীগ
 খ) আওয়ামী মুসলিম লীগ
গ) তমদ্দুন মজলিশ
 ঘ) বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৭. ১৯৩৭ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করলে এর বিরোধিতা কে করেন?
 ক) শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক
 খ) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
 গ) ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ
 ঘ) খাজা নাজিমুদ্দীন
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৮. ভাষা আন্দোলন কীভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি রচনা করেছিল?
 ক) পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সম্পর্কে আগাম ধারণা প্রাপ্তির মাধ্যমে
খ) ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের সাথে গোপন চুক্তি হয়
 গ) একুশের চেতনা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উদ্বুদ্ধ করেছে
 ঘ) ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলকে শক্তি যুগিয়েছে
সঠিক উত্তর: (গ)
৩৯. ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়………..’ গানটির সুরকার কে?
 ক) গাজী মাজহারুল আনোয়ার
 খ) শ্যামল ঘোষ
 গ) মুনীর চৌধুরী
 ঘ) আব্দুল লতিফ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪০. ১১ মার্চ সাধারণ ধর্মঘট চলাকালে কতজন গ্রেফতার হয়?
 ক) ৫০ জন
 খ) ৫৭ জন
 গ) ৬৯ জন
 ঘ) ৭৯ জন
সঠিক উত্তর: (গ)

৪১. ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারির পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন কে?
 ক) অলি আহাদ
 খ) শামসুল হক
 গ) আব্দুল মতিন
 ঘ) কাজী গোলাম মাহবুব
সঠিক উত্তর: (গ)

৪২. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের পূর্বে এদিনটিকে কী দিবস হিসেবে পালন করা হতো?
 ক) জাতীয় শোক দিবস
 খ) মাতৃভাষা দিবস
 গ) শহিদ দিবস
 ঘ) কলো দিবস
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৩. রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের উদ্দেশ্য ছিল-
 ক) রাষ্ট্রভাষার দাবি আদায়ের জন্য
 খ) রাষ্ট্রভাষা উর্দু থাকুক
 গ) রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা ও আরবি
 ঘ) রাষ্ট্রভাষা হবে হিন্দি
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৪. একুশের শহিদদের স্মরণে ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি লিখেছিলেন কে?
ক) আলাউদ্দিন আল আজাদ
 খ) মাহবুব উল আলম চৌধুরী
 গ) আলতাফ মাহমুদ
 ঘ) আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৫. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে কোনটির অবদান অনেক বেশি?
 ক) ভাষা আন্দোলন
 খ) মুক্তিযুদ্ধ
 গ) গণঅভ্যুত্থান
 ঘ) যুক্তফ্রন্ট সরকার
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৬. রেসকোর্স ময়দানের বর্তমান নাম কী?
 ক) সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
 খ) রমনা পার্ক
 গ) বোটানিক্যাল গার্ডেন
 ঘ) জিয়া উদ্যান
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৭. কার নেতৃত্বে ‘তমদ্দুন মজলিশ’ নামক সংগঠনটি গড়ে ওঠে?
 ক) আবুল কাশেম
 খ) মওলানা ভাসানী
 গ) আতাউর রহমান খান
 ঘ) অলি আহাদ
সঠিক উত্তর: (ক)

 

৪৮. বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন কোন প্রাদেশিক সরকার?
 ক) নাজিমউদ্দিন খানের
 খ) নুরুল আমিনের
 গ) ইস্কান্দার মীর্জার
 ঘ) এ.কে. ফজলুল হকের
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৯. নিচের কোন নাটকটি ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত নাটক?
 ক) অয়োময়
 খ) কোথাও কেউ নেই
 গ) বহুব্রীহি
 ঘ) কবর
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫০. কোন রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর প্রতি অন্ধ আনুগত্য পোষণ করে?
 ক) মুসলিম আওয়ামী লীগ
 খ) কৃষক প্রজা পার্টি
 গ) গণতান্ত্রিক দল
 ঘ) মুসলিম লীগ
সঠিক উত্তর: (ঘ)

 

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-309 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 7

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

 

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.৩: সংখ্যার বৈজ্ঞানিক বা আদর্শ রূপ সম্পর্কিত সকল গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমাধান ও Suggestion PDF ডাউনলোড

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.৩: সংখ্যার বৈজ্ঞানিক বা আদর্শ রূপ  এর বহুনির্বাচনী সাজেশন পিডিএফ ডাউনলোড

এখানের সবগুলো প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ আকারে নিচে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন ।

সংখ্যার বৈজ্ঞানিক রূপঃ

সুচকের সাহায্যে আমরা অনেক বড় বা অনেক ছোট সংখ্যাকে ছোট ও সহজ আকারে প্রকাশ করতে পারি । যেমন আলোর বেগ = 300000000=3	imes10^8 মিটার/সে 

 

লগারিদম পদ্ধতিঃ

লগারিদম পদ্ধতি দুই ধরনেরঃ-

ক) স্বাভাবিক লগারিদম (Natural, : logarithm):

স্কটল্যান্ড এর গণিতবিদ জন নেপিয়ার ১৬১৪ সালে e কে ভিত্তি ধরে প্রথম লগারিদম সম্পর্কিত বই প্রকাশ করেন । e একটি অমুলদ সংখ্যা, e=2.71828….. .তাঁর এই লগারিদমকে নেপিয়ার লগারিদম বা e ভিত্তিক লগারিদম বা স্বাভাবিক লগারিদম ও বলা হয় । log_{e}x কে ln x আকারেও লেখা হয় । 

খ) সাধারণ লগারিদম (Common, , Logarithm):

ইংল্যান্ড এর গণিতবিদ হেনরি ব্রিগস ১৬২৪ সালে 10 কে ভিত্তি ধরে লগারিদমের টেবিল ( লগ সারণি ) তৈরি করেন । তাঁর এই লগারিদমকে ব্রিগস লগারিদম বা 10 ভিত্তিক লগারিদম বা ব্যবহারিক লগারিদমও বলা হয় ।

সাধারণ লগারিদমের পূর্ণক ও অংশক :

(ক) পূর্ণক (Characteristics):

ধরি, একটি সংখ্যা N কে বৈজ্ঞানিক আকারে প্রকাশ করে পাই, 

N=a	imes10^n যেখানে N>0,1leq a<10 এবং nepsilon Z । 

উভয়পক্ষে 10 ভিত্তিতে লগ নিয়ে পাই, 

log_{10}N=log_{10}(a	imes10^n)

	herefore log_{10}a+log_{10}10^n=log_{10}a+nlog_{10}10

                                       =log_{10}N=n+log_{10}a,   [ ecause log_{10}=1]

ভিত্তি 10 উহ্য রেখে পাই, 

log N=n+log a

n কে বলা হয় log N এর পূর্ণক ।

খ) অংশক (Mantissa):

কোনো সংখ্যার সাধারণ লগের অংশক 1 অপেক্ষা ছোট একটি অঋণাত্মক সংখ্যা । এটি মুলত অমূলদ সংখ্যা । তবে একটি নির্দিষ্ট দশমিক স্থান পর্যন্ত অংশকের মান বের করা হয় । কোনো সংখ্যার লগের অংশক লগ তালিকা থেকে বের করা যায় । আবার তা ক্যালকুলেটর এর সাহায্যেও বের করা যায় । 

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.৩: সংখ্যার বৈজ্ঞানিক বা আদর্শ রূপ  এর

সকল গুরত্বপূর্ণ MCQ পিডিএফ ডাউনলোড 

১. loge x কে নিচের কোন আকারে লেখা হয়?
ক) ex
খ) xe
গ) logxe
ঘ) In x
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২. e কে ভিত্তি করে প্রথম লগারিদম সম্পর্কিত বই প্রকাশ করেন কে?
ক) জন নেপিয়ার
খ) নেপোলিয়ান
গ) নিউটন
ঘ) জিন গ্রেগারি
সঠিক উত্তর: (ক)

৩. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. লগারিদমের ভিত্তি না থাকলে জীবগাণিতিক ক্ষেত্রে e ধরা হয়
ii. 623.7 সংখ্যাটির পূর্ণক 2
iii. পূর্ণক সর্বদা ধনাত্মক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৪. হেনরি ব্রিগস কোন দেশের গণিতবিদ?
ক) স্কটল্যান্ড
খ) ইংল্যান্ড
গ) হল্যান্ড
ঘ) জাপান
সঠিক উত্তর: (খ)

৫. নিচের কোনটি সাহায্যে অনেক বড় বা অনেক ছোট সংখ্যাকে ছোট ও সহজ আকারে প্রকাশ করা যায়?
ক) সূচকের সাহায্যে
খ) সমান (=) চিহ্নের সাহায্যে
গ) ভগ্নাংশের সাহায্যে
ঘ) গুণের সাহায্যে
সঠিক উত্তর: (ক)

৬. সূচকের সাহায্যে অনেক বড় বা অনেক ছোট সংখ্যাকে-
i. ছোট আকারে প্রকাশ করা যায়
ii. বড় আকারে প্রকাশ করা যায়
iii. সহজ আকারে প্রকাশ করা যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) i ও ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৭. 300000 কি. মি./সে. এর বৈজ্ঞানিক রূপনিচের কোনটি?
ক) 3×105 মি./সে.
খ) 3×106 মি./সে.
গ) 3×107 মি./সে.
ঘ) 3×108 মি./সে.
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৮. 4.5 x 10-6 এর বৈজ্ঞানিক রূপ নিচের কোনটি?
ক) .0000045
খ) .000045
গ) .000000045
ঘ) .0000045
সঠিক উত্তর: (ক)

৯. স্বাভাবিক সংখ্যা N এর বৈজ্ঞানিকরূপ যদি a10n হয়, তবে logN=কত?
ক) n+log10a
খ) log10an
গ) nlog10a
ঘ) log10an
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. লগ সারণিতে ভিত্তি কত ধরতে হয়?
ক) 1
খ) 10
গ) 100
ঘ) e
সঠিক উত্তর: (গ)

১১. i. 73.459 সংখ্যাটির লগের পূর্ণক 1
ii. .043 সংখ্যাটির লগের পূর্ণক 2
iii. 856 সংখ্যাটির পূর্ণক 3
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i
গ) ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১২. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. সাধারণ লগের অংশক ধনাত্মক সংখ্যা
ii. অংশক মূলত একটি অমূলদ সংখ্যা
iii. log5+log4-log2=log1
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. 45.70 সংখ্যাটির লগের পূর্ণক নিচের কোনটি?
ক) 0
খ) 1
গ) 2
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (খ)

১৪. 1.32 x 10-7 এর স্বাভাবিক আকারে প্রকাশিত রূপ নিচের কোনটি?
ক) .0000132
খ) .000132
গ) .00000132
ঘ) .000000132
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৫. .032 এর পূর্ণক কত?
ক) 2
খ) 2
গ) 1
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (খ)

১৬. .0035 এর সাধারণ লগের পূর্ণক কত?
ক) 3
খ) 1
গ) 2
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (ঘ)

নবম-দশম শ্রেণির গণিত মেইন বই ও গাইড বই PDF ডাউনলোড

১৭. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. ভিত্তি উল্লেখ করা না থাকলে সংখ্যার ক্ষেত্রে লগারিদমের ভিত্তি 10 ধরা হয়
ii. 10 ভিত্তিক লগারিদমকে স্বাভাবিক লগারিদম বলা হয়
iii. 0.000435 সংখ্যাটির লগের পূর্ণক 3
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

১৮. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. পূর্ণক ঋণাত্মক সংখ্যা হতে পারে না
ii. অংশক ঋণাত্মক সংখ্যা হতে পারে না
iii. 2.329 এর লগের পূর্ণক 0
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও ii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. কোন শর্তে a0 = 1?
ক) a = 0
খ) a ≠ 0
গ) a > 0
ঘ) a ≠ 1
সঠিক উত্তর: (খ)

২০. 62.37 এর লগের পূর্ণক কত?
ক) 1
খ) 2
গ) 3
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (ক)

২১. 7.5249 এর পূর্ণক কত?
ক) 0
খ) 1
গ) 2
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. log2717 এর অংশক নিচের কোনটি?
ক) 0.43408
খ) 0.53408
গ) 0.63408
ঘ) 0.73408
সঠিক উত্তর: (ক)

২৩. .0000000037 এর বৈজ্ঞানিক রূপ কোনটি?
ক) 3.7 x 10-9
খ) 2.7 x 109
গ) 3.7 x 108
ঘ) 3.7 x 10-4
সঠিক উত্তর: (ক)

২৪. 4857 এর অংশক কত?
ক) .68637
খ) .68639
গ) .68631
ঘ) .683
সঠিক উত্তর: (ক)

২৫. 1.23 x 104 এর স্বাভাবিক আকার নিচের কোনটি?
ক) 12300
খ) 123000
গ) 1230
ঘ) 123
সঠিক উত্তর: (ক)

২৬. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. স্বাভাবিক লগের প্রতীক হলো In
ii. ব্যবহারিক লগের প্রতীক হলো log10
iii. 0.0000472 এর বৈজ্ঞানিক রূপ 4.27�105
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৭. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. e একটি অমূলদ সংখ্যা
ii. e ভিত্তিক লগারিদমকে স্বাভাবিক লগারিদম বলা হয়
iii. অংশক সর্বদা ধনাত্মক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৮. i. পূর্ণক ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। কিন্তু অংশক সর্বদা ধনাত্মক
ii. কোনো পূর্ণক ঋণাত্মক হলে, পূর্ণকটির বামে ‘_’ চিহ্ন না দিয়ে পূর্ণকটির নিচে ‘-’ বার চিহ্ন) দিয়ে লেখা হয়
iii. 623.7 সংখ্যাটির লগের পূর্ণক 2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৯. লগারিদম পদ্ধতি কয় ধরনের?
ক) দুই ধরনের
খ) তিন ধরনের
গ) চার ধরনের
ঘ) ছয় ধরনের
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. 15000000 এর বৈজ্ঞানিক রূপে প্রকাশিত রূপ নিচের কোনটি?
ক) 1.5 x 107
খ) 1.5 x 10-7
গ) 2.5 x 10-7
ঘ) 1.5 x 106
সঠিক উত্তর: (ক)

৩১. সঠিক কোন শর্তে logaa = 1?
ক) a > 0
খ) a ≠ 1
গ) a > 0,a ≠ 1
ঘ) a ≠ 0,a > 1
সঠিক উত্তর: (গ)

৩২. logN=n+loga হলে logN এর পূর্ণক নিচের কোনটি?
ক) 2
খ) 3
গ) 4
ঘ) 5
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৩. .0245 এর বৈজ্ঞানিক রূপ নিচের কোনটি?
ক) 2.45 x 10-2
খ) 2.4 x 10-3
গ) 2.45 x 10-4
ঘ) 2.4 x 10-1
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৪. 637000000000 এর বৈজ্ঞানিক রূপ নিচের কোনটি?
ক) 6.37 x 108
খ) 6.37 x 1011
গ) 6.37 x 1013
ঘ) 6.37 x 1015
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৫. একটি সংখ্যাকে a x 10n আকারে লেখার জন্য শর্ত কোনটি?
ক) 1 < a < 10
খ) 1 ≤ a ≤ 10
গ) 1 ≤ a < 10
ঘ) 1 < a ≤ 10
সঠিক উত্তর: (গ)

৩৬. i. log32 = 2log3.
ii. log.(MN) = log M + log N
iii. 786-এর বৈজ্ঞানিক রূপ = 7.86 x 10-2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i
গ) ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৭. নিচের কোনটি সংখ্যার বৈজ্ঞানিক রূপ?
ক) a+10n
খ) a-10n
গ) a×10n
ঘ) a÷10n
সঠিক উত্তর: (গ)

নবম-দশম শ্রেনির সকল গণিত নোট ও সাজেশন একসাথে পিডিএফ ডাউনলোড করতে

এখানে ক্লিক করুন

৩৮. .0176 এর বৈজ্ঞানিক রূপ নিচের কোনটি?
ক) 1.73 x 10-2
খ) 1.76 x 103
গ) 1.76 x 10-3
ঘ) 1.76 x 10-4
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৯. i. সাধারণ লগের ভিত্তি 10
ii. সাধারণ লগের অংশক 1 অপেক্ষা ছোট ধনাত্মক সংখ্যা
iii. log √327 = x হলে, x এর মান 6
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪০. 842 এর পূর্ণক কত?
ক) 1
খ) 2
গ) 3
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (খ)

৪১. সাধারণ লগ এর ভিত্তি নিচের কোনটি?
ক) e
খ) 10
গ) 1
ঘ) 0
সঠিক উত্তর: (খ)

৪২. i. কোনো সংখ্যার a x 10n রূপকে বলা হয় সংখ্যাটির বৈজ্ঞানিক বা আদর্শ রূপ
ii. লগারিদম পদ্ধতি দুই ধরনের
iii. e = 2.71828….. একটি মূলদ সংখ্যা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i
গ) ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (ক)

উদ্দীপকটি পড়ো এবং নিচের ৩টি প্রশ্নের উত্তর দাও: 0.000004 একটি সংখ্যা

৪৩. সংখ্যাটির an আকার নিচের কোনটি?
ক) (2)2
খ) (0.02)2
গ) (0.002)2
ঘ) (0.0002)2
সঠিক উত্তর: (গ)

৪৪. সংখ্যাটির বৈজ্ঞানিক আকার নিচের কোনটি?
ক) 4×10-3
খ) 4×10-4
গ) 4×10-5
ঘ) 4×10-6
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪৫. সংখ্যাটির সাধারণ লগের পূর্ণক কত?
ক) -6
খ) -5
গ) -4
ঘ) -3
সঠিক উত্তর: (ক)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ- 245 KB

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 6

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

 

নবম-দশম শ্রেণির গণিত অধ্যায় – ৪.২ লগারিদম এর সকল গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমাধান ও সাজেশন পিডিএফ ডাউনলোড

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.২: লগারিদম

এর বহুনির্বাচনী সাজেশন পিডিএফ ডাউনলোড

এখানের সবগুলো প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ আকারে নিচে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন ।

লগারিদম (Logarithm):

সূচকীয় রাশির মান বের করতে লগারিদম ব্যবহার করা হয় । লগারিদমকে সংক্ষেপে (log) বলা হয় 

লগারিদমের সূত্রাবলিঃ

ধরি a>0,a<br />
e 1;b>0 এবং M>0,N>0

সুত্র ১। (ক) log_{a}1=0,(a>0,a<br />
e1)

          (খ) log_{a}a=1,(a>0,a<br />
e0)

প্রমাণ সুচকের সুত্র থেকে আমরা জানি a^0=1

লগের সংজ্ঞা হতে পাই log_a a=0

সুত্র ২। log_a(MN)=log_a M+log_a N

দ্রষ্টব্য-১। log_a(MNP.....)=log_a M+log_a N+log_a P+............

দ্রষ্টব্য-২। log_a(Mpm N)
e log_aMpm log_a N

সুত্র ৩। log_afrac{M}{N}=log_a M -log_a N

সুত্র ৪। log_a M^r=rlog_a M

সুত্র ৫। log_a M =log_a M	imeslog_a b   ( ভিত্তি পরিবর্তন )

অনুসিধান্তঃ log_a b=frac{1}{log_ba}

সংখ্যার বৈজ্ঞানিক রূপঃ

সুচকের সাহায্যে আমরা অনেক বড় বা অনেক ছোট সংখ্যাকে ছোট ও সহজ আকারে প্রকাশ করতে পারি । যেমন আলোর বেগ = 300000000=3	imes10^8 মিটার/সে 

 

লগারিদম পদ্ধতিঃ

লগারিদম পদ্ধতি দুই ধরনেরঃ-

ক) স্বাভাবিক লগারিদম (Natural, : logarithm):

স্কটল্যান্ড এর গণিতবিদ জন নেপিয়ার ১৬১৪ সালে e কে ভিত্তি ধরে প্রথম লগারিদম সম্পর্কিত বই প্রকাশ করেন । e একটি অমুলদ সংখ্যা, e=2.71828….. .তাঁর এই লগারিদমকে নেপিয়ার লগারিদম বা e ভিত্তিক লগারিদম বা স্বাভাবিক লগারিদম ও বলা হয় । log_{e}x কে ln x আকারেও লেখা হয় । 

খ) সাধারণ লগারিদম (Common, , Logarithm):

ইংল্যান্ড এর গণিতবিদ হেনরি ব্রিগস ১৬২৪ সালে 10 কে ভিত্তি ধরে লগারিদমের টেবিল ( লগ সারণি ) তৈরি করেন । তাঁর এই লগারিদমকে ব্রিগস লগারিদম বা 10 ভিত্তিক লগারিদম বা ব্যবহারিক লগারিদমও বলা হয় ।

সাধারণ লগারিদমের পূর্ণক ও অংশক :

(ক) পূর্ণক (Characteristics):

ধরি, একটি সংখ্যা N কে বৈজ্ঞানিক আকারে প্রকাশ করে পাই, 

N=a	imes10^n যেখানে N>0,1leq a<10 এবং nepsilon Z । 

উভয়পক্ষে 10 ভিত্তিতে লগ নিয়ে পাই, 

log_{10}N=log_{10}(a	imes10^n)

	herefore log_{10}a+log_{10}10^n=log_{10}a+nlog_{10}10

                                       =log_{10}N=n+log_{10}a,   [ ecause log_{10}=1]

ভিত্তি 10 উহ্য রেখে পাই, 

log N=n+log a

n কে বলা হয় log N এর পূর্ণক ।

খ) অংশক (Mantissa):

কোনো সংখ্যার সাধারণ লগের অংশক 1 অপেক্ষা ছোট একটি অঋণাত্মক সংখ্যা । এটি মুলত অমূলদ সংখ্যা । তবে একটি নির্দিষ্ট দশমিক স্থান পর্যন্ত অংশকের মান বের করা হয় । কোনো সংখ্যার লগের অংশক লগ তালিকা থেকে বের করা যায় । আবার তা ক্যালকুলেটর এর সাহায্যেও বের করা যায় । 

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.২: লগারিদম

সম্পর্কিত সকল গুরত্বপূর্ণ MCQ পিডিএফ ডাউনলোড 

১. 54 = 625 কে লগের মাধ্যমে প্রকাশ করলে নিচের কোনটি হবে?
ক) log 5 = 6254
খ) log 45 =625
গ) log 5625 = 4
ঘ) log 54 = 625
সঠিক উত্তর: (গ)

২. log264 + log28-এর মান কত?
ক) 6
খ) 9
গ) 5
ঘ) 7
সঠিক উত্তর: (খ)

৩. a>0, a≠1 হলে,
i. logaMr = r loga M
ii. loga (MN) = loga M + loga N
iii. loga (M/N) = loga M -loga N
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৪. logaa=কত?
ক) 0
খ) 1
গ) loga
ঘ) log1
সঠিক উত্তর: (খ)

৫. log10x =-2 হলে, x এর মান কত?
ক) .002
খ) .001
গ) .01
ঘ) .003
সঠিক উত্তর: (গ)

৬. log 1 এর মান কত?
ক) 0
খ) 1
গ) অসীশ
ঘ) 2
সঠিক উত্তর: (ক)

৭. log10x = -2 হলে, x = কত?
ক) 100
খ) 1/100
গ) 20
ঘ) -100
সঠিক উত্তর: (খ)

৮. 63 = কত?
ক) 18
খ) 9
গ) 108
ঘ) 216
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৯. log8 (3√8).√64 = কত?
ক) 4/3
খ) 2
গ) 1/3
ঘ) 3/8
সঠিক উত্তর: (ক)

১০. 5 log3 – log 9 এর মান কত?
ক) log 28
খ) log 27
গ) log 29
ঘ) log 17
সঠিক উত্তর: (খ)

১১. log42 এর মান নিচের কোনটি?
ক) 1/2
খ) 1
গ) 2
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (ক)

১২. i. log21 = log 7 + log 3.
ii. 5log3 3 – log 9 = log 25.
iii. logM/N = logM + log N.
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i ও ii
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. log381=কত?
ক) 0
খ) 1
গ) 3
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৪. log10x=-2 হলে x=কত?
ক) 10
খ) 1/10
গ) 100
ঘ) 1/100
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৫. log5x=3 হলে x=কত?
ক) 15
খ) 5/3
গ) 3/5
ঘ) 125
সঠিক উত্তর: (ঘ)

নবম-দশম শ্রেণির গণিত মেইন বই ও গাইড বই PDF ডাউনলোড

১৬. log 360 এর মান কত?
ক) 3log 2 + 2log 3 + log 5
খ) 3log 2 – 2log 3 -log 5
গ) 3log 2 + 2log 3 – log 5
ঘ) 3log 2
সঠিক উত্তর: (ক)

১৭. log6√6 এর মান কত?
ক) 1/2
খ) 2/3
গ) 3/2
ঘ) 1
সঠিক উত্তর: (গ)

১৮. log102=কত?
ক) 0
খ) 1
গ) 2
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. loga(MN) = নিচের কোনটি?
ক) logaMN
খ) logaMN
গ) logaM.logN
ঘ) logaM+logaN
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২০. log 5x =2 হলে, x এর মান কত?
ক) 35
খ) 50
গ) 25
ঘ) 100
সঠিক উত্তর: (গ)

২১. log5+log2=কত?
ক) 0
খ) 1
গ) log 25
ঘ) log 32
সঠিক উত্তর: (খ)

২২. logx324 = 4 হলে, x =?
ক) 2√3
খ) 3√2
গ) 4
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (খ)

২৩. i. log10x = -2 , x =100
ii. logx25 = 2, x = 5
iii. logx√12 = 1/2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii ও iii
গ) ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (খ)

২৪. a>0, a≠1 হবে, logaa = কত?
ক) 0
খ) 1
গ) 10
ঘ) 100
সঠিক উত্তর: (ক)

২৫. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. সাধারণ log এর ভিত্তি 10
ii. স্বাভাবিক log এর ভিত্তি e
iii. log =3√5 1/3
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর:

২৬. i. শুধু ধনাত্মক সংখ্যারই লগারিদম আছে
ii. শূন্য বা ঋণাত্মক সংখ্যার লগারিদম নেই
iii. শূন্য বা ঋণাত্মক সংখ্যারও লগারিদম আছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i ও ii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৭. log2134 = 5 কে সূচকের মাধ্যমে প্রকাশিত রূপ নিচের কোনটি?
ক) 52 = 134
খ) 25 = 134
গ) 134 = 54
ঘ) 25 = 10
সঠিক উত্তর: (খ)

২৮. লগারিদম সংক্ষেপে কি লেখা হয়?
ক) ল(L)
খ) লগ (Log)
গ) লম (Lom)
ঘ) গল (Gol)
সঠিক উত্তর: (খ)

২৯. logx25=2 হলে x=কত?
ক) 5
খ) -5
গ) ±5
ঘ) ∓5
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. log5 3√5 এর মান কত?
ক) 1/4
খ) 1/6
গ) 1/3
ঘ) 1/5
সঠিক উত্তর: (গ)

৩১. log3 (1/9) = কত?
ক) 2
খ) 3
গ) -2
ঘ) -3
সঠিক উত্তর: (গ)

৩২. x ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যাই হোক, ax সর্বদা-।
ক) ঋণাত্মক
খ) ধনাত্মক
গ) ভগ্নাংশ
ঘ) দশমিক
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৩. log42 এর মান কত?
ক) 1/2
খ) 1/3
গ) 1
ঘ) 2
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৪. i. সূচকীয় রাশির মান বের করতে লগারিদম ব্যবহার করা হয়
ii. বড় বড় সংখ্যা বা রাশির গুণফল, ভাগফল ইত্যাদি log এর সাহায্যে সহজে নির্ণয় করা যায়
iii. শূন্য বা ঋণাত্মক সংখ্যার লগের বাস্তব মান আছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i
গ) ii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৫. a0 = কত?
ক) 0
খ) 1
গ) a
ঘ) 2
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৬. 81 এর লগ 3 হলে, এর ভিত্তি নিচের কোনটি?
ক) 4
খ) 9
গ) 27
ঘ) 78
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৭. logaMr = কি?
ক) log aMr
খ) log aMr
গ) r loga M
ঘ) Mr log a
সঠিক উত্তর: (গ)

নবম-দশম শ্রেনির সকল গণিত নোট ও সাজেশন একসাথে পিডিএফ ডাউনলোড করতে

এখানে ক্লিক করুন

৩৮. i. x4 = 625 হলে, x=5
ii. px = qx হলে, p = q
iii. log aa = 1
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i,ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৯. যদি logx 324 =4 হয়, তবে x = কত?
ক) 3√2
খ) ০
গ) ০
ঘ) ০০
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. logx 1/9 = -2 হলে, x
ক) ±3
খ) -3
গ) 3
ঘ) 9
সঠিক উত্তর: (ক)

৪১. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. ax=N হলে x=logaN
ii. শুধুমাত্র ধনাত্মক সংখ্যারই log এর মান আছে
iii. log25+log4=2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

উদ্ধৃত অংশটুকু পড় এবং নিচের তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও: A = log2 16, B = logaa3 এবং c = log525

৪২. A এর মান কোনটি?
ক) 2
খ) 4
গ) 8
ঘ) 32
সঠিক উত্তর: (খ)

৪৩. A – B এর মান নিচের কোনটি?
ক) 1
খ) 2
গ) 5
ঘ) 13
সঠিক উত্তর: (ক)

৪৪. A + B – C এর মান নিচের কোনটি?
ক) 0
খ) 1
গ) 5
ঘ) 6
সঠিক উত্তর: (গ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ- 291 KB 

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 6

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

নবম-দশম শ্রেণির গণিত অধ্যায় – ৪.১: সূচক সম্পর্কিত সকল গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমাধান ও সাজেশন পিডিএফ ডাউনলোড

এস.এস.সি গণিত অধ্যায় – ৪.১: সূচক এর বহুনির্বাচনী সাজেশন পিডিএফ ডাউনলোড

এখানের সবগুলো প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ আকারে নিচে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন ।

সূচক (, Exponents, or: Indices):

সূচক ও ভিত্তি সংবলিত রাশিকে সূচকীয় রাশি বলা হয় । 

a যেকোনো বাস্তব সংখ্যা হলে, n সংখ্যক a এর ক্রমিক গুণ অর্থাৎ a	imes a	imes a ........	imes a কে a^n আকারে লেখা হয় যেখানে n ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা । 

	herefore a	imes a	imes a............	imes a=a^n

এখানে n
ightarrow সূচক বা ঘাত 

         a
ightarrow ভিত্তি 

আবার বিপরীতক্রমে a^n=a	imes a 	imes a	imes a ...	imes a

সূচক শুধু ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাই নয়, ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা বা ধনাত্মক ভগ্নাংশ বা ঋণাত্মক ভাগ্নাংশও হতে পারে ।

অর্থাৎ ভিত্তি aepsilon R(বাস্তব সংখ্যার সেট ) এবং সূচক nepsilon Q (মুলদ সংখ্যার সেট ) এর জন্য a^n সংজ্ঞায়িত । তবে বিশেষ ক্ষেত্রে nepsilon N ধরা হয় তাছাড়া অমূলদ সূচক হতে পারে । 

সুচকের সূত্রাবলিঃ

ধরি aepsilon R;m,nepsilon N

সুত্র ১। a^m	imes a^n=a^{m+n}

সুত্র ২। frac{a^m}{a^n}=a^{m-n} [ যখন m>n] অথবা  [ যখন n>m]

সুত্র ৩। (ab)^n=a^n	imes b^n

সুত্র ৪। left ( frac{a}{b}
ight )^n=frac{a^n}{b^n},(b
e0)

সুত্র ৫। a^0=1,(a
e0)

সুত্র ৬। a^{-n}=frac{1}{a^n},(a
e0)

সুত্র ৭। (a^m)^n=a^{mn}

#n তম মূল

 

গণিত অধ্যায় – ৪.১ : সূচক

সম্পর্কিত সকল গুরত্বপূর্ণ MCQ পিডিএফ ডাউনলোড 

 

১. 101/2 কে নিচের কোন আকারে লেখা যায়?
ক) 10
খ) 100
গ) √10
ঘ) 3√10
সঠিক উত্তর: (গ)

২. (50)1/2 এর মান কত?
ক) 5√2
খ) 25√2
গ) 15√2
ঘ) 25
সঠিক উত্তর: (ক)

৩. কোন শর্তে a-n = 1/an?

ক) a = 0
খ) a ≠ 0
গ) a ≥ 0
ঘ) a = 0
সঠিক উত্তর: (খ)

৪. (√3) 8 এর মান কত?
ক) 128
খ) 64
গ) 32
ঘ) 16
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৫. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. 3p=243 হলে p=5
ii. (√3 �√5) 4 =125
iii. x-3/xy=x-4y-1
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

৬. π2/5 � π2/5 = কত?
ক) 0
খ) 1
গ) π2/5
ঘ) π4/5
সঠিক উত্তর: (খ)

৭. 3x-4=ax-4 হলে, a এর মান কত?
ক) 1
খ) 2
গ) 3
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (গ)

৮. 4x+1 = 16 হলে, x এর মান নিচের কোনটি?
ক) 0
খ) 1
গ) 4
ঘ) 64
সঠিক উত্তর: (খ)

৯. a যেকোনো বাস্তব সংখ্যা ও n ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে, n সংখ্যক a এর ক্রমিক গুণকে নিচের কোন আকারে লেখা যায়?
ক) an
খ) a × n
গ) na
ঘ) an
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১০. (-10)0 = কত?
ক) 100
খ) 10
গ) 0
ঘ) 1
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১১. শূন্য ছাড়া অন্য যেকোনো সংখ্যার শূন্যতম ঘাত কত?
ক) 0
খ) 1
গ) অসীম
ঘ) সসীম
সঠিক উত্তর: (খ)

১২. 53x-7=y3x-7 হলে, y এর মান নিচের কোনটি?
ক) 3/5
খ) 5
গ) 7/3
ঘ) 3/7
সঠিক উত্তর: (খ)

১৩. an� a(a-n) এর মান কত?
ক) 1
খ) an(m-n)
গ) am
ঘ) am-2n
সঠিক উত্তর: (গ)

১৪. (√3) 2x+1=27 হলে x এর মান কত?
ক) 5/2
খ) 1
গ) 7/2
ঘ) 3
সঠিক উত্তর: (ক)

১৫. i. ‍an.am = an+m
ii. (50)1/2 =2√5
iii. 85/4 =4√8
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) ii
গ) iii
ঘ) i
সঠিক উত্তর: (ঘ)

নবম-দশম শ্রেণির গণিত মেইন বই ও গাইড বই PDF ডাউনলোড

১৬. (11)3/4 � (11)1/2 = কত?
ক) 11
খ) 33
গ) 113/8
ঘ) 115/4
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৭. 35 সূচকীয় রাশিতে ভিত্তি কত?
ক) 1
খ) 3
গ) 4
ঘ) 12
সঠিক উত্তর: (গ)

১৮. a4/a7 = নিচের কোনটি?
ক) a3
খ) a11
গ) 1/a3
ঘ) 2a28
সঠিক উত্তর: (গ)

১৯. am � an = am হলে, n এর সঠিক মান নিচের কোনটি?
ক) 0
খ) am
গ) a
ঘ) 1
সঠিক উত্তর: (ক)

২০. i. 61/2 এর বর্গ 6.
ii. 71/2 কে 2√a7 আকারে লেখা যায়
iii. 81/3 কে 3√8 আকারে লেখা যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) i ও iii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (গ)

২১. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. (ax)y=(ax)b= হলে y=b
ii. (ab)X=(ax)b= হলে x=b
iii. 22m=2m2 হলে m=1/2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. সূচক ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা ছাড়াও-
i. ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হতে পারে
ii. ধনাত্মক ভগ্নাংশ হতে পারে
iii. ঋণাত্মক ভগ্নাংশ হতে পারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৩. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. 8x.42x=128 হলে x=1
ii. (5x)0 এর মান 1
iii. log1/27=-6 হলে x=√3
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৪. 54 � 4 � 16/24 � 125 = কত?
ক) 4
খ) 5
গ) 20
ঘ) 320
সঠিক উত্তর: (খ)

২৫. am-3 = 1 হলে, m = কত?
ক) 3+1/a
খ) 3
গ) সবকয়টি
ঘ) 0
সঠিক উত্তর: (খ)

২৬. (xa/xb)1/ab (xb/xc)1/bc (xc/xa)1/ca
ক) 3
খ) 1
গ) 4
ঘ) 2
সঠিক উত্তর: (খ)

২৭. 4×3/2�2×1/2 এর মান নিচের কোনটি?
ক) 2×3
খ) 2×2
গ) 2x
ঘ) 3×4
সঠিক উত্তর: (গ)

২৮. 2m = 1 হলে, m = কত?
ক) a/2
খ) 0
গ) 1/2a
ঘ) 1/2
সঠিক উত্তর: (খ)

২৯. π3/4 � π3/4 এর মান কত?
ক) 1
খ) 0
গ) 2
ঘ) -2
সঠিক উত্তর: (ক)

৩০. (a/b)n = কি?
ক) anbn
খ) an/bn
গ) an/b
ঘ) anb
সঠিক উত্তর: (খ)

৩১. i. an কে a এর n তম শক্তি বলা হয়
ii. (xp)q = xp+q
iii. x-6 x x6 = 1
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i
খ) ii
গ) i ও iii
ঘ) iii
সঠিক উত্তর: (গ)

৩২. (8x)0 এর মান কত?
ক) 8x
খ) 1
গ) 0
ঘ) 8
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৩. m=2n হলে am-n�am-n এর মান নিচের কোনটি?
ক) a4n
খ) a2n+m
গ) a
ঘ) amn
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৪. x/x3 = কত?
ক) 2×9
খ) x4
গ) x9
ঘ) x21
সঠিক উত্তর: (খ)

৩৫. am = an হলে, নিচের কোনটি সঠিক?
ক) m = n
খ) am/an = 0
গ) am-n = 2
ঘ) am-n = 0
সঠিক উত্তর: (ক)

নবম-দশম শ্রেনির সকল গণিত নোট ও সাজেশন একসাথে পিডিএফ ডাউনলোড করতে

এখানে ক্লিক করুন

৩৬. অনেক বড় বা অনেক ছোট সংখ্যা বা রাশিকে কিসের সাহায্যে অতিসহজে লিখে প্রকাশ করা যায়?
ক) সূচকের সাহায্যে
খ) + চিহ্নের সাহায্যে
গ) = চিহ্নের সাহায্যে
ঘ) ভগ্নাংশের সাহায্যে
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৭. 3x = 9 হলে, x এর মান কত?
ক) 2
খ) 3
গ) 0
ঘ) 4
সঠিক উত্তর: (ক)

৩৮. am � a-m = কত?
ক) am/an
খ) am+m
গ) 0
ঘ) 1
সঠিক উত্তর: (ঘ)

৩৯. নিচের তথ্যগুলো লক্ষ কর:
i. (am/an)m+n=1 হলে m=n
ii. (81)3/4 এর সরলকৃত মান 27
iii. 3x=1 হলে x=4
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

৪০. 9.2n – 4.2n-2 = কত?
ক) 1
খ) 2n+3
গ) 3
ঘ) 2n
সঠিক উত্তর: (খ)

PDF File Download From Here

📝 সাইজঃ-309 KB

📝 পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 5

Download From Google Drive

Download

Direct Download 

Download

error: Content is protected !!